॥ এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥
নো য়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নে নদী ভাঙন রোধে ব্লক স্থাপন, বামনী নদীতে ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ ও বামনী রেগুলেটর চালু করার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ সেখানে হাজারো নারী পুরুষের সমাগম ঘটে। এ সময় তারা বামনী নদীর ভাঙনকবলীত তীরে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সম্বলিত ব্যানার পোস্টার ও পেষ্টুন বহন করেন।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরের দিকে উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের চর কচ্ছপিয়ার নদী ভাঙন এলাকায় ওই কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্মসূচি পালন উপলক্ষে সকাল থেকে চরএলাহী ও পাশ্ববর্তী চরফকিরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসংখ্য নারী-পুরুষ চর কচ্ছপিয়ার নদী ভাঙন এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ সেখানে হাজারো নারী পুরুষের সমাগম ঘটে। এ সময় তারা বামনী নদীর ভাঙনকবলীত তীরে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সম্বলিত ব্যানার পোস্টার ও পেষ্টুন বহন করেন।
মানবন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন চরএলাহী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ইসমাইল তোতা, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মোহাম্মদ আইয়ুব আলী, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, কোম্পানীগঞ্জের বামনী নদীর ভাঙন প্রতিরোধে চরএলাহী এলাকায় একটি রেগুলেটর নির্মাণ এবং বিকল্প একটি খাল খনন করা হয় কয়েক বছর আগে। কথা ছিল রেগুলেটর নির্মাণকাজ শেষ হলে বামনী নদীতে একটি ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ করা হবে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ক্লোজার নির্মাণ করা হচ্ছে না।
যার দরূন চাপরাশিরখালের দুই পাড়ে জোয়ার-ভাটার তীব্র ভাঙনে এরই মধ্যে শত শত পরিবার ভিটে মাটি হারিয়েছে।বক্তারা বলেন, বর্তমানে বামনী নদী যে ভাবে ভাঙছে, তাতে আগামি বর্ষায় নদীর তীরবর্তী অনেক বাড়িঘর, ফসলী জমি, মাছের খামার নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এ পরিস্থিতিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বামনী নদীতে ক্লোজার নির্মাণ করে ইতোপূর্বে নির্মাণ করে রাখা রেগুলেটরটি চালু করে দেওয়ার দাবি জানান তারা। একই সঙ্গে আলগী দিয়ে অবৈধভাবে বালু বাহী ট্র্যাংকার চলাচল বন্ধ করার দাবি জানান। কারণ ওইসব ট্র্যাংকারের কারণে আলগীর দুই পাড় আরও বেশি পরিমানে ভাঙছে।
বামনী নদীর ভাঙনের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ভিটেমাটি হারা আবদুল খালেক। তিনি বলেন, বামনী নদী থেকে তার বাড়ি ছিল প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। বছরখানেক আগে তিনি নদীর ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে এখন অন্যের জমিতে কোন রকমে ছোট্ট একটি ঘর তৈরী করে মাথায় গুঁজছেন। যে হারে নদী ভাঙছে, তাতে আগামি বর্ষায় সেই বসতীও হয়ত আর থাকবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, বামনী নদীর ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণের একটি প্রকল্পের সম্ভাবতা যাছাইয়ের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তারা চেষ্টা করছেন, অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে নদীতে বাঁধ দিয়ে আলগীর খালকে বিকল্প খালের সঙ্গে যুক্ত করে ১৯ ভেন্ট বামনী রেগুলেটরটি খুলে দেওয়ার। তা করা গেলে নদীর ভাঙন কমে যাবে।