॥ আরিফুল ইসলাম আরিফ, উল্লাপাড়া, (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥
কো রবানির ঈদ দরজায় কড়া নাড়ছে। এই আবহে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার খামারিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তাদের গবাদি পশু, বিশেষ করে ষাঁড়গুলোকে কোরবানির হাটের জন্য প্রস্তুত করতে। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা এসব পশু ইতোমধ্যে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করেছে।
খালিয়াপাড়া গ্রামের খামারি মনিরুল ইসলাম জানান, তার খামারে ২০টি গরু রয়েছে এবং এবারের কোরবানিতে সিরাজগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড়টি তার খামারেই রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। ভালো দামের প্রত্যাশা রাখলেও তিনিও খাদ্যের দাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন খামারে গিয়ে দেখা যায়, খামারিরা পরম মমতায় তাদের গরু-গুলোকে পরিচর্যা করছেন। কাঁচা ঘাস, খড়, ভূষি, ডালের গুঁড়া, ভাত এবং খৈলের মতো দেশীয় খাবার খাইয়ে তারা ষাঁড়গুলোকে স্বাস্থ্যবান করে তুলছেন। এই কাজে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগও খামারিদের সার্বিক সহযোগিতা করছে।
উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নে অবস্থিত ভাই ভাই ডেইরি খামারের মালিক আব্দুল খালেক জানান, তাদের খামারে বর্তমানে ৫০টি গরু রয়েছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি শাহীওয়াল, ফিজিয়ান ও জার্সি জাতের ষাঁড় কোরবানির জন্য প্রস্তুত। তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে এই পেশায় নিয়োজিত। খালেক আরও জানান, তাদের খামার থেকে প্রতিদিন ৪ থেকে সাড়ে ৪ মণ দুধ উৎপাদিত হয় এবং প্রাণিসম্পদ অফিসের সহায়তায় তারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছেন। তবে পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের মার্জিন নিয়ে তিনি কিছুটা চিন্তিত। তার খামারে ৩ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা দামের ষাঁড় রয়েছে এবং তিনি সরকারের কাছে পশুখাদ্যের দাম কমানোর আবেদন জানিয়েছেন।
খালিয়াপাড়া গ্রামের খামারি মনিরুল ইসলাম জানান, তার খামারে ২০টি গরু রয়েছে এবং এবারের কোরবানিতে সিরাজগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড়টি তার খামারেই রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। ভালো দামের প্রত্যাশা রাখলেও তিনিও খাদ্যের দাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: শেখ এম.এ. মতিন জানান, এ বছর উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার খামারি গরু, ছাগলসহ অন্যান্য পশু মোটাতাজা করছেন। কোরবানির জন্য ৩০ হাজারের বেশি গরু এবং ৪৫ হাজারের বেশি ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ খামারিদের ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার না করে পশু মোটাতাজা করার বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। মাঠপর্যায়ে গিয়ে খাদ্য, টিকা এবং কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুতের সার্বিক দিকনির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে।
খামারিরা আশা করছেন, সরকারি সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং বাজারে ভালো চাহিদা থাকলে এবারের কোরবানিতে তারা ন্যায্য দাম পাবেন এবং এর মাধ্যমে খামারগুলোর টিকে থাকার সম্ভাবনা আরও জোরালো হবে। এখন দেখার অপেক্ষা, কোরবানির হাটে এসব হৃষ্টপুষ্ট পশু কেমন সাড়া ফেলে।