॥ আরজু আক্তার, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি ॥
অনৈতিক সুবিধা নিয়ে একই পদে দুজনকে দেওয়া হয় নিয়োগ। কয়েক মাস অনৈতিক ভাবে দুজনই উত্তোলন করেন ভেতন বাতা। বিষয়টি জানাযানি হয়ে গেলে একপর্যায়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় সকল শিক্ষকের ভেতন ভাতা। পরে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লেখিত ক্ষমা চেয়ে সাময়িক পার পেয়ে যান তিনি।
এর মধ্যে ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচারন, গ্রন্থাগারিক পদে লোক থাকা সত্বেও আরো একজনকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দেওয়া, মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের অর্থ আত্মসাৎ, অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে।
অধ্যক্ষের অনিয়ম দুর্ণীতির বর্ণণা দিতে গিয়ে প্রয়োজনীয় প্রমান পত্র সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নোয়াখালী হাতিয়ার রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। বুধবার সকালে উপজেলা সদরের কাছে মাদ্রাসার হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার ১৫জন শিক্ষক, ৪জন কর্মচারী ও সিনিয়র কয়েকজন ছাত্র। সংবাদ সম্মেলনে লেখিত বক্তব্যে আরবি প্রভাষক কাজী আব্দুর রহিম বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জিয়াউল ইসলামকে বিগত সরকারের আমলে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি আওয়ামীলীগ সরকারের প্রভাব দেখিয়ে মাদ্রাসায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করেন।
এর মধ্যে ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচারন, গ্রন্থাগারিক পদে লোক থাকা সত্বেও আরো একজনকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দেওয়া, মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের অর্থ আত্মসাৎ, অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে।
ইতিমধ্যে তার অপসারন চেয়ে ৬৪ পাতার একটি লেখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসককে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক হাতিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি)কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলেছেন।
এছাড়া ২০১৯ সালে ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচারনের অভিযোগে মাদ্রাসার এক ছাত্রীর অভিবাবক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে হাতিয়া থানায় মামলাটি করা হয়।
এদিকে মো: বাহারুল ইসলাম (ইনডেক্স নং- সি ৭০২৩৪০) নামে একজন মাদ্রাসার গ্রন্থাগারিক পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি অনিয়মের মাধ্যমে মো: জোবায়ের নামে অন্য একজনকে একই পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগের কিছু দিনের মধ্যে তা এমপিও ভুক্তি করিয়ে নেন।
কিন্তু বিষয়টি জানাযানি হয়ে গেলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মাদ্রাসার ৩৪ জন শিক্ষক কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অক্ষ্যক্ষ জিয়াউল ইসলাম ২০২২ সালের ২৫ মে লেখিত আবেদনের মাধ্যমে এই ঘটনায় ক্ষমা চান। পরে এই ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ( দাখিল ও এবতোদায়ি) জান্নাতুন নাহারকে প্রধান করে একটি তদন্তটিম গঠন করা হয়। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এই অনিয়ম থেকেও তিনি রক্ষা পান।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে নিয়োগের সময় অধ্যক্ষ জিয়াউল ইসলামকে টাকা দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক নিউটন চন্দ্র দাস, মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন ৪র্থশ্রেণীর কর্মচারী জান্নাত আক্তার। এছাড়া এমপিও ভুক্তিসহ বিভিন্ন কাজে একাধিক শিক্ষক থেকে জোরপূর্বক অর্থনৈতিক সুবিধা আদায় করতেন বলে উপস্থিত শিক্ষকরা অভিযোগ করেন।