Sunday , 15 June 2025
পর্যটক প্রবেশের অনুমতির দাবিতে মোংলায়  মানববন্ধন 

সুন্দরবনের করমজলে পর্যটক প্রবেশের অনুমতির দাবিতে মোংলায়  মানববন্ধন 

॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥

ডে   ভিজিটর সেন্টার সুন্দরবনের করমজলকে বন বিভাগের তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রেখে পর্যটক প্রবেশে অনুমতির  দাবিতে ১৫ জুন রবিবার সকালে মোংলার ফেরিঘাট এলকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সুন্দরবন ট্যুর অপারেটর, মোংলা বন্দর ডেনিস বডি মালিক সমবায় সমিতি, মোংলা বন্দর যন্ত্রচালিত মাঝি-মাল্লা সংঘ ও মোংলা বন্দর স্টিল লঞ্চ মালিক সমবায় সমিতির আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

 

 

 

করমজল যেহেতু সুন্দরবনের প্রবেশমুখে অবস্থিত এবং ডে ভিজিটর সেন্টার হওয়ায় এখানে রাতে অবস্থান করার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া এখানে ঘোরাঘুরির জন্য সাময়িক পাশ দেয়া হয় এবং বিকেল ৪টার পর কোন ভাবেই অবস্থান করা যায়না।

রবিবার সকাল ১১টায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মাঝিমাল্লা ইউনিয়নের নেতা মোঃ দেলোয়ার হোসেন। এসময়ে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোংলা নাগরিক সমাজের সভাপতি মোঃ নূর আলম, পর্যটন ব্যবসায়ী মোঃ আনিসুর রহমান, সুন্দরবন ট্যুর অপারেটরের তানজির  হোসেন রুবেল, এনামুল হুদা বুলবুল, শামস রুবেল, পর্যটন ব্যবসায়ী সাবেক কাউন্সিলর এম এ কাদের, সুন্দরবন ওয়াবদা পারাপার মাঝিমাল্লা সমিতির সভাপতি মোঃ বেল্লাল হোসেন, মাঝিমাল্লা ইউনিয়নের মোঃ সোহাগ, মোঃ মাসুদ রানা, মোংলা ট্যুর ব্যাবসায়ি মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ এমাদুল হাওলাদার, বাইজিদ বোস্তাবী, মোঃ সোহাগ  প্রমূখ।

মানববন্ধনে মোংলা নাগরিক সমাজের সভাপতি মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, বন বিভাগ প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস সুন্দরবন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সুন্দরবনে নদী খালে মাছ এবং বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ ও প্রজনন নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে সুন্দরবনে মাছ ধরা ও পর্যটক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুন্দরবন সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই, একই সাথে এই সিদ্ধান্তকে পুনঃবিবেচনা করার আবেদন জানাই। এই সিদ্ধান্তের ফলে করমজল পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে গড়ে ওঠা শত শত মাঝিমাল্লা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অভাবের তাড়নায় কর্মহীন এইসব মানুষেরা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া মোংলা এলাকার একমাত্র পর্যটন কেন্দ্র করমজলে প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়াতে পর্যটক, শিশু ও ভ্রমণপিপাসুরা নিরুপায় হয়ে পড়েছে।

করমজল যেহেতু সুন্দরবনের প্রবেশমুখে অবস্থিত এবং ডে ভিজিটর সেন্টার হওয়ায় এখানে রাতে অবস্থান করার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া এখানে ঘোরাঘুরির জন্য সাময়িক পাশ দেয়া হয় এবং বিকেল ৪টার পর কোন ভাবেই অবস্থান করা যায়না। নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে চিড়িয়াখানার আদলে গড়ে তোলা করমজলে পর্যটক আগমনে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ ও প্রজনন কাজে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা নাই বললে চলে।  তাই ডে ভিজিটর সেন্টার সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রকে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখতে হবে।

পরিবেশকর্মী মোঃ নূর আলম শেখ আরো বলেন করমজলে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে পর্যটন ব্যবসার সাথে যুক্ত মাঝিমাল্লাসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবন-জীবিকা রক্ষায় বিশেষ ভাতা/সহায়তা প্রদান করতে হবে। তিনি আরো বলেন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প’র উন্নয়ন ঘটাতে পর্যটন ব্যবসায়ীদের বিনাসুদে ব্যাংক ঋণ ও বিশেষ প্রণোদনা দিতে হবে।  সভাপতির বক্তব্যে মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন পরিবেশবান্ধব টেকসই পর্যটন শিল্প বিকাশে সরকারকে ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করতে হবে।

তিনি করমজলকে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখার দাবি জানিয়ে টেকসই পর্যটন শিল্প বিকাশ এবং এই শিল্পের সাথে যুক্ত মানুষে জীবন-জীবিকা রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানান। মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

Check Also

অস্ত্র-মাদকসহ সাতক্ষীরায় সাবেক এমপির পুত্র আটক

॥ সাতক্ষীরা  জেলা প্রতিনিধি ॥ সা তক্ষীরায় যৌথবাহিনীর অভিযানে মাদক ও অস্ত্রসহ সাবেক সংসদ সদস্য …