মোংলায় পৌর বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র জুলফিাকার আলীসহ ২২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, বিএনপির জরুরী সংবাদ সম্মেলনে কঠোর কর্মসূচির হুমকি

এনসিপি’র শ্রমিক সংগঠনের পক্ষে মোঃ তিতুমীর চোকদার বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে মোংলা থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমান এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে এনিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

এদিকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এ মামলা নিয়ে মোংলা বন্দরে উত্তাপ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।

মামলার বাদী মোঃ তিতুমীর চোকদার এজাহারে উল্লেখ করেন- বিগত আ’লীগ শাসন আমলে মোংলা বন্দর শ্রমিক সংগঠন আ’লীগের কর্তাব্যক্তিরা নিয়ন্ত্রনে রেখে সাধারণ শ্রমিকদের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকান্ড চালায়। ছাত্র-জনতার অভুত্থানের পর বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী তার নিয়ন্ত্রনে নেয় ও তার অনুসারীদের দিয়ে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্ব পরিচালনা শুরু করে। এ অবস্থায় এনসিপি’র শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে সাধারণ শ্রমিকরা গত ২৯ এপ্রিল (শ্রমিক সংঘ) সংগঠন চত্বরে তলবী সভা আহবান করে। আগের দিন দুপুরে (২৮এপ্রিল) সভার মঞ্চ ও ডেকারেশন তৈরির প্রস্তুতি গ্রহনকালে বিএনপির নেতৃতাধীন শ্রমিকরা এনসিপি সমর্থিত শ্রমিকদের উপর হামলা, মারধর ও সভার মঞ্চ এবং ডেকারেশন ভাংচুর করে।

এনিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ২৯ এপ্রিল বিকেলে নির্ধারিত সময় এনসিপি সমর্থিত শ্রমিকরা সমাবেশের প্রস্তুতি নিলে একই স্থানে সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি সমর্থিত শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিতে মোংলা পৌর শহর জুড়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়ন করা হয়। এ পরিস্থিতিতে বিএনপি ও এনসিপি সমর্থিত শ্রমিকরা তাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালনে অনড় থাকে এবং ওই দিন বিকেলে এনসিপি’র শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতাসহ তাদের সমর্থিত স্থানীয় শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে শ্রমিক সংঘ চত্বরে এগিয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্রগোল, হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। আর এতে একাধিক শ্রমিক আহত হয়। এ নিয়ে তখন উভয় পক্ষ মোংলা থানায় পরস্পর বিরোধী অভিযোগ দায়ের করলেও কোন মামলা হয়নি। এ ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার রাতে এনসিপি’র শ্রমিক উইংয়ের নেতা মোঃ তিতুমীর চোকদার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

বাদীর অভিযোগ- তাকেসহ এনসিপির শ্রমিক উইং কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর হামলা, মারধরসহ তাদের নারী নেত্রী রিয়া পারভীনকে প্রকাশ্য রাস্তায় শ্লীলতাহানী করা হয়। এ মামলায় মোংলা পৌর বিএনপির আহবায়ক সাবেক পৌর মেয়র ও বন্দর বার্থ শিপ অপাররেটর এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুলফিাকার আলী ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর যুবদল নেতাসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের ২২ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। তবে এ মামলা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তার জনপ্রিয়তা ও বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে নেতা-কর্মীসহ তাকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে দায়ের হওয়া এ মামলার প্রতিবাদের বুধবার দুপুরে মোংলা প্রেস ক্লাবে জরুরী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পৌর বিএনপি। এ সময় লিখিত বক্তব্যে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ এমরান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পরিকল্পিত এ মামলায় দায়ের করা হয়েছে।

দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহার করা না হলে স্থানীয় বিএনপি কঠোর আন্দোলনে যাবে বলেও হুশিয়ারি দেয়া হয়। অপরদিকে এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার বিকেলে পৌর শহরে দু’দফায় প্রতিবাদ সভা এবং বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এতে শহরের উত্তাপ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।