॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥
পানির স্রোতে ভাঙনে ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে উঠছে মোংলা বন্দরের আন্তর্জাতিক ঘষিয়াখালী নৌ-চ্যানেলের দুই পাড়। গত এক মাসে ভাংঙ্গনের কবলে পড়েছে মোংলা পৌর শহরের মামার ঘাট, যাত্রী ছাউনী, পাকা ঘাট ও লেবার জেটি সহ বেশ কিছু এলাকা।
ভাঙতে বসেছে প্রায় কোটি টাকায় নির্মিত একমাত্র পাড়াপারের পৌরঘাট, পৌর যাত্রী ছাউনী ও ভেড়ীবাধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জিও ব্যাগ ব্যাবহার করেও তা রোধ করতে পারছেনা।।
বিশেষ করে ভাঙন কবলীত মামার ঘাট থেকে ঝুকি নিয়ে দৈনিক প্রায় লক্ষাধিক লোক পারাপার হয়। যে কোন মুহুর্তে নদীতে বিলিন হতে পারে কোটি টাকায় নির্মিত পৌরঘাট ও দুর্ঘটনা কবলে পরতে পারে পারাপারের মানুষও। যাত্রীদের প্রানহানী থেকে রক্ষায় দ্রুত পারাপার বন্ধ করে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোংলা বন্দর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আন্তজার্তিক ঘষিয়াখালী নৌ-চ্যানেলের তীর মোংলা পৌরসভা সংলগ্ন পারাপারের পৌর ঘাট, মেরিন ড্রাইভ, লেবার জেটি ও এর আশপাশ এলাকায় ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে শহর রক্ষা সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ৪ থেকে ৫ কিলো মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙতে বসেছে প্রায় কোটি টাকায় নির্মিত একমাত্র পাড়াপারের পৌরঘাট, পৌর যাত্রী ছাউনী ও ভেড়ীবাধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জিও ব্যাগ ব্যাবহার করেও তা রোধ করতে পারছেনা। বিশেষ করে এ ঘাট দিয়ে মোংলা বন্দর, ইপিজেড ও ইকোনমিক জোন সহ প্রায় ৫৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারী দিয়ে প্রায় লক্ষধিক লোক প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছে।
যে কোন সময় যাত্রী ছাউনি ও পারাপার ঘাটি বিলিন হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংঙ্কায় নৌপরিবহন মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালী শুরু করেছে পৌর প্রশাসন।
মোংলা সমুদ্র বন্দর ও খুলনার সঙ্গে দেশের অন্যান্য জেলার নৌ-যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম মোংলা-ঘষিয়াখালীর এ নৌ-চ্যানেল। চট্টগ্রাম, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট অঞ্চল থেকে খুলনা, নোয়াপাড়া, আংটিহারা হয়ে ভারতগামী পণ্যবাহী বড় বড় কার্গো জাহাজ এ পথ দিয়ে চলাচল করে।
নাব্যতা সংকটের কারণে ২০১০ সালে চ্যানেলটি বন্ধ হলে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর পুনরায় চালু করা হলে কখনও ভাঙন দেখা দেয়নি। হঠাৎ এক বছর ধরে মোংলার অংশে সহ বিভিন্ন জায়গায় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মোংলা পৌরসভা সহ নদী পাড়ের মানুষ।
আর হুমকির মুখে রয়েছে পৌর সভার নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনা , শহর রক্ষাবাধ ও ব্যবসায়ীদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে ১৯৭৪ সালে স্থাপিত বর্তমান প্রথম শ্রেনীর মোংলা পোর্ট পৌরসভা বলে দাবী স্থানীয়দের।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়ার শারমিন বলেন,পানির খাড়ের গভীরতা ও স্রোতের প্রখড়তা অধিক তাই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে, এটা নিয়ে আমরা প্রতিটি কর্তৃপক্ষ উদ্ভীগ্ন। এব্যপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রনালয় সহ সকলে মিলে চেষ্টা চালাচ্ছি।
মোংলা বন্দরের সঙ্গে সারা দেশের দূরত্ব কমানোর জন্য ১৯৭৪ সালে সাড়ে ৬ কিলোমিটার কৃত্রিম পথ খনন করে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথটি চালু করেছিল তৎকালীন সরকার। ।