॥ আবুল হোসেন, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি ॥
রা জবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। ফেরি পারের অপেক্ষায় তিন কিলোমিটারদীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের কারণে এবং নদীতে প্রচন্ড স্রোত, ফেরি ঘাট সংকটের কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র জানজটের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী সহ চালকরা।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি, আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন টেকনিক্যাল সমস্যায়র কারনে শুধুমাত্র ৪ নং ঘাট চালু আছে এবং অন্যান্য ঘাট গুলো বন্ধ থাকায় ঘাটে গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশ ঘাটে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় থানা পুলিশ টহল বৃদ্ধি করেছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরি ঘাট গুলো সচল করা হবে।
১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহনের তীব্র সারির সৃষ্টি হয়েছে। পদ্মায় প্রচন্ড স্রোত থাকায় নদীতে ফেরী চলাচলে আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগছে।
অপরদিকে দৌলতদিয়া প্রান্তে কাগজ কলমে মোট ৭ টি ফেরীঘাট থাকলেও ৩ টি ফেরীঘাট সচল ছিলো। এরপর বন্ধ হয়ে যায় আরো ২টি ঘাট। কিন্তু পদ্মায় স্রোতের কারণে এবং সোমবার দিবাগত রাত ১২ টার পর থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙে যাওয়ায় ঘাটটি সাময়িক ভাবে বন্ধ থাকে। এখন বর্তমানে এই বন্ধ ঘাটটি সচল করার জন্য কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষ। ৭, ৪, ও ৩ টি ফেরীঘাটের মধ্যে বর্তমানে একটি মাত্র ঘাট ৪ নম্বর ফেরীঘাট সচল রয়েছে। এতে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন বয়স্ক সহ শিশুরা।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, দৌলতদিয়ায় ৭টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১, ২, ৫ ও ৬ নং ফেরিঘাট দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ৩, ৪ ও ৭নং ফেরিঘাট জরাজীর্ণ অবস্থায় চলমান ছিল। এর মধ্যেই পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে গত মাসের ২৩ আগস্ট থেকে ৭ নম্বর ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট সচল থাকলেও ৩ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙে যাওয়ায় সোমবার রাত ১২ টা থেকে ঘাটটি মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। শুধু ৪ নম্বর ঘাট সচল থাকায় একটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এতে করে যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হয়েছে।
রয়েল পরিবহণের যাত্রী খুলনা খালিসপুর থেকে ছেড়ে আসা, গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৩ ঘন্টার বেশি আমরা সিরিয়ালে দাড়িয়ে আছি। এখনো কয়টা বাজে ফেরী পার হবো বলতে পারি না। পুলিশের জিজ্ঞেস করলে পুলিশও সঠিক ভাবে বলতে পারে না। অতি দ্রুত লাইন যদি ক্লিয়ার হতো সবার জন্য ভালো হতো। এখানে সিরিয়ালে রোগী আছে, বয়স্করা আছে, বিদেশ যাত্রীরাও সিরিয়ালে আটকে আছে।
মানিক কুণ্ডু নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, দৌলতদিয়ায় হঠাৎ করেই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যা আমাদের জন্য কষ্টকর বেপার। সঠিক সময় মতো ঢাকায় যেতেও পারছি না। বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানাই এবিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য।
বিআইডব্লিউটিসি পাটুরিয়া ঘাটের (ম্যানেজার মেরিন) মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭ টি ঘাটের মধ্যে ২ টি ফেরীঘাট সচল ছিলো। তবে ৩ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙে যাওয়ায় ঘাটটি সাময়িক ভাবে বন্ধ থাকে। এখন মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেটিও সচল করা হবে। এবং আমরা হেড অফিস ও বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষ কে প্রস্তাব দিয়েছিলাম ৭ নং ফেরীঘাট ও ৫ নং ফেরীঘাট সচল করার জন্য, তবে তারা আমাদের কে জানিয়েছে, কাজ চলছে অতি দ্রুতই ৫ নম্বর ফেরীঘাট সচল করা হবে। কিন্তুু একই সাথে ৭ নম্বর ফেরীঘাট চালু করা দরকার বলে আমরা মনে করছি।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী, নেপাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, দৌলতদিয়ায় ২ টি ঘাট চালু ছিলো ৩ ও ৪ নম্বর ফেরীঘাট। কিন্তু ৩ নম্বর ফেরীঘাটের পন্টুনের প্লেট ভেঙে যাওয়ায় ঘাটটি সাময়িক ভাবে বন্ধ রয়েছে। এখন মেরামত চলছে কিছুক্ষণ পরেই ঘাটটি পুনরায় চালু হবে। আমরা দৌলতদিয়া ৫ নং ফেরীঘাট পরিদর্শন করেছি আমাদের কাজ চলছে ঘাটটি সচল করার এবং ৭ নং ফেরীঘাটে ডুবোচর পড়ে যাওয়ায় সেখানে ড্রেজিং করার দরকার রয়েছে। এ ব্যাপারেও কথা চলছে যেনো দ্রুতই ৭ নং ফেরীঘাট সচল করা হয়।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখা কার্যালয়ের সহ-ব্যবস্থাপক, মো: আলীম দানিয়েল বলেন, ফরিদপুরে চলমান আন্দোলনের কারণে ঘাট এলাকায় যানবাহনের সারির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া প্রান্তে ১ টি মাত্র ফেরীঘাট সচল রয়েছে। এবং অন্যান্য ফেরী ঘাট সচল করার কাজ চলমান আছে। এ নৌরুটে বর্তমানে ছোট বড় মিলে মোট ১০ টি ফেরী চলাচল করছে। এ ফেরী গুলো দিয়েই যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি, আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন টেকনিক্যাল সমস্যায়র কারনে শুধুমাত্র ৪ নং ঘাট চালু আছে এবং অন্যান্য ঘাট গুলো বন্ধ থাকায় ঘাটে গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশ ঘাটে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় থানা পুলিশ টহল বৃদ্ধি করেছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরি ঘাট গুলো সচল করা হবে।