Sunday , 13 July 2025

কলারোয়ার হাজী নাছির উদ্দীন কলেজ প্রতিহিংসাপরায়ন শিক্ষক সিন্ডিকেটের কবলে দিশেহারা শিক্ষক রবিউল

॥ মনিরুজ্জামান মনি, সাতক্ষীরা জেলা  প্রতিনিধি ॥

সাধু ও প্রতিহিংসাপরায়ন শিক্ষক সিন্ডিকেটের কবলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কলারোয়ার হাজী নাছির উদ্দীন কলেজের এক শিক্ষক। এখতিয়ার না থাকলেও অবৈধভাবে সহকারী অধ্যাপকের পদ থেকে পদাবনতি করিয়ে প্রভাষক পদে চাকরি করতে বাধ্য করা হয় ওই শিক্ষককে। একাধিবার চেষ্টাও করা হয়েছে বরখাস্ত করার।

বরকত আলীর নিয়োগ প্রক্সির মাধ্যমে হয়েছে যা ডি আই এ এর এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের রিপোর্টে প্রমানিত। মন্ত্রণালয়ের পুনঃতদন্তের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক তার যোগদান পত্রটিও তার হাতের লেখা নয় মর্মে বিগত-০৮/১০/২০১৭ ইং তারিখ রিপোর্ট প্রদান করেন। মোঃ বরকত আলীর যোগদান পত্র ও নিয়োগ পরীক্ষার লিখিত খাতায় হাতের লেখা এক নয় মর্মে রিপোর্টে প্রমাণিত হয়।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম কলারোয়া হাজী নাছির উদ্দীন কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। বিগত ৪ বছর ধরে নির্মম এই অত্যাচারের শিকার হয়ে আসলেও কোন প্রতিকার পাননি বলে দাবি করেন তিনি। চলতি বছরের ২ ফেব্রæয়ারি ন্যায় বিচার চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে একটি প্রতিনিধি দল তদন্ত সম্পন্নও করেছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রবিউল ইসলাম হাজী নাছির উদ্দীন কলেজে ২০১০ সালে তৎকালিন বৈধ কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে রেজুরেশনের মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।

২০২১ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক হিসাবে প্রায় সাড়ে এগারো বছর ধরে সরকারি পূর্ণ বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করে আসার পরে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক স্ট্যাটাসকো সত্তে¡ও পদ অবনতি করা হয়েছে। কিন্তু ২০২১ সালে রবিউল ইসলাম ও সাচিবিক বিদ্যার সহকারী অধ্যাপক বরকত আলীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সাল থেকে শারিরীকভাবে অক্ষম আব্দুস সবুরকে দিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। শিক্ষক আব্দুস সবুর চলাফেরা করতে পারে না এমনকি কথাও বলতে পারে না।

উক্ত বিষয়ে মাউশি ঢাকা এর স্মারক নং-৩৭০২০০০০১০৫১২০০৫.২০২৩০, তারিখ ২৩ জুলাই ২০২০ এর পত্র মোতাবেক মাউশি খুলনা অঞ্চল স্মারক নং ৩৭.০২.৪৭০০ .০০.০১.০০১.১৭.৬৪৬ তারিখের পত্রের আলোকে মো: ইনামুল ইসলাম সহকারী পরিচালক, ওই বছর ২৯ জুলাই সকাল ১০টায় আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ে শুনানির জন্য উপস্থিত হই। কিন্তু উক্ত শুনানিতে আব্দুস সবুর অনুপস্থিত থাকা সত্তে¡ও শুনানি শেষে অবৈধভাবে সহকারী অধ্যাপক থেকে প্রভাষকের পদে সুপারিশ করেন। কিন্তু একই অভিযোগে অভিযুক্ত মো: বরকত আলীকে নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে স্বপদে বহাল রাখেন। অথচ বরকত আলীর নিয়োগ প্রক্সির মাধ্যমে হয়েছে যা ডি আই এ এর এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের রিপোর্টে প্রমানিত। মন্ত্রণালয়ের পুনঃতদন্তের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক তার যোগদান পত্রটিও তার হাতের লেখা নয় মর্মে বিগত-০৮/১০/২০১৭ ইং তারিখ রিপোর্ট প্রদান করেন। মোঃ বরকত আলীর যোগদান পত্র ও নিয়োগ পরীক্ষার লিখিত খাতায় হাতের লেখা এক নয় মর্মে রিপোর্টে প্রমাণিত হয়।

এদিকে, কলেজের অসাধু শিক্ষক সিন্ডিকেটের প্ররোচনায় শারিরীক ও মানসিকভাবে একেবারে অক্ষম শিক্ষক আব্দুস সবুরকে সহকারী অধ্যাপক প্রদানের সুপারিশ করা হয়। অথচ তার পক্ষে ক্লাস নেওয়া একেবারেই অসম্ভব। অসুস্থ্যতার কারনে এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন কলেজেও আসেন না। উক্ত রিটের বিরুদ্ধে রবিউল ইসলাম হাইকোর্টে আপিল করলে ১৭ আগস্ট ২০২১ তারিখে তাকে স্বপদে বহাল রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু কলেজের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাইকোর্টের সে নির্দেশ অমান্য করে অবৈধ ভাবেই রবিউল ইসলামকে সহকারী অধ্যাপক পদ থেকে অপসারন করে প্রভাষক পদে রেখেছেন। অন্যদিকে, কলেজের ওই অসাধু সিন্ডিকেটটি শিক্ষক আব্দুস সবুরের অসুস্থ্যতাকে মানবিক কারণ দেখিয়ে ওই পদে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এবিষয়ে কলেজের বর্তমান সভাপতি সালাউদ্দিন পারভেজ বলেন, রবিউল ইসলাম নি:সন্দেহে একজন ভালো শিক্ষক। কিন্তু তার সিনিয়র স্কেলের বিষয়টি বেশ জটিল। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। ইতোমধ্যে একটি তদন্তও সম্পন্ন হয়েছে। দেখা যাক কি করা যায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনার পরিচালক প্রফেসর ড. আনিস আর রেজা বলেন, আমরা তদন্ত সম্পন্ন করেছি। কিছু সত্যতা আমরা পেয়েছি। কিন্তু তারপরও কলেজের ভেতরে অনেক সমস্যা রয়েছে। যাই হোক ন্যায় বিচার নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি।

Check Also

ছোনকা দি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে অনুষ্ঠিত হলো স্বাস্থ্য শিক্ষা ও কুইজ প্রতিযোগিতা:

॥ শেরপুর (বগুড়া) উপজেলা  প্রতিনিধি ॥ বাঁ চতে হলে জানতে হবে, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে- …