॥ বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥
কি তারাবি কি ইফতার, অস্বাভাবিক তাপদাহের মধ্যেই মোংলায় শুরু হয়েছে যখন তখন লোডশেডিং। একদিকে অসহ্য গরমে হাঁসফাঁস জীবন, তার ওপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে পরিস্থিতি চরম আকারে ধারন করেছে। দিনে চার থেকে পাঁচ বার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করছে। রুটিন মেনে লোডশেডিংয়ের নিয়ম আর মানা হচ্ছেনা। এর মধ্যে আবার শহরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় মাক্রোসার জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে বিদ্যুতের তার। নতুন এই সৃষ্ট সমস্যায় চলাচলের অসুবিধাসহ ঝুঁকি আর আতংক দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে রাস্তায় ফেলা তার ছিটানোর বিষয় নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে-উন্নয়ন কাজ চলছে তাই সাময়িক ভোগান্তি।
এদিকে রাস্তায় মাক্রোসার মত তার বিছানোর মত ভোগান্তির চেয়ে রমজানের শুরু থেকে সাধারণ মানুষকে বড় সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে যখন তখন লোডশেডিং। ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে অত্যাধিক গরমের কারণে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ঘটছে ব্যঘাত।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শহরের প্রাণ কেন্দ্র শেখ আব্দুল হাই সড়ক, বিএলএস রোড, এন জে ষ্টোর মোড় ও চৌধুরী মোড়ের রাস্তার ওপর তার বিছানো দেখে হঠাৎ ভিভ্রান্তিতে পড়ে গেছেন সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের তার দেখে রাস্তায় আর পা ফেলতে সাহস পাচ্ছেন না তারা। রিজেকশন গলির ব্যবসায়ী মোঃ শামসুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাজার করতে যাচ্ছিলাম, এরমধ্যে রাস্তার ওপর জালের মত বিদ্যুতের তার বিছানো দেখে ভয় পেয়েছি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় কিনা তাই। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের এমন কান্ডে তাদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন বললেন এই ব্যবসায়ী। এভাবে অনেক পথচারীরা এদিন অভিযোগ করে আরও বলেন, রাতের বেলায় রাস্তা ফাঁকা হলে এসব কাজ করা যেত। তা না করে বিদ্যুৎ বিভাগ জনমনে আতংক ঢুকিয়ে দিতে তাদেরকে চরম ভোগান্তিতে ফেলছেন।
এদিকে রাস্তায় মাক্রোসার মত তার বিছানোর মত ভোগান্তির চেয়ে রমজানের শুরু থেকে সাধারণ মানুষকে বড় সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে যখন তখন লোডশেডিং। ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে অত্যাধিক গরমের কারণে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ঘটছে ব্যঘাত। নবজাতক ও অসুস্থ্য রোগীরা লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া বিদ্যুতের অভাবে মোংলায় পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
পৌর শহরের ছাড়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, গরমের মধ্যেও দিনে চার-পাঁচবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ইফতার কিংবা তারাবির নামাজের সময়ও বিদ্যুৎ থাকছেনা। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের চরম উদাসীনতার ফলে রমজান মাসে শান্তি মত একটু ইবাদাত করতে পারছিনা, কষ্ট হচ্ছে।
কলেজ মোড়ের বাসিন্দা গৃহিনী লিপি আক্তার বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের ফলে অসহ্য অবস্থা পার করছি। একে তো অনেক গরম, তার ওপর এতবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, যেটা বলার মত না’। রাতে ১ টা দেড়াটাও বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। প্রচন্ড গরমে ঘুমাতে না পেরে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ব্যবসায়ীরা রয়েছেন নাকাল পরিস্থিতিতে। বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতা সংকটে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। ব্যবসায়ী চরুন চন্দ্র, দীনেশ হালদার ও ফরহাদ হোসেন বলেন, পিক আওয়ারে অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতারাও আসছেন না। ফলে কমে গেছে বেচাকেনাও।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে মোংলা বিদ্যুৎ জোনের আবাসিক প্রকৌশলী এইচ এম ফরহাদ হোসেন বলেন, মোংলায় তুলনামূলক লোডশেডিং অনেক কম। তবে রমজান মাসের শুরুতে একটু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘মোংলা শহরের মেইন লাইনের তার মেয়াদ উত্তীর্ন হয়ে গেছে। এ কারণে তারের ভেতরে তামা পুড়ে বিদ্যুৎ লোড নিতে পারতনা। তাই এই তার পরিবর্তনের জন্য গত দুই বছর আগে হাতে নেওয়া প্রকল্পের কাজ চলছে। এলাকাভিত্তিক এই উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হচ্ছে, তাই সাময়িক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের ভোগান্তি বেশিমাত্রার হয়ে যাচ্ছে-তাই আজ থেকে শনিবার (১৫ এপ্রিল) এই কাজ বন্ধ রাখা হচ্ছে। ঈদের পর থেকে বাকি অংশের কাজ আবার শুরু করবো’।