॥ মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি ॥
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-৩ (মোংলা- রামপাল) আসনে আওয়ামীলীগসহ প্রার্থী হয়েছেন সাতজন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার চারবারের মতো নৌকা নিয়ে মাঠে এসেছেন।ওদিকে দলের মনোনয়ন না পেয়ে ঈগল প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মোংলা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারদার। তিনি বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি।
এই দুই প্রার্থীর প্রচারণা ও জনসংযোগে চাঙ্গা রয়েছে ভোটের মাঠ। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সভা, সমাবেশ, উঠোন বৈঠক ও লিফটে বিতরণ করে ভোট চাচ্ছেন তারা। ব্যতিক্রম এই আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া অপর পাঁচ প্রার্থীর ক্ষেত্রে । তারা ভোটের মাঠে প্রচারণায় নেই। এসব প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির মনিরুজ্জামান মনি,
এনিয়ে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রচার প্রচারণা না করে এমপি নামের তকমা লাগাতেই তারা ভোটে দাড়িয়েছেন। যাতে ভোটে হারলেও মানুষ যেন তাদের এমপি বলে ডাকে।
তৃনমুল বিএনপির ম্যানুয়েল সরকার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের শেখ নুরুজ্জামান মাসুম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মফিজুল ইসলাম গাজী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) সুব্রত মন্ডল। এই পাঁচ জনকে মোংলা-রামপালের ৯৫ শতাংশ মানুষই চেনেননা।
এনিয়ে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রচার প্রচারণা না করে এমপি নামের তকমা লাগাতেই তারা ভোটে দাড়িয়েছেন। যাতে ভোটে হারলেও মানুষ যেন তাদের এমপি বলে ডাকে। মোংলা পৌর শহরের মামার ঘাটের চা দোকানি মোঃ জামাল হেসেন বলেন, সারাদিন নৌকা আর ঈগলের মাইক বাজে। আর কোন প্রার্থীর পোষ্টারও দেখিনি।
মিঠাখালী গ্রামের এক নারী ভোটার সাদিয়া বেগম বলেন, নৌকা প্রতিকের লোকজন এসে ভোট চেয়ে গেলে, ঈগলের লোক ভোট চায়। আর কোন প্রার্থীরা এখনও আসেনি। শুনেছি এখানে অনেক প্রার্থী দাড়িয়েছেন, তাদেরকে এখন পর্যন্ত চোখে দেখিনি।
মোংলা উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মোঃ শাহজাহান সিদ্দিকী বলেন, নতুন কিছু রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি হলে সেই দল থেকে অনেকে নতুন প্রার্থী হয়েছেন। তারা স্বল্প সময়ে মাঠ গোছাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এছাড়া যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনদিন অংশ নিয়ে জনপ্রতিনিধি হননি। তাই তাদেরকে অধিকাংশ মানুষই চেনেনা। এ কারণেই সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেও ভোটারদের ভালবাসা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
সু শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মোংলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, ‘ বাংলাদেশে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এ ক্ষেত্রে কথিত কিংকস পার্টির বিভিন্ন দল থেকে অনেকে প্রার্থী হয়েছেন। ওইসব দলের ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে হবে তাই দিয়েছে। কিন্তু যাদেরকে প্রার্থী করা হয়েছে তাদের কোন পরিচিতি নাই, তাদেরকে কেউ চেনেনা বা তাদের সম্পর্কে কেউ জানেনা। তারা অচেনা অজানা।
এবিষয়ে তৃনমুল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ম্যানুয়েল সরকার বলেন, তার বাড়ী মোংলার চিলা এলাকায় হলেও তিনি ঢাকায় রাজনীতি ও ব্যবসা করেন। দল থেকে তাকে বাগেরহাট-৩ আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন তাই প্রার্থী হয়েছেন। স্বল্প পরিসরে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। খ্রিস্টীয় ধর্মের ৬০ শতাংশ এবং বিএনপির অধিকাংশ ভোট পেয়ে তিনি জয়ী হবেন বলেও ধারণা তার। এছাড়া বাকি চার প্রার্থীর বক্তব্য জানতে ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।
মোংলা উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) সাধারণ ভোটার রয়েছেন দুই লক্ষ ৫৪ হাজার ৮৯৫ জন। এর মধ্যে পুরষ ভোটার এক লক্ষ ২৭ হাজার ১৭৭ এবং এক লক্ষ ২৭ হাজার ৭১৮ জন নারী ভোটার। এবারের সংসদ নির্বাচনে এই আসনে সাত জন প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব রকম প্রস্তুতি গ্রহন করা হচ্ছে।