Saturday , 14 December 2024

বন রক্ষিদের অত্যাচারে জেলে নিখোঁজ

॥ বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥

ড় ভাই সাগর নাথ সহ ৪ জেলে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে ছোট বাই হিলটন নাথ নামের এক জেলে ৪দিন যাবত নিখোজ রয়েছে। গত ৭ এপ্রিল রাতে বনের করমজল এলাকায় মাছ ধরা অবস্থায় অভিযানের নামে তাদের আটক করে চাদঁপাই বন বিভাগ। এসময় তাদের ব্যাপক মারধর করে বন রক্ষিরা। এদের মধ্যে ৩জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোর্পদ করলেও হিলটন নাথ নামের জেলে নিখোজের কথা অস্বীকার করে বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা। আর স্বজনরা বলছে, বন রক্ষিদের অত্যাচার-নির্যাতনেই হিলটন নাথ বেচে নেই বলে জানায় তারা। তবে এর সঠিক বিচার ও মৃত্যু হলে লাশ ফেরত চায় মা-বাবা।

 

এ সকল জেলেদের মাছধরা অবস্থায় হঠাৎ অভিযানের নামের তাদের ডেকে বেধরক মারপিট শুরু করে এসকল বন রক্ষিরা। এসময় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে জেলে হিলটন নাথ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে মেরে ও পিটিয়ে খালে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ করেণ এলাকাবাসী ও তার পরিবারের স্বজনরা। মেদিন রাত থেকেই হিলটন নাথ নিখোজ হয় বলে অভিযোগ।

স্বজন ও স্থানীয়দের মাধ্যমে খোজ নিয়ে যানা যায়, চাদঁপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহবুব হাসান নির্দেশনায় গত ৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ৩টার দিকে বন বিভাগের সরকারী ষ্প্রিড বোর্ট নিয়ে অভিযানে যায় বোট ড্রেইভার মঞ্জু রাজা, বিএম তুহিন হাওলাদার ও সেলিম সরকার সহ কয়েকজন বন রক্ষিরা। এসময় বনের করমজল এলাকায় মাছ ধরছিল জেলে মোঃ অসীম শেখ (৩৫), মোঃ জাকির হোসেন (৩৪), সাগর নাথ (২৩) ও তার ছোট ভাই হিলটন নাথ (১৮)। তাদের সবার বাড়ী মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের অন্যান্য গ্রামে। এ সকল জেলেদের মাছধরা অবস্থায় হঠাৎ অভিযানের নামের তাদের ডেকে বেধরক মারপিট শুরু করে এসকল বন রক্ষিরা। এসময় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে জেলে হিলটন নাথ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে মেরে ও পিটিয়ে খালে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ করেণ এলাকাবাসী ও তার পরিবারের স্বজনরা। মেদিন রাত থেকেই হিলটন নাথ নিখোজ হয় বলে অভিযোগ।

এঘটনার পর এদিন ৭ এপ্রিল শুক্রবার রাতে তাদের মধ্যে থেকে জেলে অসীম, জাকির ও সাগর নাথ সহ এ ৩জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার সকালে জাল নৌকা সহ বন আইনে মামলা দায়ের করে রেঞ্জ কর্মকর্তা। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তবে হিলটন নাথ নামের এক জেলে নিখোজ সে বিষয় স¦জনদের জানানো বা খবর দেয়ার ব্যাপারে বন বিভাগ সম্পুর্ন গোপন রাখে বলে অভিযোগ তার পরিবারের। এছাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশনায় আটক ওই ৩ জেলের পরিবারের সদস্যদের কারো সাথে যোগাযোগ করতেও দেয়া হয়নী বলে জানায় স্বজনরা।

নিখোঁজ হিলটন নাথ মোংলা উপজেলার চিলা গ্রামের দিনমজুর মিঠু নাথের ছেলে। তার সন্ধানে পরিবারসহ এলাকাবাসী বন্দরের পশুর নদী ও সুন্দরবনের আশে পাশের বিভিন্ন খালে ও বনের গহিনে খুজেঁ বেড়াচ্ছেন। গত ৪দিন অনেক খোজাখুজী করে কোনসন্ধান করতে পারেনী। তবে বন রক্ষিদের অত্যাচারেই হিলটন নাথ নিখোঁজ বা মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তার মা-বাবার।

নিখোঁজ হিলটন নাথের চাচা স্বপন নাথ জানান, চাদঁপাই নতুন রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহবুব হাসান যোগদান করার পর থেকেই জেলেদের উপর অত্যাচার নির্যাতন বেড়েই চলছে। তার আদেশে বন্ধ করে দিয়েছে জেলেদের পাশপারমিট। হিলটন মোংলা ইপিজেডের কর্মরত একজন শ্রমিক। কাজের ফাকে মাঝে মাঝে বড় ভাইর সাথে ,মাছ ধরতে যেতো সে।

শুক্রবার রাতে তার বড়ো ভাইসহ আরও দুজন সুন্দরবনের খালে মাছ ধরতে রওনা হলে তাদের সাথে মাছ ধরতে যায় হিলটন। পরদিন শনিবার সকাল বেলা আমরা জানতে পারি সুন্দরবনে মাছ ধরার অপরাধে সাগর নাথসহ বাকি দুজনকে বন রক্ষীরা আটক করে নিয়ে গেছে।

এসময় তাদের সাথে দেখা করে হিলটন কোথায় আছে জানতে চাইলে সাগরসহ অন্যরা জানায় রাতে বনরক্ষীরা তাদের আটকের সময় মারধরে হিলটন ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। কিন্তু তাদের তিনজনকে বনরক্ষীরা আটক করতে পারলেও হিলটনকে খুজে পায়নী তারা। শনিবার (৮এপ্রিল) থেকে পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসী হিলটনকে নদী এবং সুন্দরবনে অনেক খোঁজাখু্জি করেও এখনো তার কোন সন্ধান পায়নি।

নিখোঁজ হিলটন মরে গেছে নাকি বেঁচে আছে তাও বলতে পারছেনা তারা। নিখোঁজ হিলটনের বাবা মিঠুনাথ বলেন, আমার দুইটা ছেলে বড় ছেলেটা মাছ ধরতে গিয়ে জেলে আছে, আর ছোট ছেলেটা নিখোঁজ রয়েছে। জানিনা জীবিত ফেরত পাবো কিনা। জীবিত না পেলেও মৃত লাশটা যেন পাই সেই দাবী সকলের কাছে।

চাদঁপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহাবুব হাসান বলেন, ট্রলার বোঝাই শুটকি মাছ পাচার হবে এমন খবরে অভিযানে গিয়ে তাদের ৩জনকে আটক করা হয়। এসময় তারা যে ৪জন ছিল তা কিছু বলেনী আটককৃত জেলেরা। এছাড়া

পাশপারমিট বিহিন সুন্দরবনের করমজল এলাকায় মাছ শিকার কালে বনরক্ষীদের হাতে ৩ জেলে নৌকাসহ আটক হয়। আটককৃতদের সাথে আর কেউ আছে কিনা তার তার জানা নাই। তবে নিখোজের কথা শুনে তার সন্ধান পেতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আরোচনা করে তাদের সাথে বনরক্ষীদের বনের নদী ও খালে পাটানো হয়েছিল। তার পরেও আমাদের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে বলে জানায় রেঞ্জ কর্মকর্তা।
গত ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার শ্যালা নদীতে অভিযানের নামে নীরিহ জেলে পরিবারের উপর হামলা ও মারধর ও গুলী বর্ষন করে এ রেঞ্জ কর্মকর্তা। এতে নারী সহ ৬ জেলে রক্তাক্ত জখম হয়।সে দিন উল্টো শতাধিক জেলেদের নামে মামলা করে রেঞ্জ কর্মকর্তা।

Check Also

মোংলায় যে কোন মুহুর্তে নদীতে বিলিন হতে পারে কোটি টাকায় নির্মিত পৌর খেয়া ঘাট সহ যাত্রী ছাউনী

॥  মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥ পানির স্রোতে ভাঙনে ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে উঠছে মোংলা বন্দরের …