॥ এম আরিফুল ইসলাম, সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥
সি রাজগঞ্জ ডিবি কর্তৃক সলঙ্গা থানা এলাকার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস গরু ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ শেখ (খতিব)’কে হত্যার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত ০৪ জন আসামী গ্রেফতার।
ফুলজোর নদীতে নৌকায় করে হেচারির মাছ বিক্রয় করতে নিয়ে যাওয়ার সময় সলঙ্গা থানাধীন চর ফরিদপুর গ্রামস্থ ফুলজোর নদীর খাড়াঘাট নামক স্থানে নদীর পানিতে ভাসমান হাত, পা এবং কোমরে ইট বাঁধা অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় এবং লাশটি ডিসিষ্ট আব্দুল লতিফ শেখ এর লাশ বলে ধারনা করে।
পুলিশ জানায়, ডিসিষ্ট আব্দুল লতিফ শেখ (খতিব)(৪০), পিতা-মোঃ আমিনুর ইসলাম, সাং-চর ফরিদপুর, থানা-সলঙ্গা, জেলা-সিরাজগঞ্জ একজন গরুর ব্যবসায়ী।
গত ০৯/১১/২০২৫ খ্রিঃ বিকাল অনুমান ০৫.৩০ ঘটিকার সময় বাজার করে তার বাবাকে বাজার নিয়ে যাওয়ার জন্য মোবাইলে কল করেন এবং তার বাবা বাজার নিয়ে বাড়ীতে যায়। আব্দুল লতিফ দীর্ঘক্ষণ পার হলেও বাড়ীতে না ফেরায় তার বাবাসহ পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায়, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ীতে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে। এমতাবস্থায় ১২/১১/২০২৫ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৭.৩০ ঘটিকার সময় ডিসিষ্টের মামা জনৈক মোঃ ফরিদুল ইসলাম ও মোঃ জেলহাক ফুলজোর নদীতে নৌকায় করে হেচারির মাছ বিক্রয় করতে নিয়ে যাওয়ার সময় সলঙ্গা থানাধীন চর ফরিদপুর গ্রামস্থ ফুলজোর নদীর খাড়াঘাট নামক স্থানে নদীর পানিতে ভাসমান হাত, পা এবং কোমরে ইট বাঁধা অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় এবং লাশটি ডিসিষ্ট আব্দুল লতিফ শেখ এর লাশ বলে ধারনা করে।
তাৎক্ষণিক ডিসিষ্টের পরিবারকে সংবাদ দিলে পরিবারের লোকজনসহ আত্মীয়-স্বজন ঘটনাস্থলে এসে ডিসিষ্ট আব্দুল লতিফ শেখ এর লাশ বলে সনাক্ত করেন। এ সংক্রান্তে সলঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ফারুক হোসেন মহোদয় নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে, জনাব মোঃ হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এ্যান্ড অপস্) এর নেতৃত্বে জনাব সাইফুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, রায়গঞ্জ সার্কেল, সিরাজগঞ্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ জনাব আবু সিদ্দিক এর তত্বাবধানে ডিবির এসআই(নিঃ)/মোঃ নাজমুল হক, বিপিএম, এসআই(নিঃ)/মোঃ রায়হান আলী, এসআই(নিঃ)/অনুপ কুমার সরকার, এসআই(নিঃ)/জাকারিয়া আল জারজীস, এসআই(নিঃ)/মোঃ শারফুল ইসলাম, এসআই(নিঃ)/রায়হান মোহাম্মদ হৃদয়, এএসআই(নিঃ)/মোঃ আব্দুল জলিল প্রামানিক, এএসআই(নিঃ)/মোঃ আরিফুর রহমান, এএসআই(নিঃ)/বৃন্দাবন রায়সহ সঙ্গীয় ফোর্সের একটি চৌকস টিম গঠন করেন। চৌকস টিমটি তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সহিত জড়িত আসামীদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন ১। মোঃ মাসুদ রানা (৩৮), পিতা-মোঃ আঃ গফুর শেখ, সাং- চর ফরিদপুর, থানা-সলঙ্গা, জেলা-সিরাজগঞ্জ, ২। মোঃ ফরিদুল ইসলাম (৪২), পিতা-মোঃ আঃ মান্নান মন্ডল, স্থায়ী সাং- রয়হাটি দক্ষিনপাড়া, বর্তমান সাং-চর ফরিদপুর, থানা-সলঙ্গা, জেলা-সিরাজগঞ্জদ্বয়কে ১৭/১১/২০২৫ খ্রিঃ সময় ১৭.৪০ ঘটিকায় সলঙ্গা থানাধীন চর ফরিদপুর সাকিনে ২নং আসামীর নিজস্ব চায়ের দোকান হতে ও আসামী ৩। মোছাঃ শাহিনুর খাতুন (৪০), স্বামী-মোঃ মতিউর রহমান মতি, সাং-চর ফরিদপুর, থানা-সলঙ্গা, জেলা-সিরাজগঞ্জ’কে ১৭/১১/২০২৫ খ্রিঃ সময় ১৮.৪০ ঘটিকায় আসামীর নিজ বসত বাড়ী হতে এবং আসামী ৪। মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪০), পিতা-মৃত মন্তাজ আলী, সাং-দোস্তপাড়া, থানা-রায়গঞ্জ, জেলা-সিরাজগঞ্জকে ১৭/১১/২০২৫ খ্রিঃ সময় ১৮.৫০ ঘটিকায় সলঙ্গা থানাধীন চর ফরিদপুর সাকিনে তার শ্বশুড় মামলার বাদী মোঃ আমিনুর ইসলাম এর বসত বাড়ী হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামীগণসহ জড়িত অন্যান্য আসামীগণ টাকা দেনা-পাওনাকে কেন্দ্র করে ডিসিষ্ট আব্দুল লতিফ শেখ (খতিব)’কে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং ঘটনার দিন ডিসিষ্টের চাচাতো ভাইয়ের বউ আসামী মোছাঃ শাহিনুর ডিসিষ্ট খতিবকে নদীর ঘাটে ডাকে। খতিবের সাথে তার সম্পর্ক ছিল, সে জন্য সে ডাকতেই ডিসিষ্ট ঘটনাস্থলে চলে আসে। অন্যান্য আসামীগণ আগে থেকেই নদীর ঘাটে অবস্থান করছিল।
সেখানে খতিব আসলে আসামী শাহিনুর খতিবকে আগে থেকে ঘুমের ঔষধ মিশানো স্পিড (এনার্জি ড্রিংক) খেতে দেয় এবং খতিব খেয়ে ঝিমিয়ে পরে। তখন গ্রেফতারকৃত আসামীগণসহ অন্যান্য আসামীগণ ডিসিষ্ট খতিব এর গায়ে থাকা চাদর দিয়ে ডিসিষ্টের গলায় মোড়ন দিয়ে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে সকল আসামীগণ ডিসিষ্টের হাত-পায়ে ইট বেঁধে নৌকায় করে নিয়ে ফুলজোর নদীতে ফেলে দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামীগণ নিজেদের সম্পৃক্ততাসহ ঘটনার বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় এবং গ্রেফতারকৃত ০৪ জন আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
global sangbad 24 অনলাইন নিউজ পোর্টাল