Thursday , 21 November 2024

উল্লাপাড়ায় বংশীয় পেশা হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ-বেত শিল্প, দুর্দিনে শিল্পীরা

॥ এ আর রাজু, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় একসময় গৃহস্থালির বেশিরভাগ জিনিসপত্র তৈরি করা হতো বাঁশ, বেত কিংবা কাঠে। সময়ের পরিবর্তনে বাঁশ ও বেত শিল্পের জায়গা দখল করেছে প্লাস্টিক। প্লাস্টিকের ভিড়ে হারাতে বসেছে বাঙালির ঐতিহ্য বাশঁ ও বেত শিল্প।

 

এসব আসবাব পত্রের কদরও ছিল আলাদা। সবকিছুতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ায় দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ বেতের শিল্প, আর্থিক সংকটে শিল্পীরা।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালী ও সখের পণ্য সামগ্রী। বাড়ির কাছে ঝাড় থেকে বাঁশ ও বেত কেটে গৃহিণীরা তৈরি করতেন হরেক রকম পণ্য। এসব বিক্রি করেই চলতো তাদের জীবন। তবে তা ক্রমেই হারিয়ে যেতে বসেছে।

বেতের দাম বেশি হওয়ায় এবং সামগ্রিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় একদিকে সঙ্কটে পড়েছেন কারিগররা। অপরদিকে আর এ সঙ্কটের কারণে মানুষ হারাতে বসেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য।

বাঁশ ও বেতজাত শিল্পীদের তৈরি চাটাই, খালই, টোনা, টুপড়ি, টোপা, বুকসেলফ, কুলা, দাড়িপাল্লা,পলো, মোড়া, খাদী, ঝাড়নী, চালন, চেয়ার, ঝাঁকা ইত্যাদি পণ্য কিছুটা চোখে পড়ে। যতই দিন যাচ্ছে ততই কমে যাচ্ছে এই হস্তশিল্প।

সুভাস চন্দ্র দাস বলেন, এখন এসব পণ্য বিভিন্ন হাট-বাজারে ফেরি করে বিক্রি করতে হয়। আগের মতো আর লাভ হয় না। এই বাঁশ শিল্প টিকে রাখতে সরকারিভাবে যদি কোন সহযোগিতা করে তাহলে এ শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে তারা জানান।

সুনীল চন্দ্র দাস জানান, হাতেগোনা কিছু সংখ্যক পরিবার বেত শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছে। অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য কাজে গেলেও অনেকেই এই বংশীয় পেশা ছাড়তে পারেনি। গ্রামগঞ্জে ঘোরাফেরা করে এই পণ্য বিক্রি করতে হয়। সারা দিনে যা বিক্রি হয় তা দিয়ে সংসারের জন্য বাজার করে কোনোমতে টিকে আছেন তারা।

শ্রীমতি আশা রানী দাস বলেন, আগে খুব ভালভাবে সংসার চলতো এখন আর চলার মত পথ নাই এই কাজ দিয়ে সংসার পরিবার পরিজন নিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বেতের দাম বেশি হওয়ায় এবং সামগ্রিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় একদিকে সঙ্কটে পড়েছেন কারিগররা। অপরদিকে আর এ সঙ্কটের কারণে মানুষ হারাতে বসেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য।

উল্লাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব জানান, বাঁশ ও বেতশিল্পের চাহিদা কমে যাওয়ায় এ উপর নির্ভরশীল বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণসহ এককালীন অনুদান দেয়া হয়েছিল। বর্তমান প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। পরবর্তীতে নতুন প্রকল্প এলে তাদের নতুন করে সহায়তা দেয়া হবে।

Check Also

মোংলায় রান্না ঘর থেকে আগুনে পুরলো দিন মজুরের মাথা গোজার ঠাই

॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥ মোংলায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে এক দিন মজুরের …