Sunday , 24 November 2024

রিমাল পরবর্তী নিষেধজ্ঞা শেষে খুলছে সুন্দরবন

॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥

সুন্দরবনের প্রানপ্রকৃতিসহ বন্যপ্রানী ও মাছের প্রজনন নিশ্চিত করতে জেলে-বনজীবীসহ দেশ-বিদেশী পর্যটকদের তিন মাসের প্রবেশ নিষেধজ্ঞা শেষ হচ্ছে শনিবার (৩১ আগস্ট)। বন বিভাগের কাছ থেকে বৈধ পাশ-পারমিট নিয়ে ১ সেপ্টেম্বর (রবিবার) থেকে সুন্দরবনে যেতে পারবেন জেলে-বনজীবীসহ দেশ-বিদেশী পর্যটকরা।

 

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, মাছ, বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজননের জন্য জুন, জুলাই, আগষ্ট এই তিন মাস সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়।

সুন্দরবনের বন্যপ্রানী ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস (আইআরএমপি) এর সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরের ১জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই তিন মাস বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) ম্যানগ্রোভ এই বনে প্রবেশ নিষেধজ্ঞা জারি করে থাকে বন বিভাগ।

সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলা উপজেলার চিলার জয়মনি গ্রামের জেলে লিয়াকত আকন, দিলিপ বর্মন, সেলিম আকন ও আব্দুর রহমান বলেন, আমরা ৩০/৪০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় সুন্দরবনে মাছসহ বনজ সম্পদ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। সুন্দরবনে এই তিন মাসের নিষেধজ্ঞা সময়ে আমাদের অনেক কষ্ট করে পরিবারসহ জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে। খুশির খবর হচ্ছে রবিবার থেকে আবারো আমরা পাশ-পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে মাছ আহরণ করতে যাবো। এখন আমারা সুন্দরবন থেকে মাছ আহরণ করে বেঁচে থাকতে পারবো।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের জন্য উপযুক্ত মৌসুম। এই সময় সাধারণত সকল মাছে ডিম ছাড়ে। তাই ২০১৯ সাল থেকে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানস এর (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত তিনমাস সকল প্রকার মৎস্য আহরন বন্ধ থাকে।

এছাড়াও এই সময়টি সুন্দরবনের বন্যপ্রানীদেরও প্রজনন মৌসুম। সুন্দরবনের প্রানপ্রকৃতি ঘুরে দাঁড়াতে জেলে বনজীবীসহ দেশ-বিদেশের সকল পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকাসহ (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) ২৫ ফুটের কম প্রসস্ত সব খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। সারা বছর ২৫ ফুট প্রসস্তের উর্ধের নদী-খালে উপক‚লীয় এলাকার হাজার হাজার জেলে-বনজীবীরা বন বিভাগের কাছ থেকে পাশ-পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। এই তিন মাস ছাড়া সারা বছরই দেশ-বিদেশী প্রতিবেশ পর্যটকরা (ইকো ট্যুরিষ্ট) সুন্দরবন ভ্রমন করে থাকে। নিষেধজ্ঞা শেষ ১ সেপ্টেম্বর (রবিবার) থেকে বৈধ পাশ-পারমিট নিয়ে জলে-বনজীবীসহ দেশ-বিদেশী পর্যটকরা আবারো সুন্দরবনে যেতে পরবেন।

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, মাছ, বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজননের জন্য জুন, জুলাই, আগষ্ট এই তিন মাস সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়। এসময় বনের বিভিন্ন প্রান্তে ময়লা আবর্জনা জমেছে। সেগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে সুন্দরবনকে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। এরমধ্যে ছবি কর্ণার, উচু ওয়াচ টাওয়ার, ঝুলন্ত ব্রিজসহ নানা স্থাপনা নতুনভাবে সংস্কার করে সাজানো হয়েছে।

পর্যটকরা কাল থেকে সুন্দরবনে আসলে ভ্রমণ ও বিনোদন সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারে তার সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বনের এবং পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন এই বন কর্মকর্তা।

Check Also

মোংলায় জমির সিমানা নিয়ে দন্ধে নারী সহ রক্তাক্ত জখম-৮

॥  বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥ মোংলায় জমির সিমানা নিয়ে দন্ধে দুই পক্ষের নারী সহ ৮জন …