বৃহস্পতিবার , ১৭ অক্টোবর ২০২৪

গোয়ালন্দে প্রবাসী সবুজ হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের এবং আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি

॥ আবুল হোসেন, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি ॥

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সৌদি আরব প্রবাসী যুবক সবুজ শেখের (৩৫) হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা গ্রহন, মূলহোতা স্ত্রী রোকসান (২৫) ও তার পরকীয়া প্রেমিককে দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা।

 

সবুজের বিদেশ থেকে পাঠানো সকল টাকা-পয়সা রোকসানা কৌশলে নিজের এ্যাকাউন্টে নিয়ে রাসেলের সাথে ফুর্তি করে।ওরা পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে ঘাস মারার ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। রোকসানা ও রাসেলের ফাঁসি চাই।

বৃহস্পতিবার বেলা সারে ১০ টা হতে সারে ১১ টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী ঢাকা -খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ উপজেলার মকবুলের দোকান এলাকায় শান্তিপূর্ণ ভাবে এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচি চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে অন্তত দুই কিলোমিটার করে ৪ কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে কয়েক’শ বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়লে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।

পরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে থানার মামলা গ্রহন এবং দুই দিনের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক হতে অবরোধ তুলে নেন।

স্বজনরা জানান, অসুস্থ্য হয়ে টানা ৮ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১ অক্টোবর মঙ্গলবার দিনগত রাত এগারোটার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সবুজের মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে সবুজের মৃত্যুর কারন হিসেবে বিষক্রিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত সবুজ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নবুওছিমদ্দিন পাড়ার মো. আইনদ্দিন শেখের ছেলে। সবুজ-রোকসানার সংসারে ১০ ও ৩ বছর বয়সী দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

মানববন্ধনে নিহত সবুজের মা অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলের বৌ রোকসানার সাথে রাসেল নামে স্হানীয় এক যুবকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে । সবুজের বিদেশ থেকে পাঠানো সকল টাকা-পয়সা রোকসানা কৌশলে নিজের এ্যাকাউন্টে নিয়ে রাসেলের সাথে ফুর্তি করে।ওরা পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে ঘাস মারার ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। রোকসানা ও রাসেলের ফাঁসি চাই।

সবুজের চাচা কোব্বাত শেখ, চাচাতো বোন হাসিনা বেগম,চাচাতো ভাই হাসেম মিয়া সহ এলাকার কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, আমরা সবুজের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় বেশ কয়েকবার অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু থানায় অভিযোগ না নিয়ে আমাদের ফিরিয়ে দেয়। আমরা মনে করি, এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে থানায় মোটা অংকের টাকা লেনদেন হয়েছে।

এদিকে আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে নিহত সবুজের অভিযুক্ত স্ত্রী রোকসানা তার ছোট শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, স্বামীর সম্পত্তি হতে আমাকে এবং আমার দুই শিশু সন্তানকে বঞ্চিত করার জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। তার স্বামী ডায়রিয়া- বমির কারনে মারা গেছেন। আমি তাকে বিষ খাওয়াই নি। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন রোকসানার উপর চড়াও হলে পুলিশ ও স্হানীয় কয়েকজন তাকে নিরাপদ স্হানে সরিয়ে নেয়।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, সবুজের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা ইতিপূর্বে দায়ের করা হয়েছে। যে কারনে আর কোন অভিযোগ নেয়া হয়নি। তবে স্বজনরা নতুন করে অভিযোগ দিতে চাচ্ছেন। অভিযোগটি আমলে নেয়া এবং ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আসামি গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়। বর্তমানে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা সংক্রান্ত অভিযোগ সত্য নয়।

Check Also

স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মারা এখনও সমাজে রয়েছে—— রিজভী

॥ সাদ্দাম উদ্দিন (রাজ), নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি ॥ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী …