॥ ইউসুফ সুমন, বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গরীব অসহায়দের জন্য আনা ছয় হাজার বস্তা সরকারি চাল নিয়ে ‘এম ভি সাফিয়া’ নামে একটি বাল্কহেড জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুরের পর মোংলা বন্দরের পশুর নদীর ত্রি-মোহনায় এসে বাল্কহেডটি পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ‘এমভি শাহাজাদা-৬’ নামে অপর একটি লাইটার জাহাজ পিছন থেকে ধাক্কা দিলে এই দূর্ঘটনা ঘটে।
পশুর নদীর ত্রি-মোহনায় এসে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা এমভি শাহাজাদা-৬ নামে অপর একটি লাইটার জাহাজ পেছন থেকে ধাক্কা দিলে সরকারি চাল নিয়ে ডুবে যায় বাল্কহেড জাহাজ ‘এম ভি সাফিয়া’ জাহাজ। তবে এসময় বাল্কহেড জাহাজে থাকা পাঁচজন নাবিক দ্রুত সাঁতরিয়ে কূলে উঠলে প্রাণে বেঁচে যান তারা।
তবে এসময় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, জাহাজে থাকা ৫ নাবিক অক্ষত অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে ধাক্কা দেওয়ার অপরাধে ‘এভি শাহাজাদা-৬’ নামের লাইটার জাহাজটিকে আটক করেছে নৌ পুলিশ। সোমবার সকাল থেকে ডুবন্ত চাল ও বাল্কহেডটি উত্তোলনের কাজ শুরু করেছে মেসার্স খানজাহান আলী স্যালভেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান। মোংলা নৌ পুলিশের অফিস ইনচার্জ এস আই সৈয়দ ফকরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নৌপুলিশের মোংলা অফিস ইনচার্জ সৈয়দ ফকরুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে গরীব অসহায়দের জন্য রবিবার (৩১ মার্চ) সকালে খুলনার সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে ছয় হাজার বস্তায় ১৭৫ মেট্রিক টন সরকারী চাল নিয়ে মোংলা খাদ্য গুদামের উদ্দেশ্য এমভি সাফিয়া’ নামে চাল বোঝাই একটি বাল্কহেড জাহাজ ছেড়ে আসে।
৩১ মার্চ দুপুরের পর বাল্কহেডটি মোংলা বন্দরের পশুর নদীর ত্রি-মোহনায় এসে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা এমভি শাহাজাদা-৬ নামে অপর একটি লাইটার জাহাজ পেছন থেকে ধাক্কা দিলে সরকারি চাল নিয়ে ডুবে যায় বাল্কহেড জাহাজ ‘এম ভি সাফিয়া’ জাহাজ। তবে এসময় বাল্কহেড জাহাজে থাকা পাঁচজন নাবিক দ্রুত সাঁতরিয়ে কূলে উঠলে প্রাণে বেঁচে যান তারা।
বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ জানায়, মোংলা বন্দরের পশুর নদীরে ত্রিমোহনায় লাইটার জাহাজের ধাক্কায় সরকারী খাদ্যগুদামের চাল নিয়ে ডুবন্ত বাল্কহেড থেকে শুরু হয়েছে চাল উত্তোলনের কাজ। সোমবার (০১ এপ্রিল) সকাল থেকে ডুবন্ত চাল ও বাল্কহেডটি উদ্ধারের কাজ করছে মেসার্স খালনজাহাজন আলী স্যালভেজ নামের একটি উদ্ধারকারী ডুবুড়ি দল।
মোংলা পশুর চ্যানেল ও ঘষিয়াখালী বঙ্গবন্ধু নৌ-ক্যাণেল সচল রাখতে বাল্কহেডটি দ্রুত উত্তোলনের জন্য মালিক ও পরিবহন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। তবে চালগুলো উত্তোলনের পর সরকারী নিয়োম মেনেই সংশ্লিষ্টদেন সাথে নিয়ে ব্যাবস্থা নেয়া সহ সরকারী চালের সকল ক্ষয়ক্ষতি বহন করবে পরিবহন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বলে জানায় ডুবন্ত বাল্কহেড কর্তৃপক্ষ।
মেসার্স সোনার গা শিপিং লাইন্স’র ম্যানেজার আবুল কালাম গাজী বলেন, সরকারী চালের সকল ক্ষয়ক্ষতি বহন করবে পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, ডুবন্ত চালগুলো দ্রুত উত্তোলন করে সরকারী ভাবে পরিক্ষ-নিরিক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে ঈদের জন্য মোংলা কাদ্যগুদামে নতুন করে আনা হচ্ছে সরকারী বরাদ্ধের চাল, যাতে দরিদ্র গরিব ও অসহায়দের কোন সমস্যা না হয় সে জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানায় পরিবহন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এ ম্যানেজার।
মোংলা নৌ-পুলিশ অফিস ইনচার্জ দৈয়দ ফখরুল ইসলাম বলেন, মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ও মোংলা ঘষিয়াখালী বঙ্গবন্ধু নৌক্যানেলকে ঠিক রাখতে বাল্কহেডটি দ্রুত উত্তোলনের জন্য মালিক পক্ষকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। মেসার্স খানজাহান আলী স্যালভেজ নামের একটি ডুবুড়ি দল উত্তোলনের কাজ করছে,
ফলে সোমবার সকাল থেকে চাল উত্তোলনের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে, উদ্ধার কাজ শেষ হতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাঘবে বরেও জানায় তিনি। পন্যগুলো সম্পন্ন উত্তোলন করা হলে নেয়া হবে পরবর্তী আইনী ব্যাবস্থ। সরকারী চাল সহ বাল্কহেড ডুবির ঘটনায় পিছন থেকে ধাক্কা দেয়া লাইটর জাহাজ “এমভি শাহাজাদা-৬” কে আটক করে রেখেছে ঘষিয়াখালীর সন্নাসী নৌপুলিশ বলেও জানায় নৌ-পুলিশের এ কর্মকর্তা।