॥ আরিফুল ইসলাম আরিফ, উল্লাপাড়া, (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥
সি রাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কর্মকার পল্লীতে অন্যান্য বছরের মতো টুংটাং শব্দে মুখর ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে না এবার। কোরবানির ঈদে পশু জবাই ও মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত ছুরি, দা, চাপাতিসহ ধাতব সরঞ্জামের চাহিদা বাড়লেও এবার চিত্রটা অনেকটাই ভিন্ন।
বিকাশ কর্মকার বলেন, আমি দা, ছুরি, কাচি, কোদাল তৈরি করি। কিন্তু তুলনামূলকভাবে এবার কাজ অনেক কম। কয়লাও ঠিকভাবে পাওয়া যায় না।
এলাকার কর্মকাররা জানাচ্ছেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার অর্ডার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বাজারে লোহা কয়লা মূল্যবৃদ্ধি, ক্রেতার সংখ্যা হ্রাস এবং সামগ্রিকভাবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়াকেই এই অবস্থার জন্য দায়ী করছেন তারা। ফলে কর্মকারদের দোকানগুলোতে আগের মতো হাতুড়ি, ছেনি আর ধাতব শব্দের ব্যস্ততা আর নেই।
প্রবীণ কর্মকার স্বপন কর্মকার বলেন, প্রায় ৪৫ বছর ধরে এ পেশায় আছি। গত বছর যে পরিমাণ কাজ পেয়েছিলাম, এবার বলতে গেলে কাজই নেই। লোহা আর কয়লার দাম অনেক বেড়ে গেছে, তার উপর জিনিসপত্রের দাম ঠিক নেই, ফলে কাজ প্রায় বন্ধের মুখে। আরেকজন কর্মকার অনিল জানান, লোহার দাম, কয়লার দাম বেড়ে গেছে। ঠিকমতো পাওয়া যায় না। কাজেই গতবারের তুলনায় এবার কাজ অনেক কম।
বিকাশ কর্মকার বলেন, আমি দা, ছুরি, কাচি, কোদাল তৈরি করি। কিন্তু তুলনামূলকভাবে এবার কাজ অনেক কম। কয়লাও ঠিকভাবে পাওয়া যায় না। এই অবস্থায় কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, পণ্য তৈরি করাতে আসা স্থানীয় ক্রেতা শফিকুল ইসলাম জানান, আমি দা আর ছুরি বানানোর জন্য এসেছি কোরবানীর ঈদ সামনে রেখে। কিন্তু এখানে এসে দেখি আগের মতো ব্যস্ততা নেই। অল্প কিছু কাজ হচ্ছে, তাও চাপ একেবারেই কম।
সাধারণত ঈদুল আজহার আগে এক থেকে দেড় মাস সময় কর্মকারদের জন্য সবচেয়ে ব্যস্ত সময় হিসেবে বিবেচিত হলেও এবার সেই চিত্র দেখা যাচ্ছে না উল্লাপাড়ায়। কর্মকারদের মুখে এখন ভর করেছে দুশ্চিন্তা আর হতাশা।