॥ মোক্তার হোসেন, ষ্টাফ রিপোর্টার ॥
স্বা স্থ্য অধিদপ্তরাধীন রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে জনবল সংকটসহ নানান সমস্যায় জর্জরিত। উল্লেখিত কেন্দ্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একদিকে যেমন মনিটরিং নেই অপর দিকে জনবল সংকটের কারণে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।তিনি শনি, সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহে ৪দিন কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এবং অন্য অফিস ডে-তে কলিমহর ইউনিয়নের চরসাজুরিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয়রা আগাছায় ভরপুর কশবামাজাইল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের বেহাল দশায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে কেন্দ্রের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রের সামনে পেছনে চারদিকে আগাছায় ভরপুর। দেখেই বোঝা যায় কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় ঘাপলা।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিন কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে তথ্যানুসন্ধানে গেলে দেখা যায় ভেতরে দায়িত্বরত মিডওয়াইফ (ধাত্রী) তার কাজে সহযোগী জনৈক এক নারীর সাথে কথা বলছেন। বাইরে চিকিৎসকের অপেক্ষায় অত্র এলাকার দু’জন ব্যক্তি। কিন্তু উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) না থাকায় তারা ফিরে যান।
দায়িত্বরত মিডওয়াইফ জানান, তিনি চলতি বছরের ১৮ মার্চ যোগদান করেছেন। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের যত্ন ও নবজাতকের সম্ভবমতো সেবা প্রদান করেন তিনি। তবে প্রয়োজনীয় উপকরণ না থাকায় কেন্দ্রে নরমাল ডেলিভারী করা হয় না বলে তিনি উল্লেখ করেন। কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে তার মূল পোষ্টিং হলেও কলিমহর ইউনিয়নের চরসাজুরিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। কেন্দ্রে কোনো মুভমেন্ট রেজিস্টার ব্যবহার করা হয় না। রাজবাড়ী শহরে তার বাড়ী। সেখান থেকেই তিনি কর্মস্থলে যাতায়াত করেন।
জানা যায়, কর্মরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের (এসএসিএমও) কেন্দ্রে সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করে সেবা প্রদানের কথা। কেন্দ্রে ১জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডাব্লিউভি) এবং ১জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীও থাকার কথা। কিন্তু কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে জনবল সংকট রয়েছে। কর্মরত এসএসিএমও কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন না।
তিনি শনি, সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহে ৪দিন কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এবং অন্য অফিস ডে-তে কলিমহর ইউনিয়নের চরসাজুরিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয়রা আগাছায় ভরপুর কশবামাজাইল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের বেহাল দশায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কেন্দ্রে নিয়মিত চিকিৎসক না থাকা এছাড়া কেন্দ্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আছে বলেও অনেকে অভিযোগ তুলে ধরেন।
কশবামাজাইল ইউপির চেয়ারম্যান শাহরিয়ার সুফল মাহমুদ বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে সেবা পান সে লক্ষ্যে তিনি নিজে একাধিকবার কেন্দ্রে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে কথা বলেছেন। নিজ অর্থায়নে কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আগাছা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করিয়ে দিয়েছেন। কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উন্নয়নে তিনি উদ্যোগে নিলেও কর্তৃপক্ষ কোনো আগ্রহ দেখায়নি।
কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উদ্যোগ নিলে কেন্দ্রের উন্নয়নসহ দৃষ্টি নন্দন পরিবেশ গঠনে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস ব্যক্ত করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার সুফল মাহমুদ। কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে জনবল সংকট দূরীকরণের মাধ্যমে জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের যত্ন ও নবজাতকের সেবা কার্যক্রম জোরদার করণের গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এদিকে, যোগাযোগ করা হলে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. এবাদত হোসেন কশবামাজাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে জনবল সংকটের তথ্য নিশ্চিত করেন।