Thursday , 18 September 2025
ইনসেটে ভুক্তভোগীদের একাংশের ছবি।

মোংলায় আবারও এতিমের বাড়িঘর দখলে ভাংচুর ও লুটপাট, দুই নারী সহ ৪ বছরের শিশুকে মারধর

॥ বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥

মোংলায় আবারও দুই এতিমের বাড়িঘর দখল করার জন্য ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে মতিউর রহমান রানা সহ কয়েক সন্ত্রাসীরা। ঘরে থাকা বোন সুমনাকে মুখ ও হাত-পা বেধে মারধরও শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করে মতিউর। এসময় ঘরে থাকা অন্য দুই যুবতী নারী মারধর করেছে তারা। এছাড়া সুমনার শিশু সন্তানকে লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

 

এসময় ছোট বোন সুমনা ও শিশু পত্রকে বাচাঁতে পাশের বাড়ীর দুই নারী ছুটে এলে তাদের মারধর করে জখম করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। পরে মতিউর ও তার লোকজন ঘরে থাকা মুল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং স্বর্ণ অলংকার ও নগদ টাকা সহ মুল্যবান মালামাল লুটপাট করে নিয়া যায়।

মা-বাবা হারা এতিম সাইফুর রহমান সাব্বির ও বোন সুমনাকে বাড়ির ভিতরে ঘিড়ে রেখেছে মতিউর সহ তার দলবল বলে অভিযোগ করে সাব্বির। সাব্বির ও সুমনার জীবন বাঁচতে মোংলা থানা পুলিশকে জানালে দ্রুত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এব্যাপারে মোংলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। থানা ও বাগেরহাট আদালতের মামলা তোয়াক্কা না করে ক্ষমতা বলে বাড়ীর সামনে এখনও মতিউর দলবল নিয়ে বাড়ি দখলের মহড়া দিচ্ছে।

থানায় দেয়া অভিযোগ সুত্রে ও ভুক্তভোগী সাব্বির-সুমনা জানায়, আমাদের নিজ দখলীয় বসতবাড়িতে দীর্ঘ ২১ বছর যাবত মা-বাবা ও ছোট বোনকে নিয়ে বসবাস করে আসছি। আমাদের এ বাড়ির জমি গত ২০০৩ সালে একই এলাকার মোতালেব জমাদ্দার নামের এক ব্যাক্তির কাছ থেকে আমার পিতা মিজারুর রহমান ক্রয় করে।

কিন্ত টাকা পয়সা নিয়েও রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে তাল বাহানা করে সে। তবে রেজিস্ট্রি না দিলেও তার জমির সকল কাগজ পত্র ও দখল বুঝিয়ে দেয়। পরে জমি রেজিষ্টি না দিয়ে কিছু দিন পর নিরুদ্ধেশ হয় সে। ওই যাবতকাল থেকে আমারা পুকুর ডোবা ভরট করে টিনের ঘরবাড়ি তৈরী করে এবং নিজেদের নামে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে বসবাস করে আসছি।

পরে মোতালেব জমাদ্দারের ছেলে মতিউর ও অন্যান্য ছেলে মেয়েকে ডেকে জমি রেজিস্ট্রি করার কথা বললে মতিউর রহমান রানা সহ তারা ভাই বোন মিলে আমাদের কাছ থেকে পুনরায় জমির টাকা নেয় এবং ষ্টাম্পে সই স্বাক্ষর করে তারা। পরে কিছুদিন যেতে না যেতে তারাও আমাদের সাথে প্রতারণা করে জমি রেজিস্ট্রি না দিয়ে তাল-বাহানা করতে থাকে।

এব্যাপারে আদালতে মামলা করা হয় যা এখনও চলমান ও বিচারাধিন রয়েছে। আমাদের বাড়িতে একটি মাত্র ঘর, বাবা মৃত্যুর পর যেখানে মা সহ আমরা ৩জন বসবাস করছিলাম। গত ১১জুন আমার মাও মত্যু বরণ করেণ। মার মৃত্যুর পর থেকেই আমাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য পায়তারা করছে মতিউর রহমান রানা সহ তার লোকজন।

আমি বাড়িতে না থাকার সুবাধে আমাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ ও বেদখল করার উদ্দেশ্যে ১৯ জুলাই বুধবার সকাল সোয়া ১১ টার দিকে মোতালেব জমাদ্দারের ছেলে মতিয়ার রহমান রানা নেতৃত্বে প্রায় ১৫/২০ জনের একদল সসস্র সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়ির ঘেড়া-বেড়া ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আমাদের উপর আর্তকিত হামলা চালায়। এসময় ছোট বোন সুমানা ডাক চিৎকার দিলে তাকে মুখ চেপে ও হাত-পা বেঁেধ শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করে মতিউর। তার কোলে থাকা ছোট্ট শিশু পুত্রকে লাথি মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়।

এসময় ছোট বোন সুমনা ও শিশু পত্রকে বাচাঁতে পাশের বাড়ীর দুই নারী ছুটে এলে তাদের মারধর করে জখম করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। পরে মতিউর ও তার লোকজন ঘরে থাকা মুল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং স্বর্ণ অলংকার ও নগদ টাকা সহ মুল্যবান মালামাল লুটপাট করে নিয়া যায়।

তাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এলে সকলের সামনে প্রকাশ্যে আমাদের পরিবারকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়া চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সন্ত্রসীদের এমন হামলা ও প্রান নাশের হুমকিতে জীবনের ঝুকির মধ্যে এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছে এতিম দুই ভাই বোন।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ সামসুদ্দিন জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে শহরের মোর্শেদ সড়ক এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি এবং আদালতে একটি মামলাও চলমান বলে জানতে পেরেছি। তবে পুনরায় বাড়ি দখলে চেষ্টা করা হলে ব্যাপস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Check Also

অবৈধ মৎস্য আহরণ রোধ ও বনজ সম্পদ রক্ষায় কোস্টগার্ডের জনসচেতনতামূলক সভা

॥ মাসুদ রানা,বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥ মোং অবৈধ মৎস্য আহরণ রোধ ও বনজ সম্পদ রক্ষায় …