॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥
স শস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মোংলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা আবু বকর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছে নৌবাহিনী। শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত জাহাজটি দেখতে ছুটে আসেন মোংলা ও রামপালসহ এর আশপাশ এলাকার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ।
বানৌজা আবু বকর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি যুদ্বজাহাজ। এতে যুদ্ধ সরঞ্জাম সংযুক্ত রয়েছে। জাহাজটি গভীর সমুদ্র এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
দেখতে আসা অনেকের যেখানসমুদ্রগামী জাহাজে ওঠাই হয়নি সেখানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ দেখার সুযোগ হাতছাড়ার প্রশ্নই আসে না। সশস্ত্র বাহিনী দিবসে তাই দীর্ঘ লাইন ছিল অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজটির প্রবেশমুখে। নানা বয়সী মানুষ বিশেষ করে নারী, পুরুষ আর শিশু কিশোররা যুদ্ধজাহাজ দেখে মহাখুশি। নতুন সাহস আর প্রেরণা বুকে নিয়ে ঘরে ফেরেন তারা। মানুষের কৌতূহল আর প্রশ্নের জবাব দেন নৌবাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
বানৌজা আবু বকর জাহাজের ক্যাপ্টেন মীর বাইজিদ জানান, বানৌজা আবু বকর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি যুদ্বজাহাজ। এতে যুদ্ধ সরঞ্জাম সংযুক্ত রয়েছে। জাহাজটি গভীর সমুদ্র এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যুতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

তিনি আরো জানান, জাহাজটি ২০১৪ সালের ১ মার্চ মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১০৩.২০ মিটার, প্রস্থ ১১.৩০ মিটার, গভীরতা ৩.১৯ মিটার, ওজন ১৭০০ টন এবং এটি প্রতি ঘন্টায় ৪৮ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। ‘বানৌজা আবু বকর ’ জাহাজটি সমুদ্র এলাকায় একটানা ৫০০০ হাজার নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে পারে বলে জানায় তিনি।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সকল মসজিদসমূহে বাদ ফজর মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহিদগণের আত্মার মাগফেরাত, দেশের সুখ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে সকালে কমান্ডার খুলনা নৌ অঞ্চল যুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও শহিদ বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ্র মাজারে ‘গার্ড অব অনার’ ও পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পাশাপাশি খুলনায় বানৌজা তিতুমীর ঘাঁটিতে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সশস্ত্র বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের সম্মানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পদবীর সামরিক কর্মকর্তাগণ ছাড়াও খুলনা বিভাগের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যগণ, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজসমূহের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন।
নৌবাহিনীর সকল জাহাজ ও ঘাঁটিসমূহে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের উপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং নৌবাহিনী স্কুল ও কলেজসমূহে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকার সদর ঘাঁটে বিএনডিবি গাংচিল, চট্টগ্রাম নেভাল বার্থে বানৌজা সমুদ্র অভিযান, খুলনা বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ টার্মিলানে বানৌজা বিশখালী, মোংলা দিগরাজ নেভাল বার্থে বানৌজা আবু বকর, বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ ঘাঁটে বানৌজা পদ্মা এবং চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাঁটে বানৌজা অতন্দ্র দুপুর ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। এ সময় বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ ঘুরে দেখেন।
global sangbad 24 অনলাইন নিউজ পোর্টাল