বৃহস্পতিবার , ২৫ জুলাই ২০২৪

ব্যাকটেরিয়া যখন আশীর্বাদ

মানব দেহের পরিপাকতন্ত্রে  নানা রকম মাইক্রো অর্গানিজম বিদ্যমান। এদেরকে এক সাথে বলা হয় gut microbiota। এরা আমাদের পরিপাকতন্ত্রে অবস্থান করে।এদের মধ্যে good বা helpful ব্যাকটেরিয়া গুলো (যেমন-Lactobacillus, Bifidobacterium) মেটাবোলিজমের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা (পরিপাক ক্রিয়াকে দ্রুত করে ও হজমে সাহায্য )    পালন করে, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।খাবার অথবা সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে দেহ যখন উপকারী মাইক্রো অরগানিজম গ্রহণ করে তখন তাকে আমরা প্রোবায়োটিক বলে বিবেচনা করি World Health Organization (WHO) defines probiotics as “live microorganisms which when administered in adequate amounts confer a health benefit on the host.”

কেন প্রোবায়োটিক প্রয়োজন

পরিপাক নালীর কাজ-কর্ম ভালোভাবে চলার জন্য আমাদের প্রোবায়োটিক দরকার।বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি প্রোবায়োটিক দেহের অনেক উপকার সাধন করে। প্রোবায়োটিক-

  • পরিপাক ক্রিয়াকেউন্নত করে
  • বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন তৈরি করে
  • বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান নিষ্ক্রিয় করে
  • অন্য ক্ষতিকর জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • প্রোবায়োটিক পরিপাকনালীর উপকারী ও অপকারী ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে ব্যালেন্স করে
  • ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে
  • প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
  • ওজন নিয়ন্ত্রনে ও মেদ কমাতে সাহায্য করে

কি কারনে প্রোবায়োটিক কমে যেতে পারে দেহে

দেহে প্রোবায়োটিকের অভাব দেখা দেয় বিভিন্ন কারণে। যেমন:

• এন্টিবায়োটিকের অযথাযথ ব্যবহার
• বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণে

• অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন
• সুষম খাদ্যের অভাব
• নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন

  • অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ
  •  ফাস্টফুড গ্রহণ ও কম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া ইত্যাদি

 

কারণ গুলোর কারণে শরীরের উপকারী জীবাণুগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।  প্রোবায়োটিক এর উৎসঃ   টকদই,  পনির, সয়া দুধ, ডার্ক চকোলেট, প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট (যেমন-দি ইবনে সিনা ফার্মাসিঊটিক্যালস এর ন্যাচারাল মেডিসিন বিভাগের ক্যাপসুল রিবায়ো )

রোগ নির্দেশনায় প্রোবায়োটিকঃ  প্রোবায়োটিক সাধারনত ডায়রিয়া, এন্টিবায়োটিক জনিত ডায়রিয়া, আইবিএস, ল্যাক্টোজ ইন্টোলারেন্স, এলার্জি, ভ্যাজাইনাল ক্যান্ডিডিয়াসিস সহ  অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

প্রোবায়োটিক যেভাবে কাজ করেঃ

  • প্রোবায়োটিক gut এ ল্যাক্টিক এসিড ও অন্যান্য অর্গানিক এসিড (যেমনঃ বিউটারিক এসিড, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ইত্যাদি)  তৈরী করে, যা pathogen কে host এর কোষের মধ্যে প্রবেশে বাধা প্রদানের মাধ্যমে ডায়রিয়া ও অন্যান্য infectious disease থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
  • প্রোবায়োটিক শরীরে NK (ন্যাচারাল কিলার) cells (যেমনঃ T cell subsets) এর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয় ফলে শরীরের ইমিউন সিস্টেম আরো শক্তিশালী হয় পাশাপাশি এলার্জিক সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা পালন করে ।

সেবন বিধিঃ   

টক দইঃ প্রোবায়োটিক এর অন্যতম উৎস হচ্ছে টকদই। এতে আছে ল্যাকটোব্যাসিলাস ও বিফিডোব্যক্টেরিয়া। এগুলো অন্ত্রের জন্য খুবই ভালো। এজন্য একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন এক কাপ টক দই খাওয়া উচিত।

প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্টঃ  বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে  রোগের ধরনানুযায়ী জন্য সাধারণত ৪ বিলিয়ন সমন্বিত প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল

( যেমনঃ ক্যাপসুল রিবায়ো) ১-২ টি করে দিনে ১-২ বার খাওয়া যায়।

ডায়রিয়া চিকিৎসায় নির্দেশনাঃ  WHO (World Health Organization) একিউট ডায়রিয়ার চিকিৎসায়  খাবার স্যালাইনের সাথে প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট গ্রহনেরও পরামর্শ দিয়েছে।

এই করোনাকালীন সময়ে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, করোনাকালে প্রতিদিনের ডায়েটে প্রোবায়োটিক খাবার যুক্ত করা জরুরি কারণ এগুলো কেবল হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে না; সেইসঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে

সূত্রঃ উইকিপিডিয়া, healthline.com, health.harvard.bd,pubmed,gutmicrobiotaforhealth.com   

RPH  Md. Abu Salman Rana

M.pharm

Executive, Strategic Marketing

The IBN SINA Pharmaceuticals Ltd

(Natural Medicine Division)

Email: [email protected]

Check Also

গোয়ালন্দে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত।

॥  আবুল হোসেন, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি ॥ পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া খানকা শরীফ …