॥ এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥
ত রুণদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দেন নোয়াখালী জেলার শ্রেষ্ঠ মৎস্য খামারি আলাউদ্দিন । তিনি বলেন, এতে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেকারদেরকেও কর্মসংস্থান করা যায়। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা যায়।। তাঁর মৎস্য চাষ প্রকল্পগুলোতে প্রায় ১০০ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন।
একটি সুন্দর, মনোরম ও প্রাকৃতিক সহজাত পরিবেশের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলারও পরিকল্পনা। বর্তমানে এখানে রয়েছে ১৪টি পুকুর। তাতে রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ। জীবন্ত মাছগুলো বিক্রয় করে উপার্জন করায় এ প্রকল্পের অর্থনৈতিক ভরসা। এমন অর্জনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে প্রায় শত পরিবারের।
এর মাধ্যমে তিনি প্রায় ৫০টি পরিবারের দায়িত্ব নিতে পেরেছেন। মাছ চাষের আয়ের টাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেয়ে পরে বেশ ভালোই আছেন।
খামার বাড়িতে একটি পরিকল্পিত দৃষ্টিনন্দন বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তার। যেখানে থাকবে রিসোর্ট সেন্টার সহ প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা। শুধু প্রয়োজন সরকারের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সাপোর্ট। নোয়াখালীর শ্রেষ্ঠ মৎস্য খামারি পুরস্কার প্রাপ্ত আলাউদ্দিনের খামার বাড়ির জীবন।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরের একটি বর্ণময় এলাকা। সরেজমিনে গেলে প্রাণ জুড়ায় যে কারোই। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকা প্রায় শত একর ভূমি লীজ নিয়ে একটি স্বপ্ন খামার গড়ে তোলেন তিনি। কিছু জমি কিনেছেন। আরো কিছু জমি কেনার ইচ্ছা আছে। তিনি মনে করেন খেয়ে পড়ে একা জীবন কাটানোর চেয়ে সবাইকে নিয়ে বেঁচে থাকার নাম জীবন। তিনি দেশের মানুষের জন্য দেশের উন্নয়নের জন্য কিছু কাজ করে যেতে চান। তিনি বছরের বেশির ভাগ সময় তার খামারে কৃষি কাজে ব্যায় করেন। একই সঙ্গে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াও করাচ্ছেন। গরিব-দুঃখী মানুষকে নিয়মিত সাহায্য-সহযোগিতা করছেন। মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন বৃত্তির। তাঁর উৎপাদিত রেণুপোনার মধ্যে জনস্বার্থে কিছু রেণুপোনা উন্মুক্ত জলাশয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন।

২০১৯ সালে এ স্বপ্নের বাস্তবতার যাত্রা শুরু হয়। এরপর কয়েক কোটি টাকার মূলধন খাটান এমন স্বপ্ন যাত্রায়। স্বপ্ন দেখেন, এখানে আরো বেশ কিছু উৎপাদনশীল কর্মকান্ডে হাত দেবেন তিনি। রয়েছে একটি সুন্দর, মনোরম ও প্রাকৃতিক সহজাত পরিবেশের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলারও পরিকল্পনা।
বর্তমানে এখানে রয়েছে ১৪টি পুকুর। তাতে রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ। জীবন্ত মাছগুলো বিক্রয় করে উপার্জন করায় এ প্রকল্পের অর্থনৈতিক ভরসা। এমন অর্জনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে প্রায় শত পরিবারের।
পুকুর পাড়ে রয়েছে শত-শত আম, লেবু, তাল, কলা, নারকেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছও। শুষ্ক মৌসুমে বাদাম, তরমুজসহ নানা ধরনের ফলজ উৎপাদনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের স্বত্বাধিকারী মো. আলা উদ্দিন জানান, তিনি পরিকল্পনা মোতাবেক এ খামারটি পরিচালনা করে বিগত বছর সফল মৎস্য খামারীদের তালিকায় জেলায় শ্রেষ্ঠ মৎস্য খামারীর পুরষ্কার লাখ করেছেন। তবে বিগত বন্যায় এ খামার থেকে বেশ কিছু মাছ সরে যাওয়ায় আর্থিকভাবেও ক্ষয়ক্ষতিরও শিকার হয়েছেন তিনি।
আলা উদ্দিন জানান, বর্তমানে আর্থিক দৈন্যতায় হিমশিম খাচ্ছেন। সরকারের যে কোন দপ্তরের যে কোন শর্তে আর্থিক সহায়তা পেলে অচিরেই এ খামারে গবাদী পশু, হাঁস, মোরগ, ছাগল পালনসহ আরো বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে তার। সরেজমিনে গেলে এখানকার কর্মচারীরা জানান, এ প্রকল্প গড়ে ওঠার ফলে তারা নিজেই এখানে কর্ম করতে পারছেন। এতে তারা নিজেদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মোটামুটি সুন্দর ও স্বচ্ছলভাবে জীবিকা ব্যয় নির্বাহও করতে পারছেন।
তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকার ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা এ খামারটির সার্বিক উন্নয়নে সর্বদাই সহযোগিতায় থাকবেন একাগ্র। আলা উদ্দিন বিশ্বাস করেন, তার প্রকল্প হতে উৎপাদিত মাছ দেশের আমিষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করেও বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন সম্ভব। তবে এ জন্যে তিনি সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে বলে শর্ত জুড়িয়ে দেন।
global sangbad 24 অনলাইন নিউজ পোর্টাল