॥ বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥
মোংলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পৌর যুবলীগ নেত্রীকে ঘরে ঢুকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে একদল সন্ত্রাসীরা। এ সময় উদ্ধার করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছে আরো ৩ জন। যুবলীগ নেত্রী শামিমা ইয়াসমিন জুই’র অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় খুলনা মেডিকেলে আর বাকীরা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শামিমা ইয়াসমিন মোংলা পৌর যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সাধারণ সম্পাদিকা। এ ঘটনা থানায় মামলা করতে গেলে এখনও মামলা নেয়নি পুলিশ।
সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আঃ গফুর বাদী হয়ে কামরুজামান ওরফে মুকুল শিকারী, বেল্লাল হোসেন, সাগর শিকারী, হৃদয় শিকারী, শাহানাজ বেগম ও ঝর্ণা বেগম সহ ৬ জনকে আসামী করে মোংলা থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছে। তবে একটি প্রভাবশালী ক্ষমতার কারণে এখন দুপুর পর্যন্ত পুলিশ লিখিত এজাহারটি মামলা আকারে নথি ভুক্ত করেনি পুলিশ।
প্রত্যাক্ষদর্শী ও যুবলীগ নেত্রী সামিমা ইয়াসমিন’র স্বামী আবদুল গফুর জানান, মোংলা পৌর শহরের এম রহমান সড়কে আমার মালিকানা বাড়ীতে এক আত্মীয় নিলুফার আক্তার ও তার ৪ বছরের পুত্র সন্তান আলিফ শেখ এবং গৃহকর্মি বাতাসি বেগমসহ অবস্থান করছিলেন।
শনিবার দুপুর দেড় টার দিকে একাধিক মামলার আসামী উপজেলার বাশতলা এলাকার বাসিন্ধা মুকুল শিকারী ও শাহানাজের নেতৃত্বে ১৪/১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল হঠাৎ ঘরে ঢুকে আমার স্ত্রী শামিমা ইয়াসমিন জুইকে দাঁ ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় ঘরে থাকা আত্মীয় নিলুফা ও গৃহকর্মী সহ আমার স্ত্রী জুইকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরকেও পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।
এসময় আত্মীয় নিলুফার ৪ বছরের শিশু সন্তান আলিফ শেখের মুখে গরম পানি দিয়ে পুড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। তিনি আরো জানান, তিনি এসময় বাড়ীতে না থাকায় সন্ত্রাসীরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। পরে মুঠোফোনে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তিনি মোংলা থানা পুলিশ কে সাথে নিয়ে স্ত্রী শামিমা ইয়ামিন জুই সহ আহত সকল কে উদ্ধার করে প্রথমে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সেখানে জুইয়ের গুরুতর আহত ও মাথায় ফেটে রক্তাক্ত খরণ বেশী হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপালাতে পাঠায় মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে’র পরিচালক ডাঃ মোঃ শাহিন।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র পরিচালক ডাঃ মোঃ শাহীন জানান, শামিমা ইয়াসমিনের মাথায় গুরুতর আঘাত ও রক্তাক্ত জখম হওয়ার কারনে অতিরিক্ত রক্তখরণ হয়েছে। তার অবস্থা অবনতী হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আবদুল গফুর আরো অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসীদের হামলায় আমার স্ত্রীসহ আহত সকল কে থানা পুলিশসহ উদ্ধার করে। কিন্ত ওই ঘটনার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও লিখিত এহাজারটি নথি ভুক্ত করেনি মোংলা থানা পুলিশ। আটক করা হয়নি কোন আসামীকেও।
সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আঃ গফুর বাদী হয়ে কামরুজামান ওরফে মুকুল শিকারী, বেল্লাল হোসেন, সাগর শিকারী, হৃদয় শিকারী, শাহানাজ বেগম ও ঝর্ণা বেগম সহ ৬ জনকে আসামী করে মোংলা থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেছে। তবে একটি প্রভাবশালী ক্ষমতার কারণে এখন দুপুর পর্যন্ত পুলিশ লিখিত এজাহারটি মামলা আকারে নথি ভুক্ত করেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, শামিমা ইয়াসমিন জুই নামের এক যুবলীগ নেত্রীর সাথে মারামারীর ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং এ বিষয় নিয়ে তদন্তও চলছে। বাদি পক্ষকে ডেকে পাঠানো হয়েছে এবং বিষয়টি মামলার প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় মোংলা থানার সদ্য যোগদান করা পুলিশের এ কর্মকর্তা।