॥ এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥
ফ্যাসিবাদ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার পর আবার কোনো ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশের জনগণ রাজনীতি করতে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন -জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
তিনি বলেন হাসিনা সরকারের আমলে নূন্যতম মজুরির দাবীতে আন্দোলনরত ৪ জন শ্রমিককে খুন করা হয়েছে। এই খুনের অপরাধে শেখ হাসিনাকে বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার করতে হবে।
শেখ হাসিনা অনেক গুলো খুনের মাস্টারমাইন্ড ছিলো। জনগণ দেখতে চায় নিজামী যে রশিতে ফাঁসিতে ঝুলেছে হাসিনাকেও সেই রশিতে ঝুলতে হবে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নোয়াখালী জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।গতকাল নোয়াখালী জিলা স্কুল মাঠে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এর উদ্যোগে সকাল ৯.০০ টায় এক বিশাল কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ফেডারেশন জেলা সভাপতি এডভোকেট জহিরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
জনাব শাহজাহান বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে সাংবাদিক, শ্রমিক, রাজনীতিবিদ ও আলেম-ওলামা কাউকেই ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কোনো আন্দোলন করতে দেয়া হয়নি। বরং তাদেরকে গুম, খুন ও হত্যাকান্ড এবং জেল জুলুম সহ বিভিন্ন নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে।
হাসিনা সরকারের আমলে শ্রমিকরা কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। শ্রমিকরা দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে, অথচ তারা নূন্যতম মজুরীর সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শ্রমিক অঙ্গনে নির্যাতনকারী শ্রমীক লীগকে বেআইনি ঘোষণা ও নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধান অতিথি বলেন, শেখ পরিবার দেশের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। তারা শিক্ষাব্যবস্থা ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নোয়াখালীর ২৫ জন সাধারণ জনগণ নতুন বাংলাদেশের জন্য শাহাদাত বরণ করেছে এবং একটি উপজেলায় শেখ হাসিনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে ৭ জন মানুষ জীবন দিয়েছে। সেই জেলা এবং সেই বাংলাদেশকে আমরা সঠিক পথ হারাতে দেবো না।
মাওলানা শাহজাহান তার বক্তৃতায় বলেন, শ্রমিক অঙ্গনের নেতৃত্বে ও ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নে আমাদেরকে নেতৃত্ব গ্রহণ করতে হবে। ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া বৈষম্যহীন শ্রমনীতি ও সমাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান। তিনি বলেন হাসিনা সরকারের আমলে নূন্যতম মজুরির দাবীতে আন্দোলনরত ৪ জন শ্রমিককে খুন করা হয়েছে। এই খুনের অপরাধে শেখ হাসিনাকে বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার করতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী জেলা আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য জনাব ইসহাক খন্দকার। তিনি বলেন, নোয়াখালী জিলা স্কুল মাঠ ছিলো আল্লামা সাঈদীর কুরআন তাফসীরের মাঠ। আমরা শপথ করবো মানুষের ঘরে ঘরে আল-কুরআনের কথা ছড়িয়ে দেবো।
উক্ত সম্মেলনে ৭ দফা প্রস্তাব গৃহীত হয়। উক্ত কর্মী সম্মেলনে সকাল নয়টার পূর্বেই পেন্ডেলের সকল আসন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে শ্রমিক নেতা ও কর্মীগণ সম্মেলনে যোগদান করেন।
জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজওয়ানুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এ এস এম লুৎফুর রহমান, কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ মোঃ আব্দুস সালাম, নোয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা সাইয়েদ আহাম্মদ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন , ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী শহর সেক্রেটারি ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান আরমান।
সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার আমীর ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ উৎসব মুখর পরিবেশে উপস্থিত ছিলেন।