Tuesday , 20 May 2025

জমি নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা, প্রাণ নাশের হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

ঢাকার নবাবগঞ্জে নয়নশ্রী ইউনিয়নের বিলপল্লী এলাকায় জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিলপল্লী এলাকার আবুল কালামের ছেলে শেখ হৃদয়ের সাথে একই এলাকার মোল্লা হাটি গ্রামের মাজেদ ফকির গং দের সাথে বাড়ির পাশের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিলো।

 

 

নবাবগঞ্জ ভূমি অফিস থেকে উল্লেখ আছে সার্বিক পর্যালোচনায় বাদীপক্ষের (শেখ হৃদয়) আর.এস রেকর্ডের সাথে মালিকানার ধারাবাহিকতা সঠিক রয়েছে এবং বিবাদীর ( মাজেদ ফকির) দলিলের সাথে সার্টিফাইড দলিলের কোন মিল নাই। সেহেতু বিবাদীর নামীয় নামজারী কেস নং- ৮৬০২/১৩-১৪ বাতিল করে সমস্ত ভূমি মূল খতিয়ানভুক্ত করার সুপারিশ করা হলো।

গত ২০শে নভেম্বর সকালে সে জায়গায় মাটি কাটতে গেলে হৃদয়ের উপর হামলা করে মাজেদ ফকির গং। এতে গুরুতর আহত হয় হৃদয়। সাথে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও উপর হামলা করে মাজেদ ফকির গং। এসময় হৃদয় ও তার বোনের বাসা থেকে গরু, ছাগল সহ বাড়ির আসবাবপত্র লুটপাটের অভিযোগও উঠে মাজেদ গংদের বিরুদ্ধে। এবিষয়ে নবাবগঞ্জ থানায় উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলা হয়।

তবে হৃদয় ও তার পরিবারের লোকজনের অভিযোগ তারা আগে গেলেও তাদের মামলাটি আগে নেয়া হয় নি। বিবাদীপক্ষের মামলাটি আগে নিয়েছে। এবং তাদের মামলা থেকে অনেক কিছুই বাদ দিয়ে পুলিশের মতোকরে মামলা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞ আদালত ও নবাবগঞ্জ ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, মাজেদ ফকির গং দলিল জালিয়াতি করে সে জায়গার মালিকানা দাবী করে আসছিলেন। শেখ হৃদয় বাদী হয়ে নবাবগঞ্জ ভূমি অফিসে একটি মিস কেস করেন কেস নং-৩১০/২০১৯ যার আদেশ ৮ই নভেম্বর ২০২০ সালে দেয়া হয়।

আর তাতে নবাবগঞ্জ ভূমি অফিস থেকে উল্লেখ আছে সার্বিক পর্যালোচনায় বাদীপক্ষের (শেখ হৃদয়) আর.এস রেকর্ডের সাথে মালিকানার ধারাবাহিকতা সঠিক রয়েছে এবং বিবাদীর ( মাজেদ ফকির) দলিলের সাথে সার্টিফাইড দলিলের কোন মিল নাই। সেহেতু বিবাদীর নামীয় নামজারী কেস নং- ৮৬০২/১৩-১৪ বাতিল করে সমস্ত ভূমি মূল খতিয়ানভুক্ত করার সুপারিশ করা হলো।

সেই সাথে একটি হলফ নামার কপি প্রতিবেদকদের হাতে আসে আর তাতে উল্লেখ রয়েছে, মাজেদ ফকির হলফ করে বলছেন, ১২৫৫নং দলিল মুলে বাদীর দাবীকৃত ৩৪.৫ শতাংশ সম্পত্তি আমি পূর্বে কখনো দখল করতে যাইনি এবং ভবিষ্যতেও কখনো দখল করতে যাবো না।

এবং এই জমি বিষয় নিয়ে বিজ্ঞ আদালতের মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইতে দেয়া হয়। সেখানে পিবিআই এর রিপোর্টেও উল্লেখ রয়েছে, বিবাদী মাজেদ ফকির(৬০) গত ১৮/০২/১৯৬০ইং তারিখে ১৭০১নং মিথ্যা/জাল দলিল দিয়ে যে কোন উপায়ে জমির মিথ্যা নামজারী জমাভাগ নিজের নামে করিয়ে জাল দলিল ও নামজারী কাগজ দেখিয়ে বাদীর মাতা সাহেনা বেগমের মালিকানাধীন ও ভোগ দখলীয় জমি দাবী করায় বিবাদী মাজেদ আলী ফকির এর বিরুদ্ধে পেনাল কোড ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারার অপরাধ প্রাথমিক ভাবে সত্য বলে প্রতিয়মান হয়েছে। এতে প্রমানিত হয় যে, যে জায়গাটি নিয়ে হৃদয় ও মাজেদ ফকিরের সাথে ঝামেলা চলছিলো সে জায়গার মূল মালিক শেখ হৃদয়।

হৃদয় অভিযোগ করে বলেন, বিজ্ঞ আদালতে তারা বলে এই জায়গায় তারা দখল নিতে আসবে না কিন্তু আমি জায়গায় গেলেই আমার উপর হামলা করে তারা। সেদিন আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো তারা। আমার পুরো পরিবারকে তারা মারধর করেছে এবং বাড়ির ২টি গরু ২০টি ছাগল হাসঁ মুরগী পানির ট্যাংকি মটরসহ জিনিসপত্র সব নিয়ে গিয়েছে।

পুলিশকে জানানো হলেও তারা সেগুলো উদ্ধার করে দেয়নি এবং মামলার একজন আসামীকেও গ্রেফতার করেনি। বরং তাদের দেয়া মিথ্যা মামলায় আমার ছোট ভাইকে গ্রেফতার করেছে। মাজেদ গং আমাদের এখনো হুমকি দামকি দিয়ে যাচ্ছে।

হৃদয়ের বড় বোন শান্তি বলেন, সেদিন আমাদের জায়গায় মাটি কাটতে গেলে মাজেদ আলী ফকির ও তার ছেলে মুন্না ও মঞ্জুরুল ফকির সহ আরো লোকজন নিয়ে আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে। ভাইয়ের চিৎকারে আমরা এগিয়ে গেলে আমাকেও মারধর করে।

আমরা যখন হৃদয়কে নিয়ে হাসপাতালে যাই তখন আমাদের মেম্বার খালেকের উপর বাড়ির দায়িত্ব দিয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পর শুনতে পারি মাজেদ ফকিরের লোকজন আমাদের বাড়ির গরু ছাগল সহ সব নিয়ে যাচ্ছে। ১৫ দিন পরে এসে দেখি কিছু নেই।এই ১৫ দিন আমাদের বাড়িতে আসতে দেইনি মাজেদ গংরা এখনও তারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বাড়ির দায়িত্বের কথা অস্বীকার করেন।অথচ ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক সয়ং ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এলাকাবাসী বলেন। এব্যাপারে মাজেদ ফকিরের মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন জমি যেভাবে আছে সে সেভাবে খাক,একপর্যায় মাজেদ ফকিরের ছেলে তার কাছ থেকে ফোন কেরে নিয়ে উত্তেজিত কন্ঠে হামলার কথা অস্বীকার বলেন আমার বড় ভাইকে ওরা মারধর করছে।

সর্বশেষ ভোক্তভোগিদের মামলা ও ঘটনার বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকতা নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মনির হোসেন বলেন হৃদয়ের পরিবারের মামলাটি তদন্তের আদালতের অনুমতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Check Also

সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার দেশী গ্রামে বজ্রপাতে দুটি গাভীর মৃত্যু

॥ শাহ আলম,  সিরাজগঞ্জ  জেলা প্রতিনিধি ॥ ম ঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫ সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার দেশী …