॥ বিশেষ প্রতিনিধি ॥
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়মিত চক্ষু চিকিৎসা দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চক্ষু চিকিৎসার মতো বিশেষায়িত কাজ একজন ফার্মাসিস্টের করার কোনো বৈধতা নেই।
মানিকগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকার জয়রা রোডে অবস্থিত “ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ফ্যাকো এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার”-এ দেখা যায়। সেখানে ১০৩ নম্বর কক্ষে চিকিৎসকের চেয়ারে বসে তিনি রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছিলেন। চোখে টর্চ লাইটের আলো ফেলে, নার্স দিয়ে ড্রপ দিচ্ছিলেন। আবার কাউকে চোখে ট্রায়াল ফ্রেম লাগিয়ে ভিশন বক্সের মাধ্যমে পাওয়ার পরিমাপ করছিলেন।
এর ফলে রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার মিরকুটিয়া (বাঘুটিয়া) উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট পদে কর্মরত সুমন মিয়া নিয়মিতভাবে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখছেন। শুধু তাই নয়, তিনি ফার্মাসিস্ট হয়েও চক্ষু চিকিৎসার মতো সংবেদনশীল কাজ করছেন, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুমন মিয়া দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছেন। সরকারি হাসপাতালে তার অনিয়মিত উপস্থিতি এবং বেসরকারি চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখার বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুমন মিয়া প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সোমবার মানিকগঞ্জের “ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ফ্যাকো এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার” এ সকাল দশটা থেকে দিনব্যাপী চিকিৎসাসেবা দেন। এছাড়াও, তিনি মানিকগঞ্জের অন্যান্য চক্ষু হাসপাতালেও রোগী দেখেন।
সোমবার (১০ই মার্চ) সকাল ১০টায় সুমন মিয়াকে মানিকগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড এলাকার জয়রা রোডে অবস্থিত “ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ফ্যাকো এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার”-এ দেখা যায়। সেখানে ১০৩ নম্বর কক্ষে চিকিৎসকের চেয়ারে বসে তিনি রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছিলেন। চোখে টর্চ লাইটের আলো ফেলে, নার্স দিয়ে ড্রপ দিচ্ছিলেন। আবার কাউকে চোখে ট্রায়াল ফ্রেম লাগিয়ে ভিশন বক্সের মাধ্যমে পাওয়ার পরিমাপ করছিলেন।
সুমনের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রংমালা জানান, তিনি জানেন না সুমন ডাক্তার কি না। চোখ ব্যথা করে বলে তিনি এখানে এসেছেন। সুমন তাকে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়েছেন। আসিফ (৪৩) নামে আরেকজন রোগী জানান, তিনি সুমনকে ডাক্তার হিসেবেই চিনতেন এবং তার কাছে চোখ দেখিয়েছেন।
ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ফ্যাকো এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. রুবেল মিয়া জানান, তারা সব জেনেশুনেই সুমনকে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। এ বিষয়ে মীরকুটিয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট মো. সুমন মিয়া বলেন, আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাসুদ রানা ও অফিস ম্যানেজ করেই মাসে দুইদিন মানিকগঞ্জের এই হাসপাতালে সেবা দেই।
চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মাসুদ রানা বলেন, সরকারি ছুটি ব্যতীত সুমনকে প্রতিদিন অফিস করতে হবে। ফার্মাসিস্ট হয়ে রোগী দেখার কোনো সুযোগ নেই। সুমনের এই কাজের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে দাবী করেন।সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল আমীন বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিল না। ফার্মাসিস্ট সুমনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।