মঙ্গলবার , ৮ অক্টোবর ২০২৪

জামায়াতের মামলায় আসামী যুব ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা !

॥ বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥

মোংলায় বাকবিতন্ডার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্থানীয় পর্যায়ের ৯নেতা কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে উল্টো তাদের নামে মামলা দিয়েছেন জামায়াতের এক কর্মী। মামলার আসামীরা সকলেই মোংলা সরকারী হাসপাতাল (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে) ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

 

উল্টো আমার মামলার আসামী সাইফুল্লাহ থানায় গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে একটু মিথ্যা মামলা করেছেন। আমার মামলার আসামী হওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করে আমাদের বিরুদ্ধে তার মামলা নিয়েছেন।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার (৭জুলাই) উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের সোনাইলতলা এলাকায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জামায়াত-বিএনপি’র লোকজন একই এলাকার যুব ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালায়।

এতে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ৯নেতা-কর্মী রক্তাক্ত জখম হন। আহত ৯জনের মধ্যে ৪জনকে ঘটনার দিন রাতেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় আর বাকীরা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে।

মামলার একটির বাদী জামায়াত-বিএনপি’র হামলার শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আহত মোঃ মারুফ শেখ এবং অপর মামলার বাদী হলেন হামলাকারী জামায়াত কর্মী মোঃ সাইফুল্লাহ মল্লিক। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মারুফের মামলার আসামী হয়েও জামায়াত কর্মী সাইফুল্লাহ কীভাবে থানায় গিয়ে ক্ষমতাসীনদলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করলো এনিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের এমন ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

জামায়াত কর্মী সাইফুল্লাহ মল্লিকের দায়ের করা মামলায় আসামীরা হলেন- স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা কমিটির সদস্য মারুফ শেখ, উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়ন ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন শেখ, ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ফিরোজ শেখ, জাকির আলী শেখ, মোজাহিদ মোল্লা, ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য তোতা শেখ, টিটু শেখ ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য জিলানি কাজী।

উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার হুমায়ুন কবির বলেন, এলাকার তালিকাভুক্ত রাজাকার মৃত হাসেম আলী মল্লিকের ছেলে জামায়াত কর্মী সাইফুল্লাহ মল্লিক, আরেক তালিকাভুক্ত রাজাকার মজিবর সরদারের ছেলে আজিজ মল্লিক ও তার ছেলে বিএনপি কর্মী আব্দুল্লাহ মল্লিক এবং মৃত হাসেম মল্লিকের ছেলে হাবি মল্লিক ওরফে ডাকাত হাবি’র হামলার শিকার হয়ে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫জন ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন,

জামায়াত-বিএনপি’র লোকজনের হামলায় তার দলের নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ওইসব জামায়াত- বিএনপি’র কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। তবে রহস্যজনক কারণে এখনও পর্যন্ত পুলিশ আসামীদের কেউকে আটক করেননি।

জামায়াত-বিএনপি’র হামলার শিকার আহত দলের মামলার বাদী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মারুফ শেখ বলেন, সাবেক শিবির নেতা ও বর্তমান জামায়াত কর্মী সাইফুল্লাহসহ তার সহযোগী জামায়াত-বিএনপি’র কর্মীরা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করেছেন।

এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেও পুলিশ কেউকে আটক করছেনা। উল্টো আমার মামলার আসামী সাইফুল্লাহ থানায় গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে একটু মিথ্যা মামলা করেছেন। আমার মামলার আসামী হওয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করে আমাদের বিরুদ্ধে তার মামলা নিয়েছেন।

এতে আমরা হতবাক হয়েছি, আমাদের লোকজন হাসপাতালে আর সাইফুল্লাহসহ তার কেউ হাসপাতালে ভর্তিও হয়নি, তাহলে পুলিশ মামলা নিলো কিভাবে!

মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, সাইফুল্লাহ মল্লিক জামায়াত কর্মী কিনা সেটা আমার নলেজে নেই। এছাড়া মামলা দুইটি পরপর হওয়ায় ‘কে’ আসামি তা জানারও সুযোগ ছিলনা। তবে দুইটি মামলারই আসামীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

Check Also

আমরা নতুন করে বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে চাই….. …… মোঃ ইসমাইল সম্রাট

॥  এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥ নতুন নতুন করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা …