Friday , 27 June 2025

নোয়াখালীর বিএনপির ইতিহাসে মোঃ শাহজাহান এক অবিসংবাদিত নেতা

॥ এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥

য়সের সত্তর পেরিয়ে। মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা ভারাক্রান্ত এ বয়সেও বীরদর্পে অবতীর্ণ হন নিজ জেলায়। বিএনপির নেতাকর্মীর জন্য আমৃত্যু শ্রম আর ভালবাসা দিতে চান। তাইতো লক্ষ লক্ষ মানুষের অস্রুসিক্ত ভালবাসায় সিক্ত হলেন নোয়াখালী ৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের ৪ বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: শাহজাহান। যাকে মার্জিত রাজনীতির বরপুত্র হিসেবে উপাধিতে ভুষিত করেন দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনতা।

 

এরপর তিনি একই আসন থেকে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে একই আসনে তিনি গনতন্ত্র হরনকারী, জোরপুর্বক ব্যলট বাক্সে সিলে মেরে পলাতক স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সন্ত্রাসী গড়ফাদার মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী তাকে পরাজিত করেন।

মোঃ শাহজাহান ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাকালীন রাষ্ট্রপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। তিনি বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব, বর্তমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের দল পূর্নগঠনের সাবেক সমন্বয়ক। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বুধবার (২৫ জুন) দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে নিজ এলাকা ও জন্মভুমি নোয়াখালীতে এসে গণমানুষের ভালবাসায় এক বিরল সংবর্ধনা পান তিনি। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের বাধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস আর শ্লোগানে মুখরিত ছিল জেলা শহর মাইজদী। নিজ জেলায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে নেতা কর্মীদের আবেগঘন পরিবেশে ফুলের শুভেচ্ছা গ্রহন করেন এ নেতা। তখন নিজেও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। পথসভায় তিনি ওয়াদা করেন আমৃত্যু সদর-সুবর্ণচরবাসির সাথে আছেন। তাদের ছেড়ে যাবেন না। দল ও জনগনের কল্যানে নিজেকে নিয়জিত রাখবেন।

জানা যায়, মো:শাহজাহান দীর্ঘদিন ধরে লিভার সমস্যায় ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি থাইল্যান্ডের ব্যংকক হাসপাতালে সফল অস্র প্রচার ও ফলোআপ শেষে সুস্থ হয়ে নেতাকর্মী ও স্বজনদের মাঝে ফিরে আসেন ।

এদিকে প্রিয় নেতাকে একনজর দেখতে এবং তাঁকে স্বাগত জানাতে দুপুর থেকেই সদর-সুবর্ণচরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার,ফেষ্টুন হাতে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মী এসে জড়ো হন জেলা শহর মাইজদীতে। একাধিক জায়গায় মিছিল, শোভাযাত্রা,গান বাজনা পুরো শহর একটা আনন্দঘন ও উৎসবমুখর হয়ে উঠে। শহরের ব্যবসায়ী, পাশ্ববর্তী বাসাবাড়ি থেকে নারী, পুরুষ উৎসুক দৃষ্টিতে প্রিয় নেতার সুস্থ হয়ে ফিরে আসা দেখতে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় ছিলেন।

তিনি ১৯৯১ সনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ (সুবর্ণচর-নোয়াখালী সদর) আসন থেকে প্রথম বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি একই আসন থেকে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে একই আসনে তিনি গনতন্ত্র হরনকারী, জোরপুর্বক ব্যলট বাক্সে সিলে মেরে পলাতক স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সন্ত্রাসী গড়ফাদার মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী তাকে পরাজিত করেন।

এদিন বিকেলে চৌমুহনী চৌরাস্তা ফুলের শুভেচ্ছা জানান বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মীরা। নোয়াখালী মাইজদীতে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা প্রিয় নেতার বক্তব্য শুনার জন্য রাত পযর্ন্ত অপেক্ষা করেন ।

জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য এডভোকেট আবদুর রহমান জানান, প্রিয় নেতা শাহজাহান ভাই শুধু সদর -সুবর্ণচর নয় বৃহত্তর নোয়াখালী, লক্ষীপুর,ফেনী জেলার বিএনপির তথা সংগঠনের প্রান পুরুষ। যার মেধা, প্রজ্ঞা আর দুরদর্শীতায় তিনি জেলার রাজনীতির সংগঠন গুছিয়ে জাতীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। তিনি দেশ নেত্রী সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার আস্থাভাজন। তিনি যখন মাইজদির রাস্তায় হাঁটতে থাকেন চারদিক থেকে লোকজন জমে যায়। তাঁকে বড্ড ভালবাসে নোয়াখালীর মানুষ। রশিদ কলোনির পুরনো সোফায় সাদা পায়জামা, পাঞ্জাবিতে মিষ্টি হাসিতে তিনি লোকেদের আপ্যায়ন করেন। আবার হঠাৎ ছুটে চলেন বৃদ্ধ মায়ের খবর নিতে। । রাতেই হয়তো ঢাকায়, পরের দিন সুবর্ণচর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তাঁর কর্মীর খোঁজ খবর তিনিই নেবেন। মানুষের প্রতি নিখুঁত দরদ না থাকলে একাধিকবার করোনায় আক্রান্ত হয়েও তিনি ক্ষান্ত হননি।

সাবেক তুখোড় পৌর ছাত্রদল সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ওমর ফারুক টপি বলেন, শাহজাহান ভাই শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনিই একমাত্র নোয়াখালী বিএনপির একমাত্র অভিভাবক। তার ফেরার মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তিনি জিয়ার আদর্শের সূর্যসেনানি৷ সর্বমহলে শ্রদ্ধাস্পদ। তিনি লড়াকু সৈনিক। দুঃসময়ে জিয়া পরিবারের বিশ্বস্ত সিপাহসালা।

তার দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের ষড়যন্ত্রকারীরা কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। পারবেনওনা। তিনি তার সুদীর্ঘ পরিকল্পনার এগিয়ে যান প্রত্যাশিত গন্তব্যে। গ্রহন করেন দৃঢ় ও দৃপ্ত পদক্ষেপ। বিগত দিনে স্বৈরাচারেরা নোয়াখালীতে জাতীয়তাবাদের পতাকাকে ঢেকে দিতে চেয়েছিল। তার নেতৃত্বে আগামী দিনে সে পতাকা উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে ইনশাআল্লাহ ।

নোয়াখালী জেলার রাজনীতিতে মোঃ শাহজাহান অবিস্মরণীয় এক নাম। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একবারের জন্যও বিতর্কিত কোনো মন্তব্য বা বক্তব্যের জন্য তিনি সমালোচিত হননি। নিজের নামকে বড় করার, ফুলিয়ে তোলার অভ্যাস নেই তাঁর। তিনি মিডিয়ায় স্ট্যান্টবাজি এড়িয়ে চলেন। আত্মপ্রচারে তিনি অনীহ। দলের দীর্ঘদিনের জেলার কাণ্ডারি থেকেছেন। অতঃপর ধাপে ধাপে জাতীয় পর্যায়ে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু চাপাবাজি, ধান্দাবাজি করেননি। একসময় তাঁর স্বাক্ষরে ধানের শীষ নির্ধারিত হয়েছে কিন্তু সেটাকে পুঁজি করে দেমাগ প্রদর্শন করেননি। বরাবরই লোকচক্ষুর আড়ালে সুন্দর নিটোল ও ভদ্রজনচিত রাজনীতিকে আশ্রয় হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

Check Also

সিরাজগঞ্জে বিশ্বপরিবেশ দিবসের আলোচনা প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে নিবিড় সম্পর্ক সেমিনার অনুষ্ঠিত:

॥ শাহ আলম, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ॥ মা নুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি …