Wednesday , 12 March 2025

নোয়াখালীতে ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির বিক্ষোভ সমাবেশ

॥ এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥

টভাটায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা, জরিমানা, ভাঙচুর ও বন্ধের প্রতিবাদে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি।

 

প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এখন দেশের ইটভাটা সমূহ মাত্র ৫-১০% বায়ু দুষন করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রসায়ন বিভাগের জরিপে জৈববস্তুর বৈজ্য পোড়ানো আর যানবাহনের কালো ধোঁয়া ইটভাটার চেয়ে ৫ গুন বেশী পরিবেশ দুষন করছে।

মঙ্গলবার (১১মার্চ) সকাল ১১টায় শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের সামনে থেকে বিভিন্ন দাবী সম্বলিত বেনার নিয়ে ইটভটা মালিক ও শ্রমিক একসাথে এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এসে শেষ করে । ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি মো.ইসমাইলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও নোয়াখালী সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি একরাম উল্লা ডিপটি, সাধারণ সম্পাদক কে.এম আফতাব উদ্দিন,

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা জানান,আমরা বাংলাদেশের ইটভাটা মালিকগন বিগত ৩৫/৪০ বৎসর যাবৎ অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। দেশের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ী সহ সকল অবকাঠামো বিনির্মানে ব্যবহৃত ইঁট সরবরাহ করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখছি। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সমতা রেখে আমরা ইটভাটার মালিকগন বায়ুধুষণ রোধে সরকার নির্দেশিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজাগ ভাটা স্থাপন করি যাহা জ্বালানী পরিবেশ বান্ধব।

এ প্রযুক্তি উপমহাদেশে টেকসই এবং সহজ প্রযুক্তি হিসেবে পরিচিত। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এখন দেশের ইটভাটা সমূহ মাত্র ৫-১০% বায়ু দুষন করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রসায়ন বিভাগের জরিপে জৈববস্তুর বৈজ্য পোড়ানো আর যানবাহনের কালো ধোঁয়া ইটভাটার চেয়ে ৫ গুন বেশী পরিবেশ দুষন করছে।

২০২১ সালে ৬ মার্চ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ৬মার্চ প্রকাশিত রিপোর্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রসায়ন বিভাগের জরিপে জৈব বস্তু পোড়ানোতে ৪০% এবং যানবাহনের কালো ধোয়া ৫০% পরিবেশ দুষন হচ্ছে জানা যায়।

বক্তারা আরো জানান, এই শিল্পে প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত আছে এবং ৫০ লক্ষ পরিবার তথা ২ কোটি মানুষের রুটি রুজীর ব্যবস্থা আমরাই করেছি, ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে এই লোকগুলো বেকার হয়ে পড়বে। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি ইভাটার বিপরীতে ১ কোটি টাকার উপরে ব্যাংক লোন যা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। এই ভাটা সমূহ বন্ধ হয়ে গেলে সমূদয় ব্যাংক লোন অনাদায়ী থেকে যাবে। ইটভাটার মালিকগণ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব দিয়ে থাকেন।

মাননীয় উপদেষ্টা আন্তরিক হলেও বর্তমান আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে জিগজাগ ইট ভাটার সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। তাই আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং মাননীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমেই ইটভাটা পরিচালনার একটি যৌক্তিক সমাধান হবে। সবার আগে ড্রান চিমনী, ফিক্সড চিমনী ও লাকড়ী নিয়ে পোড়ানো ইটভাটা সম্পূর্ন বন্ধ করা সিদ্ধান্তে মাননীয় উপদেষ্টার সাথে আমরা একমত পোষন করেছি কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা না করে তার বিপরীতমূখী অবস্থান নিয়ে বৈধ পদ্ধতির জিগজাগ ইটভাটায় জরিমানা ও ভাংচুর করছেন।

আমরা কোন অবস্থাতেই এই সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ঠেলে দিতে চাই না কিন্তু বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের মদদপুষ্ট বসুন্ধরা, কনকর্ড সহ আধিপত্যবাণী প্রতিষ্ঠান সমূহ ইট শিল্পকে ধ্বংসের নিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং বর্তমান সরকারের মুখোমুখি আমাদেরকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে।

জিগজাগ ইট ভাটা বন্ধের প্রতিবাদ এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১০ এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়জন (সংশোধন) আইন ২০১৯ এ বর্ণিত জিগজ্যাগ ইটভাটার ছাড়পত্র ও লাইসেন্স প্রাপ্তির জটিলতা নিরসনের জন্য বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সাথে আলোচনা করে এর একটা সমাদান বের করা সম্ভব বলে বক্তারা জানান। আগে ইটভাটার মাত্রা ছিল ৫৮% যা বিদ্যমান জিগজাগ ভাটায় আরও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

পরে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উপদেষ্টার কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেন ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ।

Check Also

পাংশার মাজাইল সিদ্দিকীয়া খানকা শরীফে

॥  মোক্তার হোসেন,  ষ্টাফ রিপোর্টার ॥ রা জবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউপির মাজাইল সিদ্দিকীয়া …