॥ এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥
নোয়াখালীতে খরিদকৃত সম্পত্তি দখলের চেষ্টা, মিথ্যা মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নোয়াখালী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুল হাই ডিলারের কনিষ্ঠ পুত্র আবু নাঈম বাপ্পি। শনিবার দুপুর ১২টায় জেলা শহর মাইজদীর একটি স্থানীয় পত্রিকা অফিসে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
এরপর তারা মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে সন্ত্রাসী জড়ো করে আমাকে হামলা করার পরিকল্পনা করে। আমি তাদের ভয়ে শ্রমিকদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে আসি। বর্তমানে আমি আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে যেতে পারছি না স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, তার আপন মায়ের পেটের বোনকে তার ক্রয়কৃত সম্পত্তির উপর নির্মিত ভবনে আশ্রয় দিলেও তার বোন ঐ সম্পত্তি জবরদখল করার হীন উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হামলাসহ তাকে হয়রানী করে আসছেন।
তিনি জানান ‘‘নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী উত্তর ফকিরপুর মৌজায় অবস্থিত তার পিতা মরহুম আবদুল হাই সাহেবের দোতলা ভবনসহ ৬শতাংশ সম্পত্তি সফিকুর রহমানের কাছে ৩৮৮৬ নং ছাফ কবলা দলিলমূলে বিক্রি করেন। উক্ত ৬ শতাংশ জমি তিনি সফিকুর রহমান এর কাছ থেকে বিগত ২৯/১২/২০১১ সালে ১৫৪২৭ নং ছাফ কবলা দলিল মূলে দোতলা ভবনসহ খরিদ করেন ।
ঐ সম্পত্তিতে তার জমাখারিছ খতিয়ান, হাল খতিয়ান, পৌর হোল্ডিং, গ্যাস সংযোগ, ২টি বিদ্যুৎ সংযোগসহ যাবতীয় কাগজপত্র সম্পাদিত আছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ বিনা অজুহাতে মিথ্যা বানোয়াট মামলা হামলাসহ নানান হয়রানি করে আসছেন। পিতার মৃত্যু সময় প্রথম ঘরে ২ ছেলে, ৭ মেয়ে রেখে যান এবং ২য় ঘরে ২ ছেলে ২ মেয়ে রেখে যান।
তারমধ্যে তার বোন রহিমা বেগম স্বামী পরিত্যক্তা ও অসহায় বিধায় তাদের সংসার পরিচালনা এমনকি ভরণপোষণ তিনি দিয়ে আসছেন। অসহায় বিধায় রহিমাকে তার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে সন্তানাদি নিয়ে বসবাস করতে দেন তিনি। ইতিমধ্যে ঐ দোতলা ভবন বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় তা সংস্কারণ তথা পূনঃ নিমার্ণের প্রস্তুতি নিয়ে বোনকে পরিত্যক্ত ভবন ছেড়ে ভাড়া বাসায় উঠতে বললে সে আজ যাচ্ছি কাল যাচ্ছি বলে গড়িমসি শুরু করে।
এক পর্যায়ে আতিœয়স্বজনদের সহযোগীতায় মানবিক কারনে বোনকে নগদ ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা প্রদান করলেও কোনো প্রকার রিসিভিং দেয় নি। বলে যে ভাইবোনের মধ্যে কিসের রিসিভিং বাপ্পি ভাইবোনদের মধ্যে সবার ছোট তাই বড় বোনের সম্মানার্থে কিছু বলি নাই।
এদিকে তার বোন ভবন ছেড়ে না দিয়ে তিনি কাজ করতে গেলে তার বড় ভাই আব্দুর রহমান বাবুল ও তার স্ত্রী স্বপ্না, বোন রহিমা আক্তার আরজু, বোনের মেয়ে মাইশা, আরেক বোন মাজেদা আক্তার বহিরাগত সন্ত্রাসীসহ তার কাজে বাধা প্রদান করে। জিঙ্গেস করতে গেলে বিগত ৩১/০৩/২০২৩ শুক্রবার সকালে লাঠিসোটা নিয়ে বেদম মারধর করে তাকে।
আহত হয়ে নোয়াখালী জেনারেল হসপিটালে ভর্তি ছিলেন তিনি । এবিষয়ে তিনি সিনিয়র বিচারিক মেজিস্টেট আদালতে ৩৫৭/২৩ ইং পিটিশন মামলা করেন। বিচারক মেজিস্টেট সুধারাম থানাকে তদন্তের জন্য আদেশ দেয়, মামলাটি সুধারাম থানায় তদন্তাধীন আছে ।
এদিকে তার বোন অস্থায়ী নিষেধাষ্ণা চেয়ে বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ ১ম আদালতে ১৮/২০২৩ মামলা করেন। আমি আমার স্বপক্ষে দলিলাদি ও কাগজপত্র বিজ্ঞ আদালতে জমা দিলে বিজ্ঞ বিচারক মাশফিকুল হক বিবাদীপক্ষের বিরুদ্ধে দোতরফা সূত্রে বিনা খরছে উক্ত অস্থায়ী নিষেধাঙ্গা না মজœুর করে।
এতেও তারা ক্ষান্ত হয় নি। গত ১৩/০৯/২০২৩ ইং তারিখে আমার পরিত্যক্ত ভবনে শ্রমিকরা কাজ করার সময় আমার বড় ভাই আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না ও দুই বোন ভাগ্নীসহ অন্যন্যরা মরিছের পানি গুলে শ্রমিকদের চোখে মুখে মারতে থাকে । একপর্যায়ে দৌড় দিলে মরিছ মিশানো পানিতে পা পিছলে সিড়িতে পড়ে আব্দুর রহমান বাবুল মাথায় ও কোমরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরুত্বর আহত হয়।
পরে আমিসহ স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করি। এরপর তারা মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে সন্ত্রাসী জড়ো করে আমাকে হামলা করার পরিকল্পনা করে। আমি তাদের ভয়ে শ্রমিকদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে আসি। বর্তমানে আমি আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে যেতে পারছি না স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তারা পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে সুধারাম মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগটি বর্তমানে তদন্তাধীন আছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন আমি বলব কোনো ভাই তার বোন যদি ভিক্ষাও করে তবে তাকে ভিক্ষা দিয়েই বিদায় করে দাও, তারপরও তাকে আশ্রয় দিও না। বর্তমানে তিনি নিজের আপন এক ভাই ও দুই বোনের আতঙ্কে ভিটে বাড়ী ছেড়ে অন্যত্র ঘুরে বেড়াচ্ছি।
তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি তার সম্পত্তি ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের উধ্বেতন কর্তীপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন। একই সাথে তিনি ও তার পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে সুধারাম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মীর জাহিদুল হক রনি বলেন ‘‘ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে’’।