॥ ইউসুফ সুমন, বাগেরহাট প্রতিনিধি ॥
মোংলায় একটি মাদ্রাসার দুই শিশুকে এতিমখানার আবাসিক কক্ষে জোরপূর্বক যৌন নিপীড়নের (বলাৎকার চেষ্টা) অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ওই মাদ্রসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়াল সরদার (৪৫) কে অবশেষে ১মাস ২২ দিন পর আটক করতে পেরেছে পুলিশ।
এক পর্যায়ে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে র্যাবের সহায়তায় শনিবার রাতে ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ওই এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন পলাতাক জীবন যাপন করছিল।
শনিবার রাতে ঢাকার উত্তরা থেকে র্যাবের সহায়তায় মোংলা থানা পুলিশের একটি দল বিশেশ অভিযান পরিচালনা করে মামলার একমাত্র আসামি ওই মাদ্রাসার সভাপতি লম্পট আওয়ালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রোববার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আওয়ালকে বিশেষ পুলিশ পাহারায় ঢাকা থেকে মোংলা থানায় আনা হয়।
পরে তাকে থানা থেকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গেপ্তার আওয়াল সরদার মামলার মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের আগা মাদুর পাল্টা এলাকার মৃত মহর আলী সরদারের ছেলে। গত ১০ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের আগা মাদুরপাল্টা গ্রামে হযরত শাহ আলম (রঃ) তালিমুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের সভাপতি আওয়াল সরদার ওই প্রতিষ্ঠানের দুই শিশুকে পর্যায়ক্রমে বলাৎকারের চেষ্টাসহ উলঙ্গ করে যৌন নিপীড়ন চালায়।
এলাকাবাসী জানায়, ১০ ফেব্রুয়ারীর প্রথম ঘটনা ঘটার পর বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়লে ওই এলাকার এক ইউপি মেম্বরের নেপথ্যের ছএছায়ায় প্রভাবশালী মহল ঘটনা ধামাচাপা দেয়। এতে ম্যানেজিং কমিটির লম্পট সভাপতি আওয়াল সরদার (৪৫) আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারী দুপুরে পুনরায় মাদ্রসার আবাসিক এলাকায় আরো একটি শিশুকে নগ্ন করে বলাৎকারের চেষ্টা চালায়। এ দু ‘ বলাৎকারের চেষ্টার ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়লে একটি শিশুর বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারী দুপুরে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মোংলা থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, যৌন নিপীড়ন মামলার আসামি আওয়াল সরদার ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে মোংলা থানা পুলিশ তাকে আটকের জন্য খুঁজছিল। এক পর্যায়ে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে র্যাবের সহায়তায় শনিবার রাতে ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ওই এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন পলাতাক জীবন যাপন করছিল। ওসি আরো জানায়, গ্রেপ্তার আওয়াল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবান বন্দী দিতে রাজি হয়েছে।
স্থানীয় সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার বলেন, আগে পরে এরকম বহু অপকর্ম করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীদের বলাৎকারের চেষ্টার ঘটনায় তার দৃষ্ট্টান্তমুলক বিচার হওয়া উচিত।