॥ মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি ॥
মোংলা উপজেলা চিলা ইউনিয়নের পশ্চিম চিলার কেয়াবুনিয়া এলাকায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক স্কুল ছাত্রীকে জোর পুর্বক বিয়ের পিড়িতে বসানোর চেষ্টা করছিল মা-বাবা তারক রায় দম্পত্তি।৭ম শ্রেনী পড়ুয়া এ কিশোরী বিয়েতে রাজি না থাকলেও মা-বাবা তাকে জোরপুর্বক বিয়ে দিচ্ছিলেন বলে জানায় স্থানীয়রা।
ঘটনাটি এলাকায় জানাজানী হলে স্থনীয়দের সহায়তায় ও পুলিশের একটি দল কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে মুছলেকা নিয়ে বিয়ের আয়োজন তা বন্ধ করে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে এ বিয়ের আয়োজন করা হলে শুক্রবার দুপুরে বাজুয়ার এলাকার বরের সাথে ওই কিশোরীর বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
মোংলা উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ জানায়, স্থানীয় চিলা মনুমিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী ওই কিশোরীর বিয়ে ঠিক করে তার পরিবার। বর পার্শবর্তী দাকোপ উপজেলার বাজুয়া এলাকার বাসিন্দা।
বিয়ের আয়োজন শুরু হওয়ার পর এ খবর জানতে পারেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না। তিনি ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে (ইউপি) গাজী আকবার হোসেনকে বিয়ে বন্ধের জন্য পদপে নিতে বলেন।
সকল বাধা উপেক্ষা করে এরই মধ্যে বিয়ের সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। স্থানীয় এক চৌকিদারের সহায়তায় চিলা ইউনিয়র পরিষদ থেকে বদলীকৃত সচিব ও ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে একটি নকল জন্ম সনদ তৈরী করে পিতা তারক রায় সহ একটি প্রতাকর চক্র। সেই জন্ম সনদ দিয়ে পুরোহিতের মাধ্যমে বরযাত্রীদের বিয়ের আসরে আসার জন্য সব কিছুই ঠিক-ঠাক করেন কনের পিতা তারক রায় ও তার পরিবারের সদস্যরা।
পরে ৯৯৯ এ কল পেয়ে মোংলা থানা থেকে একদল পুলিশ হাজির হয় কনের বাড়িতে কেয়াবুনিয়া বালুর মাঠ এলাকায়। এসময় থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক এস আই মোঃ আসাদ কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিবাহের কুফল ও আইনি বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে জানান এবং মা ও পিতা তারক রায়ের কাছ থেকে মুছলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইশারত হোসেন বলেন, পরিষদের সচিব ও আমার স্বাক্ষর জাল করে একটি জন্ম সনদে পুরোহিতকে দিয়ে ওই কিশোরীকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল পরিবারের সদস্যরা, তবে এ ব্যাপারে তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
পরে পুলিশের তৎপরতায় প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার পরিবার। কিশোরীটি এখন নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, দুপুরে বাল্যবিবাহের আয়োজনের খবর পেয়ে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান সহ পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন এবং পুলিশের তৎপরতায় ৭শ শ্রেনী পড়ুয়া ওই কিশোরী বল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেলো।