Wednesday , 4 June 2025

সুন্দরবনের জলদস্যু করিম শরিফ বাহিনীর জিম্মিদশা থেকে ১৬ টি নৌকা ও মুক্তিপনে অপহৃত নারী সহ ৩৩ জেলে উদ্ধার

  মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥

সু ন্দরবনের দুর্ধর্ষ জলদস্যু করিম শরিফ বাহিনীর জিম্মিদশা থেকে মুক্তিপনের দাবীতে অপহৃত ৬ নারী জেলে সহ ৩৩ জেলেকে উদ্ধার করেছে মোংলা কোস্ট গার্ড। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বনের খরখরী নদীর মাল্লাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে দস্যুর কবল থেকে মুক্ত করা হয়। এসময় জব্দ করা হয়েছে ১৬টি কাঠের নৌকা।

 

সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ জলদস্যু করিম শরীফ বাহিনী তাদের গোপন আস্তানায় ১৬ টি নৌকা ও ৬ নারী জেলে সহ ৩৩ জন জেলেকে মুক্তিপনের দাবীতে জিম্মি করে রেখেছে। এমন তথ্যের সুত্রধরে বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড মোংলা ও আউটপোস্ট নলিয়ান যৌথভাবে সুন্দরবনের খরখরি নদীর মাল্লাখালী এলাকায় অভিযান চালায়।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

কোস্ট গার্ড জানান, ৯ এপ্রিল বুধবার সকালে বন বিভাগের অফিস থেকে পাশ পারমিট নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া ধরার জন্য সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে গমন করে জেলেরা। দুপুরে দিকে জলদস্যু করিম শরীফ বাহিনী তাদের মুক্তিপনের দাবীতে অপহরণ করে। তাদের জিম্মিদশা থেকে ছাড়া পেতে প্রতি জেলের কাছে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণের দাবি করে দস্যুরা বলে জানায় ছেড়ে আসা জেলেরা।

মোংলা কোস্ট গর্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ জলদস্যু করিম শরীফ বাহিনী তাদের গোপন আস্তানায় ১৬ টি নৌকা ও ৬ নারী জেলে সহ ৩৩ জন জেলেকে মুক্তিপনের দাবীতে জিম্মি করে রেখেছে। এমন তথ্যের সুত্রধরে বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড মোংলা ও আউটপোস্ট নলিয়ান যৌথভাবে সুন্দরবনের খরখরি নদীর মাল্লাখালী এলাকায় অভিযান চালায়।

এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে দস্যুরা ফাঁকা গুলি ছোঁড়তে ছোঁড়তে দ্রুত বনের গহীনে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে দস্যুদের আস্তানা থেকে মুক্তিপনের দাবীতে অপহরণকৃত ৬ নারী জেলে সহ ৩৩ জন জেলেকে উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। মুক্ত করা হয় জেলেদের মাছধরা কাজে ব্যাবহৃত ১৬টি নৌকা-জাল সহ অন্যান্য মালামাল।

উদ্ধারকৃত জেলেদের কোস্ট গার্ড স্টেশনে নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় খাবার প্রদান করা হয়। উদ্ধারকৃত জেলেদের বাড়ি খুলনা জেলার কয়রা থানার ৪,৫ ও ৬ নং কয়রা গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বলে জানা গেছে। কোস্ট গার্ড উদ্ধারকৃত জেলে ও নৌকা সহ তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

কোস্ট গার্ড ঢাকা সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সিয়াম উল হক বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবন দস্যুমুক্ত ঘোষনা হওয়ায় এ অঞ্চলের জেলেরা ভালই ছিল। কিন্ত সম্প্রতি আবারও বন ও জলদস্যুর তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কয়েক মাস যাবত বনের বিভিন্ন নদী ও খালে জেলে অপহরন ও মুক্তিপন নেয়ার খবর পাচ্ছি।

৯ এপ্রিল বুধবার নারী জেলে সহ ৩৩ অপজরনকৃত জেলেকে বনদস্যু করিম শরিফের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আওতাধীন এলাকাসমূহে মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা বিধান, জলদস্যু ও বনদস্যু দমন এবং নিরাপদ সুন্দরবন গঠনে ২৪ ঘন্টা ব্যাপী টহল অব্যাহত রেখেছে। যার মাধ্যমে আওতাধীন এলাকা সমূহের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। এরূপ কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

Check Also

হার্টপয়েন্টে লাভ সিরাজগঞ্জের উদ্বোধন ও বৃক্ষ রোপণ করলেন- জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম মহোদয়

॥ শাহ আলম, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ॥ সি রাজগঞ্জের যমুনা নদীর পাড় হার্টপয়েন্টে দৃষ্টি নন্দন লাভ …