Sunday , 7 December 2025

আজ ৭ ডিসেম্বর ‎নোয়াখালী যেভাবে হানাদার মুক্ত হয়েছিল

॥  এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥

জ ৭ ডিসেম্বর। নোয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা-জনতার প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নোয়াখালী থেকে বিতাড়িত হয়। ‎পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হামলার মুখে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটলে ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নোয়াখালী দখল করে।

নানা স্থানে হানাদার ও রাজাকার বাহিনীর সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। শহীদ হন বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। শুধুমাত্র নোয়াখালীর সোনাপুরের শ্রীপুর এলাকায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল শতাধিক নিরীহ ব্যক্তিকে।

এরপর তারা নোয়াখালী পিটিআই ও নোয়াখালী বেগমগঞ্জ চৌমুহনী চৌরাস্তার কাছে বেগমগঞ্জ সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘাঁটি গড়ে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এদেশীয় জামাত রাজাকাররা।

‎কোম্পানীগঞ্জ, বামনী, বেগমগঞ্জের বগাদিয়াসহ নানা স্থানে হানাদার ও রাজাকার বাহিনীর সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। শহীদ হন বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। শুধুমাত্র নোয়াখালীর সোনাপুরের শ্রীপুর এলাকায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল শতাধিক নিরীহ ব্যক্তিকে।

যুদ্ধকালিন মুজিব বাহিনীর প্রধান মরহুম মাহমুদুর রহমান বেলায়েত জানিয়েছিলেন, ‘১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি ইউনিট মাইজদী শহরের বিভিন্ন স্থানে রাজাকারদের ক্যাম্পে চালায় সাঁড়াশি আক্রমণ। ‘তিনি আরও জানান, ‘অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় সব ক্যাম্প মুক্তি সেনাদের দখলে চলে আসে। কিন্তু, পিটিআই ক্যাম্পের রাজাকারেরা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যায়।’ ‘ওই দিন ভোররাতে মুক্তিযোদ্ধারা মাইজদী শহরে রাজাকারদের ঘাঁটিতে অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের আক্রমণের মুখে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

‎’৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে নোয়াখালী জেলা স্কুলের রাস্তার পাশের দোকানে ওঁত পেতে থাকা এদেশীয় রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালায়। আল বদর রাজাকার জামাতীদের গুলিতে এক মুক্তিযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।’

‎’এ ঘটনার পর মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে বেশ কয়েকজন রাজাকারকে আটক করে। তারা রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটি পিটিআই ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হন। শত শত মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারদের ক্যাম্প পিটিআই ক্যাম্পাসের চারপাশ ঘিরে ফেলেন। শুরু হয় দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণ।’

‎’রাজাকারদের গুলিতে বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক নিহত হন। এরপর আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়ে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এতে বেশ কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়। তীব্র আক্রমণের মুখে প্রায় ৩০ রাজাকার মুক্তিবাহিনীদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।” ‘এর মাধ্যমে শত্রুমুক্ত হয় নোয়াখালী। বিজয়ের আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে নোয়াখালীর হাজারো মুক্তিকামী মানুষ। মাইজদী শহরের কোর্ট বিল্ডিংয়ে ওড়ানো হয় জাতীয় পতাকা।

Check Also

এনায়েতপুরে বিএনপির মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত

॥ সোহেল রানা, চৌহালি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥ সি রাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত …