॥ আবুল হোসেন, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি ॥
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সি বাজার এলাকায় ভয়াবহ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী সোমবার (৭ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে নদীর পাড়ে মানববন্ধন রচনা করে।মানববন্ধন হতে তারা অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেইসাথে ভাঙন প্রতিরোধে আগামি ২৪ ঘন্টার মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা না নিলে মহাসড়ক অবরোধসহ অনশন কর্মসূচি গ্রহণের ঘোষনা দেয়া হয়।
নদীতে প্রায় ৪ টি মৌজার ৪০ বিঘা জমি ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেউ আমাদের কোন ব্যবস্থা করেনি। ভাঙন দেখা দিলে জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন নেতাকে দেখা যায়। শুকনো মৌসুমে কাউকে দেখা যায় না।
সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, গত ৪ দিন ধরে দেবগ্রামের মন্সি বাজার এলাকায় নদী ভাঙ্গন চলছে। ভাঙনে ইতিমধ্যে ১০ টি পরিবারের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আতঙ্কে ৬/৭ টি পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙ্গে অনত্র সরিয়ে নিয়েছেন। আরো অনেকে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দেবগ্রামের নদী পাড়ের সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সী বাজার, কাওয়ালজানী এলাকার সাধারন জনগন ও ঝুঁকির মুখে থাকা দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক -শিক্ষার্থীসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন।
মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্হানীয় বাসিন্দা ডাঃ আবুল হোসেন,
জামাল মুন্সি, গফুর আলী শেখ, মাজেদ সরদার, কেছমত মোল্লা, মোহন শেখ, মো. ফরহাদ খান, ফেলি বেগম, কমেলা বেগমসহ অনেকেই।
তারা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা প্রত্যেকে ৪/৫ বারের বেশি ভাঙনের শিকার হয়েছি । এবার ভেঙে গেলে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। অচিরেই নদী ভাঙন রোধ করা না হলে আমাদের বসত-বাড়ী, তিন ফসলী জমি, স্হানীয় দুইটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
দেবগ্রাম মুন্সী পাড়া এলাকার বাসিন্দা জামাল মুন্সী বলেন, বিগত ১৫/১৬ বছর আওয়ামী লীগ শাষনামলে রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী ভাঙন প্রতিরোধে কিছুই করেননি। তিনি শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন।
আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নদী ভাঙন প্রতিরোধে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় মহাসড়ক অবরোধসহ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।
নদীর নিকটবর্তী কুশাহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছরে এই এলাকায় তেমন ভাঙেনি। হঠাৎ চারদিন ধরে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। এ নদীতে প্রায় ৪ টি মৌজার ৪০ বিঘা জমি ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেউ আমাদের কোন ব্যবস্থা করেনি। ভাঙন দেখা দিলে জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন নেতাকে দেখা যায়। শুকনো মৌসুমে কাউকে দেখা যায় না।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ভাঙনের খবর শোনা মাত্রই আমি ভাঙন কবলিত স্থানগুলো পরিদর্শন করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অনেক ফসলী জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আমি উদ্ধর্তন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি।