মঙ্গলবার , ৮ অক্টোবর ২০২৪

ঘরে আটকে স্কুল শিক্ষিকাকে কু-প্রস্তাব, সিডোপ’র নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

॥ মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি ॥

মোংলায় আউট অফ স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের এক নারী শিক্ষিকাকে ঘরে আটকে কু-প্রস্তাব দেয়ায় ঘটনায় এনজিও সিডোপ এর নির্বাহী পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নারী শিক্ষিকা আইরিন বিশ্বাস। রবিবার ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে শিক্ষিকা নিজে বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেণ।

থানায় অভিযোগ দেয়ার এ ঘটনা শোনার পর পরই কিছু দালাল চক্র দিয়ে বিষয় মিট মিমাংসা করারও চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ ওই শিক্ষিকার। তবে তদন্ত করে কঠোর ব্যাবস্থা ও আইনী সহায়তার আশ্বাস থানা পুলিশের।

মোংলা থানায় দেয়া অভিযোগ সুত্রে ও ভুক্তভোগী শিক্ষিকা জানায়, প্রাথমিক স্কুল থেকে ঝরে পড়া ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের শিক্ষার আওতায় আনার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম ‘আউট অব চিলড্রেন এডুকেশন’ নামের একটি প্রকল্প গ্রহন করেন সরকার।

২০২০ সালের জানুয়ারী থেকে মোংলা, রামপালও ও মোড়েলগঞ্জ এ ৩টি উপজেলার পৌরসভা সহ ১৭টি ইউনিয়নে ১১৫টি স্কুলের অনুকুলে ৩ হাজার ৪৫০ জন ঝরে পড়া শিশুদের শিক্ষা প্রদানের জন্য শিক্ষক ও সুপারভাইজার নিয়োগ দেয় এনজিও সিডোপ। শুরু থেকে তাদের বেতন-বাতাধী এককালীন দেয়ার কথা বলে ব্যাংকের চেক ও অন্যান্য কাগজ পত্রে স্বাক্ষর নেয় এনজিওর নির্বাহী পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস ও তার কর্মকর্তারা।

শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পথ শিশুরা। বেতন-ভাতাধী না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন শিক্ষক। কোন উপায় না পেয়ে কিছু দিন আগে দুদক ও জেলা প্রশাসক সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয় শিক্ষকরা।

 

পরে তাদের বেতনের টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন লোকজন দিয়ে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকিও দিয়ে আসছিলো বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। এনজিও সিডোপ’র কর্তৃপক্ষরা শিক্ষকদের বেতন ও স্কুল ঘর ভাড়া কোনটাই না দেয়ায় অনেক স্কুল বন্ধ করে দেয় ঘর মালিক। ফলে মুখ থুবড়ে পরছে সরকারের এ প্রকল্পের কার্যক্রম,

শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পথ শিশুরা। বেতন-ভাতাধী না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন শিক্ষক। কোন উপায় না পেয়ে কিছু দিন আগে দুদক ও জেলা প্রশাসক সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয় শিক্ষকরা।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নির্বাহী পচিালক প্রশান্ত কুমার মোংলা উপজেলার ছবি হাজরা ও রোজি সরদার সহ কয়েকজ লোক দিয়ে এ সকল শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেতন-বাতাদি নিয়ে কোন বাড়া-বাড়ী না করার জন্য সাশিয়ে আসে। এরই মধ্যে ২২ ডিসেম্বর এনজিও সিডোপ’র নির্বাহী পচিালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস নারী শিক্ষিকা আইরিন বিশ্বাসকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার খুলনার মুজগুনি আবাসিক এলাকায় নিজ বাড়িতে বড় দিন উপলক্ষে বেতনের টাকা নেয়ার জন্য আসতে বলে।

২৩ ডিসেম্বর দুপুর ৩টার দিকে প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের খুলনার বাড়ি যায় শিক্ষিকা আইরিন বিশ্বাস। বেশ কিছু সময় তাল বাহানা করে সন্ধ্যার দিকে ঘরে কেউ না থাকার সুবাদে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেতনের টাকা সহ বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ওই শিক্ষিকাকে কু-প্রস্তাব দেয় এনজিও নির্বাহী পরিচালক প্রশান্ত কুমার, বলে অভিযোগে বাদি আইরিন উল্লেখ করে।

এতে সে রাজি না হয়ে ডাক চিৎকার দিলে দ্রুত দরজা খুলে দেয় এবং এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতি ও চরম ক্ষতি করার হুমকি দেয় প্রশান্ত কুমার।

বাড়ি থেকে বের হয়ে তৎক্ষনিক বিষয়টি এই প্রকল্পের লিড এনজিও “সুখি মানুষ” কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি অবহিত করেণ এবং এনজিও সুখি মানুষ কর্তৃপক্ষ এর সুষ্ঠ বিচার করবেন বলে আশাস্থ করেণ। শনিবার রাতে প্রশান্ত কুমার তার লোক দিয়ে চাকরিচ্যুত করা সহ প্রান নাশের হুমকি দিলে তাৎক্ষনিক ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানায় এবং এদিন দুপুরে শিক্ষিকা আইরিন বিশ্বাস বাদি হয়ে এনজিও সিডোপ’র নির্বাহী পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসকে আসামী করে মোংলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

এঘটনায় নির্বাহী পরিচালক প্রশান্ত কুমাকর শ্বিাসের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া না গেলেও এনজিও প্রতিষ্ঠানটির বিভাগীয় সম্ন্নয়কারী মিঃ এ্যালেক্স বালা বিশ্বাস জানান, ঘটনাটি লোক মারফত জানতে পেরেছি। আমি বড় দিনের ছুটিতে থাকায় এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা, তবে আসল ঘটনা কি? তা খোজ খবর নিলে জানা যাবে।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, খুলনায় একটি এনজিও পরিচালকরে বাসায় এক শিক্ষিকাকে নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলেও জানায় থানার এ কর্মকর্তার।

Check Also

আমরা নতুন করে বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে চাই….. …… মোঃ ইসমাইল সম্রাট

॥  এ আর আজাদ সোহেল, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ॥ নতুন নতুন করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা …