॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বন্ধু প্রতিম দেশ ভারত যদি তাদের বন্দর ব্যাবহার করতে দেয় তা নেপাল ও ভুটান সাথে ট্রানজি সুবিদা তৈরী হলে মোংলা বন্দরকে একটি আন্তর্জাতিক বন্দরে রুপান্তিত করা সম্ভব। মোংলা বন্দরের সাথে আমরা আখাউড়া ও সিলেটে দুটি স্থল বন্দর সচল করতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে চিনা কোম্পানীর সাথে “এল ও সি-৩ এর জি টু জি প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মোংলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় এ সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দুরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার।
প্রাথমিক কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়। যা শুরু থেকে আগামী দুই বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে। ফলে ‘মোংলা বন্দর হবে আন্তজার্তক বাজারে বিশ্বমানের নিরাপদ আধুনিক ও স্মার্ট সমুদ্রবন্দর। মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় মোংলা বন্দরের নৌ-চ্যানেল ও জেটি পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
৬ নভেম্বর সকাল ১১টায় বন্দর এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা, ফিল্ড, ও জেটির বিভিন্ন সেট পরিদর্শন করেণ। এর আগে সকাল ১০ টায় বন্দরের উর্ধতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে মতোবিনিময় করেণ তিনি। এ মতোবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেণ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান।
মোংলা বন্দরের কনফারেন্স রুমে বন্দরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে উপদেষ্টাকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভায় বন্দরের ড্রেজিং কার্যক্রম, উন্নয়ন প্রকল্প, জাহাজ, কার্গো, কন্টেইনার, গাড়ি আমদানির বাৎষরিক হিসাব ও বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমের উপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেয়া হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন), বিভাগীয় প্রধানগন, উপদেষ্টার সফরসঙ্গী এবং বন্দরের অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগন এসময় উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিং ও মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
আলোচনা সভার পরে মোংলা বন্দর পরিদর্শনের অংশ হিসেবে পশুর চ্যানেলের বিভিন্ন স্পট পরিদর্শন করেন, এছাড়াও ভিটিএমআইএস (মোংলা), ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এরিয়া ও স্থায়ী বন্দর জেটি এলাকা ঘুরে দেখেন।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মোংলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় এ সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দুরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। একই সাথে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে কন্টেইনার টার্মিনাল ও ইয়ার্ডসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে।
এর ফলে চট্রগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে এবং মানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ভারত, নেপাল ও ভূটানের জন্য এই বন্দরটি ব্যবহারের উপযোগী হবে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টা এসময় খুলনা ও যশোরের বন্ধ ৫টি পাটকল চালুর জন্য চায়না ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ইজারা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
এর আগে নৌ পরিবহন এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তাদের সাথে বন্দরের ড্রেজিং ও উন্নয়ন প্রকল্প, জাহাজ, কন্টেইনার এবং গাড়ি আমদানির বাৎষরিক হিসাব নিয়ে মত বিনিময়সহ বন্দরের পশুর চ্যানেল ও জেটি এলাকা পরিদর্শন করেন।
এছাড়া এ বন্দরটি এতাই গুরুত্বপুর্ন যে মোংলা বন্দরটির সাথে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। সুতরাং এ বন্দরটিকে পিছিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই। মোংলা বন্দরকে আরো আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে ও কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে।
তবে একটি কাজ দ্রুত করলে মোংলা বন্দরের সুযোগ সুবিধা কতটুকু তা প্রকাশ পাবে, তা হলো আন্তজার্তিকভাবে এ বন্দও নিয়ে প্রচারনা। বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল ব্যাবসাযীদের বন্দরের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে, আমদানী-রপ্তানীকারক ব্যাবসাযীদের আহবান জানাতে হবে এ বন্দর ব্যাবহার করার জন্য। তা হলেই মোংলা বন্দও হবে একটি বিশ^মানের মানের আধুনিক ও আন্তজাতিক মানের সমুদ্র বন্দর। ###