॥ বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥
মোংলায় ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী সাবেক ইউপি মেম্বার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। অন্যের ঘের দখল, জোর পুর্বক মাছ লুট ও জমি দখলের বহু অভিযোগ উঠেছে সে ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা ভুক্তভোগীরা। ঘের মালিক রাসেল মৃধা বাদি হয়েছে মিহির নামের একজনকে চিহ্ণিত করে আরো ৭ জনের নামে ঘেরের মাছ লুট ও চাঁদা দাবীর অভিযোগ দাখিল করেছে মোংলা থানায়। তবে ঘটনার দুই দিন অতিবাহিত হলেও মিহির সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন চিংড়ী ঘের থেকে মাছ লুট করা অব্যাহত রেখেছে বলে দাবী রাসেলের।
আতংকের মধ্যে তার দিন কাটছে ব্যাবসায়ী রাসেলের। এজন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপেক্ষর হস্তক্ষেপ চান ভুক্তভোগী রাসেল। এ ঘটনায় রাসেল মৃধা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
থানায় দেয়া অভিযোগ সুত্রে ও ভুক্তভোগী রাসেল জানায়, মোংলা উপজেলার চাদঁপাই ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় তার নিজ নামীয় ও অন্য মালিকের কাছ থেকে নগদ টাকায় লিজ নেয়া জমি নিয়ে একত্রে মৎস্য চাষ করে আসছিলো। বর্তমানে সেই চিংড়ী ঘেরে চাষ করার জন্য প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার মাছের রেনু পোনা ছাড়া হয়।
সেই চিংড়ী ঘেরের মাছ বড় হওয়ায় ওই সকল সন্ত্রাসীরা তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে ব্যাবসায়ী রাসেল মৃধা অপরগতা প্রকাশ করলে আরো ক্ষীপ্ত হয় সন্ত্রাসীরা। বাদী রাসেলকে প্রতিনিয়ত জীবন নাশের হুমকি দেয় এবং কিভাবে ঘেরের মাছ বিক্রয় করো তা দেখে নেয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ রাসেলের।
এ ঘটনায় গত ১৭ মার্চ ওই সকল সন্ত্রাসীরা সহ তাদের ভাড়া করা ৫/৬ জন লোক রাতের আধারে রাসেল মৃধার ঘেরের মাছ লুট করে নেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করে। পুনরায় ২০ মার্চ সন্ধ্যায় সাবেক ইউপি সদস্য সেলিমের নির্দেশনায় মিহির শিকদার, ফারুক, লোকমান খানঁ ও কামাল সহ প্রায় ২৫/৩০ জনের এক দল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চিংড়ী ঘের লুট করতে যায়। বিষয়টি জানার পর এতে রাসেল বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকে মারধর করার চেষ্টা করে।
বিষয়টি মোংলা থানায় এস আই হাদিউজ্জামান সহ এলাকাবাসীর বাধার মুখে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। কিছুক্ষন যেতে না যেতেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চিংড়ী ঘের এলাকায় মিহির সহ তার লোকজন মহড়া দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রাসেল। বর্তমানে এসকল সন্ত্রাসীদের হুমকির ভয়ে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগী রাসেল ও তার পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্ত আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় যে কোন সময় তার জান-মালের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে বলে আতংকের মধ্যে তার দিন কাটছে ব্যাবসায়ী রাসেলের। এজন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপেক্ষর হস্তক্ষেপ চান ভুক্তভোগী রাসেল। এ ঘটনায় রাসেল মৃধা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেলিম মেম্বার বলেন, মাছ ধরা বা ঘের দখল করার ব্যাপারে আমার কোন সম্পুক্ততা নেই। তবে আমার ছোট ভাই কামাল ও মিহির আগে ওই জমিতে মাছ চাষ করতো। ২০ মার্চের ঘটনার ব্যাপারে যারা আমার নাম বলেছে তা সঠিক নয়।
মোংলা থানার এ অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই হাদিউজ্জামান বলেন, চাদঁপাই ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় একটি চিংড়ী ঘেরের মাছ মিহির সহ তার লোকজন জোর পুর্বক ধরে নিয়ে যায় বলে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পাওয়ার পর পরই প্রতিপক্ষ মিহির সিকদার সহ তার লোকজনকে নিষেধ করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। রাসেল মৃধার ঘেরে জোর পুর্বক মাছ ধরা ঘটনার ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করা হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস থানার এ কর্মকর্তা।