॥ আরিফুল ইসলাম আরিফ, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥
সি রাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঝিকিড়া বন্দর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামেই মডেল, বাস্তবে এর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বিদ্যালয়ের পুরো প্রাঙ্গণ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। স্কুলের মাঠ জমে আছে হাঁটু সমান নোংরা পানি। ফলে বিদ্যালয়টি এখন যেন একটি স্কুল নয়, বরং ছোট্ট একটি পুকুরে পরিণত হয়েছে।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের প্রতিদিনই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শিশুরা পানির মধ্যে দিয়ে শ্রেণীকক্ষে আসছে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। নোংরা পানির কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, চর্মরোগসহ নানা রোগের আশঙ্কা রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরে পৌর সভা থেকে পানি সেচ দিয়ে বের করে দেয়েছে পানি । কিন্তু এখনো কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
বিদ্যালয়ের মাঠজুড়ে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশ করতে হচ্ছে সেই পানির ভেতর দিয়েই। অনেক সময় ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের প্যান্ট কিংবা ইউনিফর্ম ভিজে যায়, আবার অনেকে ভারসাম্য রাখতে না পেরে পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। শিশুদের এই দুর্দশার কারণে অভিভাবকরাও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
অভিভাবকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবার বর্ষা এলেই একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি ঘটে। অথচ প্রশাসনের একেবারে চোখের সামনে বিদ্যালয়টি অবস্থান করলেও কার্যকর কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা আজ অবধি নেয়া হয়নি।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের প্রতিদিনই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শিশুরা পানির মধ্যে দিয়ে শ্রেণীকক্ষে আসছে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। নোংরা পানির কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, চর্মরোগসহ নানা রোগের আশঙ্কা রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরে পৌর সভা থেকে পানি সেচ দিয়ে বের করে দেয়েছে পানি । কিন্তু এখনো কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
শিক্ষার্থীদেরও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায় , প্রতিদিন পানি পাড়ি দিয়ে ক্লাসে আসতে হয়। জুতা ভিজে যায়, অনেক সময় বই খাতাও নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে পড়াশোনা করা খুব কষ্টকর।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, শিক্ষার উন্নয়নের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে, নতুন ভবন নির্মাণ করছে, কিন্তু বিদ্যমান বিদ্যালয়গুলোতে মৌলিক অবকাঠামো নিশ্চিত করা হচ্ছে না। এই বিদ্যালয়ে সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে প্রতি বর্ষায় একই দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
তাদের প্রশ্ন? একটি বিদ্যালয় যদি প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকেও এমন অবহেলার শিকার হয়, তবে দূরবর্তী এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চিত্র কেমন হতে পারে?
অভিভাবকরা বলছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সুস্থ পরিবেশে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়া সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। তাই তারা অবিলম্বে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও মাঠ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
এক্ষেত্রে শিক্ষা বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত পদক্ষেপই পারে বিদ্যালয়টির দুর্দশা থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: ছানোয়ার হোসেন বলেন , স্কুল থেকে পানি বের হওয়ার প্রধান নালাটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর একটাই প্রশ্ন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আর কতদিন এই দুর্ভোগে পড়বে? প্রশাসন কবে চোখ খুলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করবে।