॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥
প্রেমের বিয়ের ৯ মাসের মাথায় মোংলা পৌর শহরের ভাড়া বাসা থেকে আনিকা (২৩) নামের এক গৃহবধু লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজ ঘরের খাটের উপর কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার পর পরই ঘরের দরজায় শিকল দিয়ে স্বামী পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
লাশ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাথে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক ধারনা, সোমবার রাতের যে কোন সময় স্ত্রী আনিকা গলাটিপে হত্যা করে পালিয়ে যায় স্বামী তুফান। তবে স্বামী তুফানকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, নিহত গৃহবধু আনিকা ও স্বামী তুফান একই এলাকার বাসিন্দা। প্রেম করে পরিবারের চোখ ফাকি দিয়ে ৯ মাস আগে গোপনে ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করে তারা। ঢাকা থেকে ৮মাস পুর্বে মোংলা এসে পৌর শহরের মাদ্রাসা রোডস্থ হালিম সরদারের বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন আনিকা ও মেহেদী তুফান দম্পতি।
তবে এদের উভয়ের পুর্বে আরো একটি বিয়ে থাকায় প্রায়ই ঝগড়া ও মারামারীও হতো দুজনের মধ্যে। আনিকার আগের সংসারে ৫ বছরের তাসনিম নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে তুফানের আগের সংসারে ছেলে-মেয়ে আছে কিনা তা জানা যায়নি।
আজ (২৩ সেপ্টেম্বর) সোমবার সকালে আনিকা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ফোনে আনিকার মামাকে জানায় স্বামী তুফান শেখ। মামা দ্রুত বাড়িতে এসে ঘরের বাহির থেকে দরজার সিকল খুলে ভাগ্নীকে ঘাটের উপর মৃত অবস্থায় দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে মোংলা তানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে ওই গৃহবধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে খবর দেয়া হয়।
নিহত আনিকা খুলনার দৌলতপুর দারোগার পুকুরপাড়ের পাবলা এলাকার আনিসুর রহমানের মেয়ে এবং স্বামী তুফান শেখ একই এলাকার কামাল শেখের ছেলে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাথে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক ধারনা, সোমবার রাতের যে কোন সময় স্ত্রী আনিকা গলাটিপে হত্যা করে পালিয়ে যায় স্বামী তুফান। তবে স্বামী তুফানকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
আনিকার মা জানায়, তুফানের অন্য বিয়ের তথ্য গোপন রেখে আমার মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে গোপনে বিয়ে করেছে। আগের বিয়ের কথা জানাজানি হলে প্রায়ই দজনের মধ্যে ঝগড়া ফ্যাসাদ হতো। আমাকেও ফোন করে বহুবার তুফান মেয়েকে মেরা ফেলবে বলেছিল। গত সপ্তাহে আমার মেয়েকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে, আর আজ জীবনে মেরে ফেললো। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, ৮ মাস আগে গোপনে বাসা ভাড়া করে বসবাস করতেন এ দম্পতি। তবে তাদের উভয়ের মধ্যে পুর্বের বিয়ে নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া ফ্যাসাদ হতো বলে আমরা আনিকার স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। প্রাথমিক ধারনা অত্মহত্যা নয়, রাতের যে কোন সময় হত্যা করা হয়েছে, তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে হত্যা না আত্নহত্যা তার আসল ঘটনা জানা যাবে। স্বামী তুফান পলাতক, তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।