Saturday , 26 July 2025

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ময়জানের সংগ্রাম: দুই শতক জমিতে টিকে থাকার লড়াই, পাশে দাঁড়াল বসুন্ধরা শুভসংঘ

॥ আরিফুল ইসলাম আরিফ, উল্লাপাড়া প্রতিনিধি ॥

ন্ম থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ময়জান খাতুন। জীবনের শুরু থেকেই লড়াই তার সঙ্গী। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের চক মেহেদি গ্রামের এই নারী ২০১০ সালে বিয়ে করেছিলেন স্বাভাবিক জীবনের আশায়। কিন্তু ছয় বছর পরই ভেঙে যায় সেই স্বপ্নের সংসার। স্বামী নানা ধরনের নির্যাতন করতেন, কোনো ভরণপোষণের দায়িত্ব নেননি। অবশেষে তিনি স্বামীর বাড়ি ছেড়ে অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের আশ্রয়ে ফিরে আসেন।

 

“ছোটবেলা থেকেই আমি অন্ধ। স্বামী আমাকে ভাত কাপড় দেয়নি, সন্তানও হয়নি। বাবাও নেই, মা অসুস্থ। এখন এই ছোট দোকান নিয়েই আমার বেঁচে থাকার লড়াই চলছে। খুবই কষ্ট হয়। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমাকে কিছু মালামাল দিয়ে সহযোগিতা করেছে, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

ময়জানের বাবা নেই, সন্তান নেই, নেই সহায়সম্বল। ভাইয়েরাও অভাবের কারণে কোনো সহায়তা করতে পারেন না। একমাত্র ভরসা দুই শতক ভিটেমাটি আর ছোট একটি টোং দোকান, যেটি গড়ে তুলেছেন মাত্র তিন-চার শত টাকার পুঁজি দিয়ে। দিনে গড়ে ২০০-২৫০ টাকার মতো বিক্রি হয়, কিন্তু তাতে তাদের দৈনন্দিন খরচই চলে না।

ময়জান খাতুন বলেন, “ছোটবেলা থেকেই আমি অন্ধ। স্বামী আমাকে ভাত কাপড় দেয়নি, সন্তানও হয়নি। বাবাও নেই, মা অসুস্থ। এখন এই ছোট দোকান নিয়েই আমার বেঁচে থাকার লড়াই চলছে। খুবই কষ্ট হয়। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমাকে কিছু মালামাল দিয়ে সহযোগিতা করেছে, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

তার ৮৫ বছর বয়সী মা আমিনা খাতুন বলেন, “আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু তার স্বামী কোনো খোঁজ নেয় না। এখন আমার মেয়েকে নিয়ে কিভাবে চলবো, কিছুই বুঝতে পারি না। নিজেরও শক্তি নাই, উপার্জন নাই।”

ময়জান খাতুনের এই করুন অবস্থার খবর পেয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক সংগঠন ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ’। সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা সিরাজগঞ্জের চক মেহেদি গ্রামে ময়জান খাতুনের মতো একজন দরিদ্র, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারীর সন্ধান পাই। তাকে দেখে মন ছুঁয়ে যায়। তিনি মাত্র কয়েকশ টাকার পুঁজি নিয়ে দোকানে বসে থাকেন। তাই তার দোকানে কিছু মালামাল দিয়ে সহযোগিতা করেছি। আমরা গর্বিত, এমন মানবিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরে।”

উল্লাপাড়া উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি ফরহাদ হোসেন বলেন, শুভসংঘ সবসময় সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়। ময়জান খাতুনের মতো মানুষদের জন্যই আমরা কাজ করি। সমাজের বিত্তবানদেরও উচিত, এদের পাশে দাঁড়ানো।”

উল্লাপাড়া উপজেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সাধারন সম্পাদক সুমন আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সদস্য আব্দুল খালেক,সজল, ফিরোজ হোসেন ও কালের কন্ঠ উল্লাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক আতাউর রহমান রাজু।

এই ধরনের সহায়তা হয়তো তাদের জীবনের কষ্ট পুরোপুরি দূর করতে পারবে না, কিন্তু অন্তত বেঁচে থাকার সাহস এনে দেয়। মানবতার এই জয়গানে আমরা সবাই মিলে হয়ে উঠি আশার আলো।

Check Also

শীঘ্রই বাজারে আসছে ‘দ্য লিজেন্ডারি’ অপো রেনো-১৪সিরিজ

॥ নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আ জকের বিশ্বে ফ্যাশন ও প্রযুক্তি ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে; ঠিক এই সময়েঅপো …