॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥
মোং লা-রামপাল সংসদীয় আসন-৩ সহ বাগেরহাট জেলার চারটি আসনই বহাল রাখার দাবিতে ঘোষিত কর্মসুচির মধ্যে টানা ৪৮ ঘন্টার হরতাল অবরোধ চলছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে নদী পাড়াপার ও নৌ-চলাচল।
হরতাল শেষ হলে আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলনের কর্মসুচি দেয়া হবে। তারা আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রক্রিয়ায় চারটি আসনকে তিনটি করেছে, এসিদ্ধান্ত আমরা মানবো না।
দুই দিনের প্রথম দিনেই মোংলা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে আন্দোলনকারীরা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ভ্যান ও রিক্সা চলাচল, স্কুলে যায়নী শিক্ষার্থীরা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পরেছে নিন্ম আয়ের মানুষ ও পথচারীরা।
জানা যায়, বুধবার সকাল ৬টা থেকে সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যায়ার জালিয়ে ও বেড়ীগেট দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রেখেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। মোংলা-খুলনা মহাসড়কের বাসষ্টান্ড, দ্বিগরাজ, মোংলা কলেজ মোড়, হাসপাতাল ঘেট, শেরাবুনিয়া, কানাইনগর, কুমারখালী ও মোংলা নদী পাড়াপার ঘাট সহ প্রায় ১২টির গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে বেড়ীগেট দিয়ে হরতাল পালন করছে সর্বদলীয় কমিটির নেতৃবৃন্দরা।
নদীতেও পাহাড়া বসানো হয়েছে, যাতে কোন নৌযান চলাচল করতে না পারে। হরতাল ও অবরোধে সকাল থেকেই মোংলা-ঘষিয়াখালী ক্যানেল দিয়ে কোন বোট, কার্গো বা লাইটার জাহাজ চলাচল করতে দেয়া হয়নী। বন্ধ রাখা হয়েছে ইপিজেড সহ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। নদী পার হতে না পেরে গার্মেন্টস কর্মীরাও কর্মস্থালে যায়নী, স্কুলে যায়নী শিক্ষার্থীরা। ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে হরতার অবরোধ পালনে অংশ নিতে দেখা গেছে অনেককেই।
আন্দোলনকারী বলেন, বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে নির্বাচন কমিশন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে বিদায় করে দাবি আদায় করা হবে। বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল পালন করছি আমরা। এ হরতাল শেষ হলে আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলনের কর্মসুচি দেয়া হবে। তারা আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রক্রিয়ায় চারটি আসনকে তিনটি করেছে, এসিদ্ধান্ত আমরা মানবো না।
আমাদের এখানে বন্দর, ইপিজেড, ইকোনোমিক জোন, সুন্দরবন সহ প্রায় শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ সে কথা চিন্তা করে নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাকবে বলে প্রত্যাশা করেন বক্তারা।
তার পরেও যদি নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তবে যতদিন পর্যন্ত চারটি আসন ফিরিয়ে না দিবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলণ চালিয়ে যাবে। প্রয়োজনে লাগাতার আন্দোলন কর্মসুচি দেয়া হবে বলে জানায় নেতৃবৃন্দরা।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির পৌর আহবাযক মোঃ জুলফিকার আলী বলেন, মোংলা-রামপাল সহ জেলার ৪টি আসনই পুর্ণবহাল রাখার আহবান জানাচ্ছি নির্বাচন কমিশনকে। না হয় আগামীতে আমরণ অনসন সহ কঠোর কর্মসুচির মাধ্যমে জীবনের বিনিময় হলেও সংসদীয় আসন পৃথক করতে দেয়া হবে না।
গেল ৩০ জুলাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোংলা-রামপাল সহ বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কর্তন করে অন্যাত্র নেয়ার প্রস্তাব দেয় নির্বাচন কমিশন। এ খবরের পর থেকেই ক্ষোভে ফেটে পরে বাগেরহাটবাসী। চলছে আন্দোলন ও বিভিন্ন কর্মসুচি।