॥ মনিরুজ্জামান মনি, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ॥
প বিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব আয়োজিত সাংবাদিকদের মিলনমেলায় জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা প্রেসক্লাব চত্বর।জুলাই-আগস্টের শতাধিক শহীদ ও অসংখ্য আহতদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ফলে আজ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আমরা সবাই একত্রিত হতে পেরেছি। মন খুলে কথা বলতে পারছি। এজন্য ফ্যাসিস্টরা যেনো আর কোন দিন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে মাথা চাড়া দিতে না পারে সেদিকে সাংবাদিকদের সজাগ থাকতে হবে’।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু নাসের মোঃ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর সঞ্চালনায় অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, জামায়াতের সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহŸায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ, জামায়াতের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলতাফ হুসাইন প্রমূখ। এসময় জামায়াতের জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, যুগ্ম আহবায়ক আবুল হাসান হাদী, যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ফারুক মাহবুবুর রহমান, সাবেক সভাপতি জি,এম মনিরুল ইসলাম মিনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলা শাখার আহবায়ক আরাফাত হোসাইন, সদস্য সচিব সুহাইল মাহদীন, মুখ্য সংগঠক আল শাহরিয়ারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, জেলা জামায়াতের বিভিন্নœ পর্যায়ের নেতা-কর্মী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঈদপুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। সমাজের দর্পন। সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে সাংবাদিকদের ভ’মিকা অপরিসীম। অথচ বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দেশের মিডিয়াকে ধ্বংস করেছে। কিছু মিডিয়া কর্মীকে পকেটস্থ করে দেশে নৈরাজ্য, অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, গুম-খুন করেছে। সেই সাংবাদিকরা ফ্যাসিস্ট সরকারের যাবতীয় অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িত থেকে নিজেদের আখের গুছিয়েছে। এরা সাংবাদিক নামের কলঙ্ক। এদেরকে এখনই চিহ্নিত করতে হবে। এসমস্ত ফ্যাসিস্টদের তালিকা করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে’।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সার্বিক সহযোগিতা করার আশ^াস দিয়ে বক্তারা আরো বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মীরা অত্যাচারিত হয়েছে। সাংবাদিকসহ অনেকেই নিগৃহীত হয়েছে। এরপরও সাংবাদিকরা তাদের মিডিয়ায় ফ্যসিস্টদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করতে পারেনি’। তারা বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের শতাধিক শহীদ ও অসংখ্য আহতদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ফলে আজ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আমরা সবাই একত্রিত হতে পেরেছি। মন খুলে কথা বলতে পারছি। এজন্য ফ্যাসিস্টরা যেনো আর কোন দিন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে মাথা চাড়া দিতে না পারে সেদিকে সাংবাদিকদের সজাগ থাকতে হবে’।
এদিন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের মিলনমেলা ছিল উৎসবমুখর, আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। সাংবাদিকরা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও স্মৃতিচারণায় মুখর ছিল চারপাশ। প্রেসক্লাবের হলরুমজুড়ে হাস্যোজ্জ্বল পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে একে অপরের মাঝে বন্ধনের নতুন মাত্রা যোগ হয়।
অনুষ্ঠানে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল বারী বলেন, “সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্বে সারাবছর ব্যস্ত থাকেন। ঈদ পুনর্মিলনীর মতো আয়োজনগুলো আমাদের ভ্রাতৃত্ববোধ, একতা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে’। ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংবাদিকরা অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন। একই সাথে দুপুরে মধ্যহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিকদের প্রাণবন্ত আড্ডায় মুখরিত হয়ে ওঠে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব।