॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥
২ ০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে আবারও শুরু হয় বনদস্যুদের তৎপরতা। সেই সাথে শুরু হয়ে যায় বনের উপর নির্ভরশীল জেলে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়।
সুন্দরবনে বনদস্যুদের তৎপরতা রুখে দিতে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন। এ অভিযানে আটক করা হয় একাধিক দস্যুবাহিনীর প্রধানসহ ডাকাত সদস্য ও সহযোগীদের।
যে সুন্দরবন ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর দস্যুমুক্ত ঘোষনা করা হয়েছিলো সেই বনে গত বছর থেকে শুরু হয় অশান্তি। সুন্দরবনে গত বছরের শেষের দিকে করিম শরিফ বাহিনীর আবির্ভাবে রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে পড়ে জেলেরা। এর পর ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আসাবুর বাহিনী, আনারুল বাহিনী, ছোট সুমন বাহিনী, রাঙা বাহিনী, দুলাভাই বাহিনী, জাহাঙ্গীর বাহিনীসহ একাধিক ছোট ছোট দস্যুগ্রুপ। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে বর্তমানে ১৪টি দস্যুবাহিনী সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তাদের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারন জেলেদের ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং মুক্তিপণ আদায় করছে দস্যুরা।
সুন্দরবনে বনদস্যুদের তৎপরতা রুখে দিতে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন। এ অভিযানে আটক করা হয় একাধিক দস্যুবাহিনীর প্রধানসহ ডাকাত সদস্য ও সহযোগীদের।
উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমান অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম। পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনে দস্যুদের আনাগোনা বেশি থাকায় কৌশলগত কারনে কয়েকটি ধাপে অভিযান পরিচালনা করে কোস্টগার্ড। দস্যুতা দমনে এ বাহিনীর নিয়মিত অভিযানের কারনে বর্তমানে সুন্দরবনের দস্যুবাহিনীর তৎপরতা অনেকটা কমে এলেও সুন্দরবনকে পুরোপুরি ডাকাতমুক্ত করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছে কোস্টগার্ড।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলা সদর দপ্তরের গোয়েন্দা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মুনতাসীর ইবনে মহসিন বলেন, এবছর জানুয়ারি থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে সুন্দরবনে বিভিন্ন দস্যুবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে মোট ২৬টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৬৪টি দেশীয় অস্ত্র, অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জামাদি, ৩৭৬ রাউন্ড কার্তুজ এবং জিম্মি থাকা ৬ জন নারীসহ ৪৮ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অভিযানে মোট ৪৩ দস্যুকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। কেউ যাতে বনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বন্যপ্রাণী নিধন করতে না পারে সেদিকে কোস্টগার্ডের বিভিন্ন স্টেশনে অবস্থানরত সদস্যরা নিয়মিত টহল পরিচালনা করছে।
বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ সংরক্ষণ অভিযানে কোস্টগার্ডের সাফল্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৭২০ কেজি হরিণের মাংস, চামড়া, মাথা, পা এবং ৪০০টি হরিণের ফাঁদসহ ২৪ জন হরিণ শিকারিকে আটক করেছে।
global sangbad 24 অনলাইন নিউজ পোর্টাল