Saturday , 23 November 2024
ছবিঃ আতাউর রহমান রাজু উল্লাপাড়া,সিরাজগঞ্জ

উল্লাপাড়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রভাবশালী মেম্বরের ভাতিজা ধর্ষণ করলো দরিদ্র পরিবারের কিশোরীকে

॥ এ আর রাজু, উল্লাপাড়া (সিরাজঞ্জ) প্রতিনিধি ॥

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চালা গ্রামের এক কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রভাবশালী সাবেক মেম্বর বুলমাজন বুলু’র ভাতিজা জাকির হোসেন জুলহক একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ধর্ষক জাকির হোসেন জুলহক (৩০) একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। শনিবার সকালে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে।

 

উল্লেখ্য অভিযুক্ত জুলহকের পরিবার সামাজিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার চাচাতো ভাই আবু হানিফ ও পরিবারের অন্যান্যরা তাকে নির্দোষ দাবি করে উল্টো বাদী পক্ষ ও গ্রামবাসীর অনেককে হুমকি ধামকি ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করে।

থানার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের ফজলু মিয়ার কলেজ পড়ুয়া কন্যা (১৭)’র সাথে পাশের বাড়ির প্রভাবশালী সাবেক মেম্বর বুলু’র ভাতিজা ও আবুল হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন ওরফে জুলহক (৩০) এর সাথে দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের দু’জনের বাড়ী একই মহল্লায় হওয়ায় জুলহক রাস্তাঘাটে চলাচলে এবং বাড়িতে আসা যাওয়ার ফাঁকে ভুক্তভোগীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

তারপর জুলহকের ফোন নম্বর দিয়ে কলেজ ছাত্রীর বাড়ির ফোন নম্বরে মাঝে মধ্যে ফোন দিয়ে কথাবার্তা বলতো তারা। এভাবে প্রতারক জুলহক মেয়েটির সাথে গোপনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রেমের ফাঁকে জুলহক বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তোলে। বিভিন্ন সময়ে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলে কথা বলার ছলে কলেজছাত্রীর অশ্লীল নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে জুলহক।

এভাবে দু বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেম নামের শারীরিক সম্পর্ক চলে। পরে মেয়েটির নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার ভয় দেখিয়ে জুলহক একাধিক বার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে মেয়েটিকে। মেয়েটি পরে বিয়ের কথা বললে জুলহক বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে তার সঙ্গে।

তখন জুলহক মেয়েটিকে বিয়ের পাত্তা না দিয়ে ঘন ঘন শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয়। মেয়েটি প্রস্তাবে অস্বীকার জানালে জুলহকের কাছে থাকা তার বেশ কিছু নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। মুহূর্তে সে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় হৈচৈ শুরু হয়। তৎক্ষনাৎ অভিযুক্ত জুলহকের চাচা বিশিষ্ট ইটভাটা ব্যবসায়ী সাবেক ইউপি মেম্বর বুলমাজন বুলু ও তার ছেলে চালা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হানিফের কাছে ঘটনার বিচার প্রার্থনা করে ভুক্তভোগীর পরিবার। এতে কোন ফয়সালা না পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকারিয়া ও গ্রাম্য প্রধান শাহ আলম পুনরায় গ্রামবাসীর কাছে বিচার চাইলে জুলহকের পরিবার নানা রকম টালবাহানা করে এড়িয়ে যায়।

উল্লেখ্য অভিযুক্ত জুলহকের পরিবার সামাজিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার চাচাতো ভাই আবু হানিফ ও পরিবারের অন্যান্যরা তাকে নির্দোষ দাবি করে উল্টো বাদী পক্ষ ও গ্রামবাসীর অনেককে হুমকি ধামকি ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করে।

এমনকি আবু হানিফ নিজেও মেয়েটির কিছু ছবি সংগ্রহ করে সেটা প্রযুক্তির মাধ্যমে এডিট করে গ্রামের অনেক কে দেখায় যাতে তার সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণা জন্মে। এতে মেয়েটি ও পরিবার আরও বিপাকে পড়ে যায়। এতে উপায়ান্তর না দেখে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানান তারা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকারিয়া জানান, ঘটনা সত্য। বিষয়টি খুবই দু:খজনক ঘটনা। ভুক্তভোগী ন্যায় বিচার পাক সেটাই সকল মহলের কাছে আমার প্রার্থনা। উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসি তদন্ত এনামুল হক জানান, ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়েছি। মামলার প্রস্তুুতি চলছে।

Check Also

মোংলায় জমির সিমানা নিয়ে দন্ধে নারী সহ রক্তাক্ত জখম-৮

॥  বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥ মোংলায় জমির সিমানা নিয়ে দন্ধে দুই পক্ষের নারী সহ ৮জন …