॥ আরিফুল ইসলাম আরিফ, তাড়াশ থেকে ॥
৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে চলে যায়। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম থুবড়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থাগিত হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সেবা প্রত্যাশীদের।
চেয়ারম্যান না থাকলেও রয়েছে আমাদের সরকারি চেয়ারম্যান। আগের তুলনায় আমরা এখন ভালো সেবা পাচ্ছি। আগে রাজনৈতিক চেয়ারম্যানদের সাথে কথায় বলায় যেতোনা তারা বিভিন্ন সময় জন্ম নিবন্ধন, বিভিন্ন ভাতা কার্ড সহ অনেক কাজেই আমাদের নিকট থেকে অবৈধ ভাবে টাকা হাতিয়ে নিত।
সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয় চিন্তা করে পরিষদের কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে নেয়া হয় এক কার্যকরি যুগোউপযোগী পদক্ষেপ। চেয়ারম্যানের দায়িত্বে নিয়োগ করা হয় উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তাদের। অন্যদিকে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ধামাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী মনোনীত চেয়ারম্যান রাইসুল ইসলাম সুমন।
তবে ৮ টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদ শুন্য থাকায় গত ২৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। প্রশাসক নিয়োগ দেয়ায় পর থুবড়ে পড়ে নামমাত্র প্যানেল চেয়ারম্যানদের। বন্ধ হয়ে যায় তাদের অবৈধ কর্যক্রম ও ধানাই পানায়।
সরজমিনে কয়েকটি পরিষদ ঘুরে দেখা যায় কোন প্রকার লেনদেন ছাড়ায় সেবা নিতে আসা গ্রাহকেরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিতে পারছেন। অন্য দিকে নাম মাত্র প্যানেল চেয়ারম্যানরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের পদ বঞ্চিত হয়ে মহামান্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
সেই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের ১নং বেঞ্চের বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি রাশিদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গত ১১ডিসেম্বরে প্রশাসকদের দায়িত্ব স্থগিত নির্দেশ দেন। সেই রায়েয় বিরুদ্ধে আপিল করেন উপজেলা প্রশাসন। আপিল চলমান রয়েছে মর্মে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসকরা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেই জনমনে আলোচনায় উঠে এসেছেন।
সেবা নিতে আসা পাঙ্গাসী ইউনিয়নের বাসিন্দা কালাম,মিনহাজ ছাবিনা জানান, আমরা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের কাছে এসেছি জন্ম ও মৃত্যু সনদ নেওয়ার জন্য। দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিব মহোদয় সনদ দেয়, স্বাক্ষর করেন দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসক উপজেলা বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী আনন্দ কুমার বর্মন । তিনি আন্তরিকতার সাথে আমাদের কাজ করে দেন। তবে স্বাক্ষরের জন্য মাঝে মধ্যে উপজেলায় আসতে হয়।
ধানগড়া ও চান্দাইকোনা ইউনিয়নের আছমা, মেনহাজ, আলহাজ ফরিদা, রমেনা মাসুদ , আমাদের কে জানান, চেয়ারম্যান না থাকলেও রয়েছে আমাদের সরকারি চেয়ারম্যান। আগের তুলনায় আমরা এখন ভালো সেবা পাচ্ছি। আগে রাজনৈতিক চেয়ারম্যানদের সাথে কথায় বলায় যেতোনা তারা বিভিন্ন সময় জন্ম নিবন্ধন, বিভিন্ন ভাতা কার্ড সহ অনেক কাজেই আমাদের নিকট থেকে অবৈধ ভাবে টাকা হাতিয়ে নিত।
ধুবিল ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসক উপজেলা শিক্ষা অফিসার আপেল মাহমুদ বলেন, আমরা সরকারের কর্মকর্তা। তাই সরকারের দেয়া দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া কোন উপায় নেই। আমি ধুবিল ইউনিয়নে সকল স্তরের মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছাতে সর্বক্ষণ চেষ্টা করছি।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ন কবির আমাদের গ্লোবাল সংবাদ কে বলেন, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে পরিপত্র অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকেরা তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করে চলছে।