॥ মনিরুজ্জামান মনি, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ॥
সাতক্ষীরায় একুশে ফেব্রæয়ারি প্রথম প্রহারে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারে, ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাত ১২ টা ১ মিনিটে প্রথমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ,পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম সহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,অবশেষে, দীর্ঘ আন্দোলনের পর বাংলা ভাষা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রæয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি, জেলা বিএনপি, সাতক্ষীরা পৌরসভা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া এ সময় আরো, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব, সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্র, দা এডিটরস, সাতক্ষীরা রিপোর্টার্স ক্লাব, দৈনিক যুগের বার্তা, দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা, দৈনিক মুক্ত খবর, জেলা শিক্ষা অফিস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পুলিশ সুপার পিবিআই, গণপূর্ত বিভাগ, সামাজিক বনায়ন কেন্দ্র, পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা, সাতক্ষীরা জেলা মন্দির সমিতি সহ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক – শিক্ষার্থী ,
সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সরকারি – বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এই দিনটি সাতক্ষীরার মানুষের মধ্যে এক গভীর আবেগ ও দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়েছে।মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় এবং শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে একুশে ফেব্রæয়ারি উপলক্ষে সাতক্ষীরার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এছাড়া, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ভাষা শহীদদের জীবন ও কর্মের উপর আলোকচিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রসঙ্গ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস : ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) এ বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ওঠে। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার উর্দু ভাষাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসাবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউলসহ, আরো কয়েকজন শহীদ হন। এই ঘটনা ভাষা আন্দোলনকে আরো বেগবান করে তোলে। অবশেষে, দীর্ঘ আন্দোলনের পর বাংলা ভাষা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রæয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিনটি বিশ্বের সকল ভাষাভাষীর জন্য মাতৃভাষার অধিকারের পথিক হিসেবে পালিত হয়।