॥ আরিফুল ইসলাম আরিফ, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥
উ ল্লাপাড়া উপজেলার চলনবিল এলাকায় শুটকি উৎপাদন এখন পুরো মৌসুম জুড়ে ব্যস্ত সময় পার করছে উৎপাদক ও শ্রমিকরা। চলনবিলের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করা দেশীয় মাছ এসব এলাকার চাতালে প্রতিদিনই শুটকি হিসেবে প্রক্রিয়াজাত হচ্ছে। তবে উৎপাদকদের দাবি—এসব কার্যক্রমে মৎস্য বিভাগের সহযোগিতা তারা খুব একটা পান না।
মোহনপুর বাজারের শুটকি ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম রাকিব বলেন, “আমরা মাছগুলো বড়, মাঝারি ও ছোট এই তিনভাবে ভাগ করি। এরপর পরিষ্কার করে লবণ দিয়ে বানার ওপর শুকাতে দেই।”
অন্য শুটকি ব্যবসায়ী আওয়াল প্রামানিক বলেন, “লাহিড়ী মোহনপুর থেকে মাছ কিনে আনছি। বাছাই, ধোয়া–পরিষ্কার করার পর আমরা মেডিসিন দেই যাতে পোকা না ধরে। এরপর ভালোভাবে শুকিয়ে আড়তে পাঠাই।” তিনি জানান, টেংরা শুটকি কেজিপ্রতি ৬০০–৭০০ টাকা, ভালো পুঁটি ৪০০–৫০০ টাকা, খলিসা ১৫০–৩০০ টাকা এবং চান্দা ৪০০ টাকায় বিক্রি করেন। উৎপাদিত শুটকি সৈয়দপুর, ঢাকা, মোহাম্মদপুর ও রায়েরবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়।
তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ—উল্লাপাড়া মৎস্য অফিস থেকে তারা এখনো কোনো সরাসরি সহযোগিতা পাননি। “কী নিয়ম আছে জানি না। কোনো সাহায্যও পাই নাই,” দাবি করেন আওয়াল প্রামানিক।
মোহনপুর বাজারের শুটকি ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম রাকিব বলেন, “আমরা মাছগুলো বড়, মাঝারি ও ছোট এই তিনভাবে ভাগ করি। এরপর পরিষ্কার করে লবণ দিয়ে বানার ওপর শুকাতে দেই।”
নারি শ্রমিক মোছাঃ নদী জানান,সকাল সাতটার সময় আসি আপার পর মাছ নিয়ে পরিষ্কার করি। পরিস্কার করে লবন দেয়া হয় তারপর রোদে শুকিয়ে মাছের পেট কেটে হয়। মাছের আইসটা ছাড়ানো হয় তারপর আমরা সকলে সাতটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করি। এবং সারাদিন কাজ করে মাত্র ২৫০ টাকা আমরা পাই।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, চলনবিল অঞ্চলে শুটকি উৎপাদনের বিস্তৃত এলাকা রয়েছে। বিশেষ করে গত ৫–৬ মাস ধরেই স্থানীয় বিভিন্ন চাতালে টেংরা, পুঁটি, খলিসা, চিংড়ি, গোচোইসহ নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ থেকে শুটকি উৎপাদন চলছে। তিনি বলেন, “নিরাপদ শুটকি উৎপাদনের জন্য আমরা নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। লিফলেট, হ্যান্ডনোটসহ বিভিন্ন উপায়ে উৎপাদকদের সচেতন করি যাতে ভোক্তা পর্যায়ে নিরাপদ শুটকি পৌঁছায়।”
দেশীয় মাছের ওপর নির্ভরশীল এ শুটকি শিল্প একদিকে স্থানীয় অর্থনীতিকে সচল রাখছে, অন্যদিকে নিরাপদ উৎপাদন ও শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি—এই দুটি বিষয় এখন মূল আলোচনার দাবি রাখছে।
global sangbad 24 অনলাইন নিউজ পোর্টাল