॥ মনিরুজ্জামান মনি, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ॥
সা তক্ষীরার সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসায় উপবৃত্তির ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।ফাজিল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণে ১২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এ বিষয়ে ঝাউডাঙ্গা ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম তোফায়েল হোসেন বলেন, আমরা টাকা আলিয়া মাদ্রাসা এটা আমার জানা নেই। আমি কালকে গিয়ে একটু খোঁজ নিয়ে দেখছি। এ ধরনের কাজ করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ উঠেছে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের উপবৃত্তির সুবিধা নিতে গিয়ে নিজেদের অর্থ খরচ করতে হচ্ছে তাদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অনলাইনে ফরম পূরণের জন্য মাদ্রাসার অফিসের লোকজন ১২০ টাকা করে নিয়েছে। এমনকি টাকা না দিলে উপবৃত্তির টাকা না পাওয়ার হুমকিও দেয়া হচ্ছে।
একাধিক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ উপবৃত্তির টাকা পেতেও যদি ঘুষ দিতে হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব? এটা খুবই দুঃখজনক।
অভিযুক্ত ঝাউডাঙ্গা ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার কম্পিউটার শিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন, আমরা প্রথমে বলে দিয়েছিলাম বাইরের দোকান থেকে নিতে হবে প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে হবে এটা মূল বিষয় না। বাইরে থেকে করে এনে জমা দিলে হবে। পরে শিক্ষার্থীরা বলছিল বাইরের দোকানগুলোতে ফরম পাওয়া যাচ্ছে না এজন্য দোকানদাররা যে খরচটা নিচ্ছে জাস্ট ওই খরচটা নিয়ে আমরা ফর্ম গুলো দিয়ে দিয়েছি। ফার্মের জন্য দশ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। ১০০ টাকা করে অনলাইন খরচ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। যদি কেউ বাইরে থেকে করতে চাই অসুবিধা নেই। যেহেতু এখানে আমি নতুন তবে আমার জানামতে এখানে শিক্ষার্থী ৪০ থেকে ৪৫ জন।
তবে ১২০ টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এই তথ্যটা আপনারা ভুল শুনেছেন। আমরা ১০ টাকায় ফর্ম ও ১০০ টাকা করে অনলাইন ফ্রি হিসাবে নেওয়া হচ্ছে। এখানে অতিরিক্ত কোন চার্জ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক এটা নিচ্ছি না। আমি বাইরে থেকে প্রিন্ট করে বাইরে থেকে নিচ্ছি এই। যেহেতু ওই ফরমে লেখা আছে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্য ফ্রী বিতরণ। এটা আমরা স্পষ্ট জানি।
এ বিষয়ে ঝাউডাঙ্গা ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম তোফায়েল হোসেন বলেন, আমরা টাকা আলিয়া মাদ্রাসা এটা আমার জানা নেই। আমি কালকে গিয়ে একটু খোঁজ নিয়ে দেখছি। এ ধরনের কাজ করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবুল খায়ের বলেন, এটাতো আমাদের দায়িত্ব না এজন্য বিষয়টি আমার জানা নেই।
এই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষাব্যবস্থায় এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়, তবে প্রতিবারই তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যায়—এমনটাই বলছেন সচেতন অভিভাবকরা।