Tuesday , 11 November 2025

মোংলায় এক বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী ধরার কৌশল বললেন বন কর্মকর্তা

॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥

মোং লায় বন ছেড়ে লোকালয়ে আসা এক বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। প্রায় এক দেড় মাস ধরে বিভিন্ন গাছের ফল, বাড়ির মুল্যবান আসবাবপত্র নষ্ট করছে। বসত ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট করছে। দুই শিশুকে ভেংচি দিয়ে ভয় দেখিয়েছে। বাচ্চারা ভয়তে ঘুমাও না। সারাদিন এই বাড়ি থেকে ওই বাড়ি ঘুরছে বানরটি। বর্তমানে পৌর শহরের পশ্চিম শেহলাবুনিয়া বাতেন সড়ক এলাকায় অবস্থান করছে বানরটি।

তিনি আরো বলেন, বানর ধরার কোন প্রযুক্তি নেই আমাদের কাছে। তবে খাবারের সাথে বা কলার সাথে পরিমান মত ঘুমের ওসুধ মিশিয়ে খাবার দিলে ঐ খাবার খাওয়ার পর সে ঘুম পড়বে। খাবারটি সকালের দিক দিলে ভালো হয়। রাতে দিলে খুজে পাওয়া যাবে না। ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে পরে,

জানা গেছে, মোংলা পৌর শহরে দেড় মাস ধরে অবস্থান করছে একটি বানর। প্রথম কয়েকদিন এলাকার মানুষ খাবার দিয়েছে বানরকে। সবাই ভেবেছিলেন দু-একদিন পর চলে যাবে। তবে এখনো বানরটি বনে ফেরত না গিয়ে মানুষের ক্ষতি করছে। এতে বানর নিয়ে অতিষ্ঠ মোংলা পৌর শহরের এলাকাবাসী।

স্থানীয় রিজেকশন ব্যবসায়ী মোঃ রাজু বলেন, একটি বানরের অত্যাচারে আমরা অসহায়। গাছের ফল নষ্ট করছে। গাছ থেকে লাফিয়ে আমার বাড়ির দেয়াল টপকে বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলে। টিভির রিমোট ও এসির রিমোট নিয়ে গেছে। রান্না ঘরে থাকা খাবার সহ বিস্কুট খেয়ে সাথে নস্ট করে নিয়ে যায়।

তাড়ানোর চেষ্টা করলে ভেংচি দিয়ে ভয় দেখায় আমার বাচ্চা রিহান ও রায়নাকে। আমার দুই ছেলেমেয়ে রিহান ও রায়না বেলকনি ( বারান্দা) সহ বাড়ির বাহিরে বেড় হতে পারে না। ছোট মেয়ে রায়না দুই দিন ভয়ে ঠিক মত ঘুমাচ্ছে না। তাকে তারা দিয়ে কিচেন রুম পর্যন্ত নিয়ে গেছে।

পাশের বাড়ির ক্যাপ্টেন শাহিন ভাইয়ের বড়ির বিভিন্ন রকমের ফল মুল নস্ট করে ফেলে । আমার বাড়ির দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়ার ঘরের বিছানার চাদর এলোমেলো করে দিয়ে যায়। একই এলাকার রব্বানীর বাড়ি থেকে রান্না ঘরে থাকা রান্নার হাড়ি পাতিল সহ জিনিসপত্র নস্ট করে তা নিয়ে চলে যায়।

পৌর শহরের মাদ্রাসা রোডের ব্যাবসায়ী ও যুবদল নেতা মুহাম্মদ আল মামুন বলেন, ১৫ /২০ দিন আগে বানরটি আমার সামনের বাড়ির ৩ তলার ছাদে ও জানালার কার্নিসে দেখি। উৎসুক জনতা ভিডিও করে সে সময়। পরের দিন আমার বিল্ডিং এ এসেছিলো। তবে বাচ্চাদের ঠিল ছুড়তে মানা করি। অনেকে খাবার ও দিয়েছে। বেশ কিছুদিন আমার বাড়ির আশপাশে অবস্থান করেছিলো। এখন শুনলাম শহরের বাতেন সড়ক এলাকায় বসতবাড়িতে অত্যাচার সহ জিনিস পত্র নস্ট করছে। বানরটি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার তা না হলে কাউকে কামড় দিলে ক্ষতি হতে পারে।

শাহনুর টিংকু বলেন, বানরটি ৭ দিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন বসত বাড়িতে বিরক্ত করে । তবে বানরটিকে সবাই খাবার দেয়। বানরটিকে যাতে কেউ আঘাত সহ ডিল না ছোড়ে সে বিষয়ে সর্তক করেছি বাড়ির লোকদের সহ এলাকাবাসীকে । বন বিভাগের লোকজন যদি বানরটি নিয়ে যেত আমরা রেহাই পেতাম।

সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ করির জানান, মোংলা পৌর শহরে একটি বানর বিচরণের কথা শুনেছি। তবে বানরটিকে কেউ যাতে আঘাত না করে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেক সময় খারারের সন্ধানে পর্যটকবাহী লঞ্চের ছাদে বা নদী সাঁতরে লোকালয়ে চলে যায়। সুন্দরবন সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী গ্রাম হয়ে অনেক সময় শহরে যায় খাবারের জন্য।

তিনি আরো বলেন, বানর ধরার কোন প্রযুক্তি নেই আমাদের কাছে। তবে খাবারের সাথে বা কলার সাথে পরিমান মত ঘুমের ওসুধ মিশিয়ে খাবার দিলে ঐ খাবার খাওয়ার পর সে ঘুম পড়বে। খাবারটি সকালের দিক দিলে ভালো হয়। রাতে দিলে খুজে পাওয়া যাবে না। ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে পরে, আমাদের বিষয়টি অবহিত করলে তখন আমরা বানরটি উদ্ধার করে সুন্দরবনে ছেড়ে দেয়ার জন্য নিয়ে আসবো বলে জানান এ বন কর্মকর্তা।

Check Also

পাংশায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ শরীফ কায়কোবাদের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত

॥  মোক্তার হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ॥ আ সন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ (পাংশা, …